ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালঙ্কার লুট, চিৎকার করায় গুলি
Published: 8th, February 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রথমে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াবাজারস্থ প্রীতি জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে। জনতা সন্দেহভাজন এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে ৫-৭ জনের ডাকাত দল ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে পিস্তল নিয়ে প্রীতি জুয়েলার্সে প্রবেশ করে সবাইকে জিম্মী করে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। এ সময় পাশের দোকানের মোশারফ হোসেন ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করেন। তখন তাকে গুলি করে ডাকাতরা।
প্রীত জুয়েলার্সের মালিক রবীন্দ্র দত্ত বলেন, ‘ভাতিজা পলাশ দত্ত দোকানে ছিল। ডাকাতরা ককটেল বিস্ফোরণ ও পিস্তল ঠেকিয়ে আনুমানিক ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মিয়াবাজার স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জনতা এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য ডাকাতদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি নোহা মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ট্রেন ছিনতাইয়ের পেছনে রাষ্ট্রীয় শক্তির জড়িত থাকা নিয়ে সন্দেহ
আধুনিককালের ইতিহাসে ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা খুবই বিরল। বিশ্বে এখন পর্যন্ত সফল ট্রেন ছিনতাইয়ের যে ঘটনাটি জানা যায়, সেটি ঘটেছিল ১৯৭৭ সালে মলুক্কান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মাধ্যমে।
পাকিস্তানে ট্রেন ছিনতাইয়ে যুক্ত দ্য বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) কৌশলগত লড়াই মূলত গেরিলা যুদ্ধকে ঘিরে আবর্তিত। এ লড়াইয়ের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হলো ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), গেরিলা হামলা ও বিক্ষিপ্ত নাশকতা।
চলন্ত ট্রেন ছিনতাই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—নিখুঁত সময়, রেল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত গোয়েন্দা তথ্য ও ত্রুটিহীন লজিস্টিক সিঙ্ক্রোনাইজেশনের ওপর নির্ভরশীল।
প্রত্যন্ত টানেলে ট্রেন, তা-ও এমন একটি ট্রেন যা চলন্ত অবস্থায় রয়েছে ও জনপদ থেকে বহুদূরে, সেটি ছিনতাই করার সঙ্গে জড়িত অনেক কিছু। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পরিবহনকর্মী, অস্ত্রশস্ত্রের জোগান, কর্তৃপক্ষের নজরদারি এড়িয়ে বিস্ফোরক সরবরাহ করা ইত্যাদি। আরও যুক্ত আছে উল্লেখযোগ্য পূর্বপ্রস্তুতি, সরবরাহ শৃঙ্খল, সামরিক স্তরের যানবাহন ও লজিস্টিকস সমর্থন। অথচ এর সবই বিএলএর সক্ষমতার বাইরে।বিএলএ তার ২৫ বছরের বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াইয়ে এত উন্নত কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সক্ষমতা বা এই মাত্রার গতিশীল অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রদর্শন করেনি।
ট্রেন ছিনতাই এমন এক অসংগতিপূর্ণ ঘটনা, যেখানে অসমযুদ্ধের রীতি উপেক্ষা করা হয়ে থাকে। এ অসংগতি বাইরের সহায়তার দিকে ইঙ্গিত করে। এ সহায়তা সম্ভবত এমন কোনো রাষ্ট্রীয় পক্ষ থেকে এসেছে; যাদের মিশন পরিচালনার উন্নত পরিকল্পনা, তথ্যানুসন্ধান ও মিশন কার্যকর করার সুযোগ রয়েছে।
একটি চলন্ত ট্রেনের প্রকৃত অবস্থান নির্ণয় এবং এর গতি ও ঝুঁকি নির্ধারণে তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন। তবে বিএলএ এমন সক্ষমতা থেকে অনেক দূরে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্যাটেলাইটে ধারণ করা দৃশ্যের সহায়তা ছাড়াই কি তাহলে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছে।
বিএলএর মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নির্ভর করে স্থানীয় ও মাঠপর্যায়ের তথ্যের ওপর। আর রাষ্ট্রীয় শক্তির হাতে থাকে সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স (এসআইজিআইএনটি) এবং হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স (এইচইউএমআইএনটি) নেটওয়ার্কের অত্যাধুনিক ভান্ডার। জাফর এক্সপ্রেসে হামলার স্থানগত নির্ভুলতা এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অধীন কোনো না কোনো স্তরের নজরদারি থাকার ইঙ্গিত দেয়।
বিএলএর একা এ ঘটনা ঘটানোর সক্ষমতা থাকার বিষয়টি সন্দেহজনক। কোনো না কোনো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক অবশ্যই গোয়েন্দা তথ্য, প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সরবরাহ করেছিল। এরপর বিএলএ যখন কৃতিত্ব নিল, তখন তারা পিছিয়ে গেল।প্রত্যন্ত টানেলে ট্রেন, তা–ও এমন একটি ট্রেন যা চলন্ত অবস্থায় রয়েছে ও জনপদ থেকে বহুদূরে, সেটি ছিনতাই করার সঙ্গে জড়িত অনেক কিছু। যেমন এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পরিবহনকর্মী, অস্ত্রশস্ত্রের জোগান, কর্তৃপক্ষের নজরদারি এড়িয়ে বিস্ফোরক সরবরাহ করা ইত্যাদি। আরও যুক্ত আছে উল্লেখযোগ্য পূর্বপ্রস্তুতি, সরবরাহ শৃঙ্খল, সামরিক স্তরের যানবাহন ও লজিস্টিকস সমর্থন। অথচ এর সবই বিএলএর সক্ষমতার বাইরে।
বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ও সুড়ঙ্গে অভিযান চালানোর কৌশল রপ্ত করা না থাকলে জাফর এক্সপ্রেসে এমন হামলা চালানো সম্ভব হতো না।
২৫ বছর ধরে বিএলএ স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশানা বানিয়ে আসছে। পাকিস্তানি নিয়ন্ত্রণের প্রতিবাদ হিসেবে তারা হামলা করে আসছে বিভিন্ন অবকাঠামোতে। জনপদ থেকে ২৫ মাইল দূরে সুড়ঙ্গের ভেতর ট্রেনকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর ফলে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চালানো বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসব বিষয় বিএলএর স্বাভাবিক লক্ষ্যের সঙ্গে কম ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের কৌশলগত লক্ষ্যের সঙ্গে বেশি সংগতিপূর্ণ। বিএলএ একটি সুবিধাজনক ফ্রন্ট হতে পারে। কিন্তু যেভাবে ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা একটি বৃহত্তর অ্যাজেন্ডার দিকে ইঙ্গিত করে; যার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের লক্ষ্য ও দূরদর্শিতা।
পাকিস্তানে জিম্মি করা ট্রেনের এক যাত্রীকে সহায়তা করছেন একজন সেনা। ১১ মার্চ, বেলুচিস্তানের মাচ রেলওয়ে স্টেশনে