ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পক, বিচারককে বিয়ে, সহকারী অধ্যাপক বরখাস্ত
Published: 9th, February 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্কে গড়ে নারী বিচারককে বিয়ে করার অভিযোগে সহকারী অধ্যাপক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৪তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় তাকে বরখাস্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সংস্থাপন শাখা থেকে এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি হলেও বিষয়টি শনিবার জানাজানি হয়।
নোবিপ্রবির রেজিষ্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো.
ভুক্তভোগী ছাত্রী শনিবার বিকেলে সমকালকে বলেন, ‘২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে আমাকে মানসিক অত্যাচার করত। ফলে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না চাইলে এবং সব জায়গা থেকে তাকে ব্লক দিলে তিনি (শিক্ষক) অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন বিভিন্ন মাধ্যমে কল দিয়ে তিনি বলতেন, আমাকে পেলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। পরে তিনি আমার মায়ের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে কল দেন। এমন করে করে তিনি আমাকে ফাঁদে ফেলে দিতেন। এক সময় মানসিকভাবে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং তার প্রস্তাবে রাজি হই। দীর্ঘ ১৮ মাস আমার সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে। গত বছর ১১ অক্টোবর তিনি আমাকে বিয়ে করবেন বলে ঢাকায় নিয়ে যান। কাজী অফিসের সামনে গিয়ে তার বাবা অসুস্থ, জরুরি বাবাকে দেখার জন্য বাগেরহাট জেলার শরনখোলা উপজেলার গ্রামের বাড়িতে যেতে হবে বলে তিনি আমাকে ঢাকায় রেখে চট্টগ্রাম চলে যান।’
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম গিয়ে ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক বিচারককে বিয়ে করেন। বিয়ের আগে মোস্তাফিজ তার স্ত্রীকে বদলি করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আনেন। ওই সময় তিনি আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে তার স্ত্রীকে নোবিপ্রবিতে আইন বিভাগে অতিথি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি নোবিপ্রবি উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।’
এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
নোবিপ্রবির উপার্চাযের বক্তব্য জানতে কল করা হলে তিনিও তা রিসিভ করেননি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসাবান্ধব করতে এনবিআরকে অটোমেশন করা হচ্ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়নের প্রাক্কালে চট্টগ্রামে আয়োজিত প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, ব্যবসাবান্ধব করতে এনবিআরকে অটোমেশন করা হচ্ছে। এবারের বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব বাজেটকে জনবান্ধব করতে ব্যবসায়ীসহ সকলের মতামত নেওয়া হচ্ছে। যার প্রতিফলন পাওয়া যাবে বাজেটে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চিটাং চেম্বারের উদ্যোগে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আগামী বাজেটে ঘাটতি থাকবে কিন্তু যাতে মূল্যস্ফীতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। আর রাজস্ব আদায়ে যৌক্তিকভাবে বাড়ানো হবে করহারও।’’
তিনি বলেন, ‘‘গত অর্থবছরে ৪৫ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে। যার মধ্যে ৩০ লাখ করদাতা শূন্য রিটার্নধারী। বাকি ১৫ লাখ কারদাতা থেকে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এত কম সংখ্যক লোকের থেকে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়। এনবিআর জরিপ করে যারা রিটার্ন দিচ্ছে না তাদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের ব্যাংক হিসেব তলব করা হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও খুবই কম। তাই করহার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। মার্কিন শুল্ক আরোপের ফলে দেশের পোশাকখাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। এ ছাড়া, ব্যবসায়ীরা যাতে এনবিআর অফিসে ঘুরতে না হয় সেজন্য সবকিছু অটোমেশন করা হচ্ছে। এখন সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে এক লাখ ৬০ হাজার সার্টিফিকেট অনলাইনে প্রদান করা হয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ভ্যাট এবং বন্ড সুবিধা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা বন্ড সুবিধা অটোমেশনের আওতায় আনতে কাজ করছি। এ ছাড়া, আয়করের মতো ভ্যাটও যেন ঘরে বসে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’’
তিনি আগামী বাজেটে ভ্যাট হার যৌক্তিকীকরণ এবং ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ট্যাক্স রেট কমানো, ট্যাক্সনেট বৃদ্ধি ও রিফান্ড ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হবে বলে তিনি জানান।
সভায় মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান, উইমেন চেম্বারের সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চিটাগাং চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ও সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, প্রাক্তন সহ-সভাপতি বেলাল আহমেদ, চেম্বার পরিচালক ও বিজিএমইএ এর ১ম সহ- সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক হাসানুজ্জামান চৌধুরী (জোসেফ) ও আমজাদ হোসেন চৌধুরী, পান রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. একরামুল করিম চৌধুরী, কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী (খোকা), রাঙ্গামাটি চেম্বার সভাপতি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ মামুন, চট্টগ্রাম ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবু তাহের, চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব রানা, বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মাকসুদুর রহমান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যান্ড বিজনেসেস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কামরুল হুদা, চট্টগ্রাম গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যাসোসিয়েশনের মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, বিএসআরএম জিএম শেখর রঞ্জন কর ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ শামীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/রেজাউল/এনএইচ