দিনভর বিক্ষোভ, ক্ষমা চাইল পুলিশ, সন্ধ্যায় ছাত্র গুলিবিদ্ধ
Published: 8th, February 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার গাজীপুরে দিনভর বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি। বিক্ষোভের মুখে দায়িত্বে অবহেলার কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন মহানগর পুলিশ কমিশনার। বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের ওপর শুক্রবার রাতের হামলার ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার ও ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এক দিনের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এরপরই ঘটে গুলির ঘটনা।
গুলিবিদ্ধ মোবাশ্বের হোসেন (২৬) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুর জেলার একজন সদস্য ও ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের ছাত্র। তাঁর বাড়ি নগরের হারিনাল দক্ষিণপাড়া এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
গুলিতে আহত মোবাশ্বের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলেন। তখন জোড় পুকুরপাড়ের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা এসে হঠাৎ তাঁদের লক্ষ্য করে একটি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। গুলিটি তাঁর ডান হাতের এক পাশে লাগে। আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মো.
গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একজন ছাত্রের হাতে গুলি লেগেছে। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।
গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী মোবাশ্বের হোসেনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল রাতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে ২ জন নিহত
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের সিলেটি বাজারে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কামরাঙ্গীরচর সিলেটি বাজার এলাকায় ঘটনা ঘটে। এ সময় নিহতদের ছুরিকাঘাতে দুজন আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের দাবি, তারা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ ছিলেন।
গণপিটুনিতে নিহতরা হলেন- নাদিম (৩৫) ও মাসুদ (৩০)। এতে আহত হন সোহাগ (২৮)। ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন রিকশাচালক নুর মোহাম্মদ (৩০) ও চা বিক্রেত মনির হোসেন (৩৫)।
ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত মনির হোসেন জানান, তিনি সিলেটি বাজারের বাবুলের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার তিনটি রিকশা রয়েছে। তিনি নিজেও রিকশা চালান। গত ৮ মার্চ মাসুদের নেতৃত্বে কয়েকজন চা-দোকানদার নুর মোহাম্মদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় সেদিন নুর মোহাম্মদকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। এ সময় তার স্ত্রী বাধা দিলে তাকেও ছুরিকাঘাতে আহত করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় নুর মোহাম্মদ কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন। এর জের ধরে রাতে তারা আবার হামলা করেন। এতে তারা দুজন আহত হন। পরে তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, এরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ ছিল। এর আগে তাদের নামে মামলা করে এক ভুক্তভোগী। ধারণা করা হচ্ছে, মামলার জেরে কয়েকজন মামলার বাদীসহ দুজনকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে গণপিটুনি দেন। এতে মাসুদ নামের একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। সোহাগ ও নাদিম নামের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে নাদিম সেখানে মারা যান। আহত সোহাগ ঢাকা মেডিকেল চিকিৎসাধীন আছেন।
কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই আমানুল্লাহ আমান জানান, তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে মর্গে রাখা হয়েছে।