এক সময় নিয়মিতই অনুষ্ঠিত হওয়া তিন জাতির টুর্নামেন্ট এখন বিলুপ্ত প্রায়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতির জন্যই মূলত ছয় বছর পর আবার ফেরানো হয়েছে ত্রিদেশীয় সিরিজের লড়াই। লাহোরে আজ শনিবার লড়াইয়ের শুরুতেই বাজিমাত করেছেন নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক পাকিস্তানকে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে তারা। প্রথম ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৪৭.

৫ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৪ রানে থামে পাকিস্তান। চোটের কারণে ব্যাট করতে পারেননি পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা শুরুতে ঘুরেছে ধীর গতিতে। ৪৫.৪ ওভারে ২৫৪ রানে ৬ উইকেট হারানোর সময়ও মনে হয়নি কিউদের রান ৩০০ ছাড়াবে। কিন্তু সব অনুমান ভুল প্রমাণ করেছেন গ্লেন ফিলিপস। তাঁর ঝোড়ো গতির ৭৪ বলে ৬ চার ও ৭ ছক্কায় করা ১০৬ রানের কল্যাণেই নিউজিল্যান্ডের রান ৫০ ওভার শেষে ৩৩০ স্পর্শ করেছে।

নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করার পথে শেষ ৫ ওভারে মিশেল ব্রেসওয়েলকে সঙ্গে নিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন ফিলিপস। এই ৩০ বলে দুজন মিলে করেছেন ৮৪ রান। এমনকি ফিলিপসের শেষ ৫৬ রান এসেছে মাত্র ১৯ বলে। শেষ ওভারে সেঞ্চুরি পূরণ করার পথে শাহিন শাহ আফ্রিদির এক ওভারেই ফিলিপস করেছেন ২৫ রান। অন্য প্রান্তে অপরাজিত থাকা ব্রেসওয়েল করেছেন ২৩ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ রান।

ফিলিপসের আগে ৩৯ রানে ২ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল। দুজন মিলে গড়েন ১১২ বলে ৯৫ রানের জুটি। উইলিয়ামসন ৮৯ বলে ৫৮ আর মিচেল করেন ৮৪ বলে ৮১ রান। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন ৩ উইকেট নিলেও ১০ ওভারে দিয়েছেন ৮৮ রান। ৪১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন আবরার আহমেদ।

জবাব দিতে পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন ফখর জামান। তবে তাঁকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি ২০১৫ সালের পর প্রথম ওপেন করতে নামা বাবর আজম। ফিরে যান ২৩ বলে ১০ রান করে। ফখর এক প্রান্তে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখলেও অন্য প্রান্তে উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতে। তবে দারুণ ব্যাট করতে থাকা ফখর দলীয় ১১৯ রানে ফিরে গেলে বড় ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ৬৯ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৪ রান করেন এ ওপেনার।

ফখরের বিদায়ের পর সালমান আগা (৪০) ও তায়াব তাহির (৩০) কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন বটে। যদিও তা মিলিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। শেষ পর্যন্ত ২৫৪ রানের বেশি আর করতে পারেনি পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩ উইকেট করে নিয়েছেন ম্যাট হেনরি ও মিচেল স্যান্টনার। সোমবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য ট কর কর ছ ন প রথম উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামীকাল বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। মূলত রোহিঙ্গা বিষয় নিয়েই তাঁর এবারের সফর। তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করবেন। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন আন্তোনিও গুতেরেস ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

জাতিসংঘ মহাসচিবের চার দিনব্যাপী সফরসূচি তুলে ধরেন উপ–প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, আন্তোনিও গুতেরেস আগামীকাল বিকেল পাঁচটায় ঢাকায় আসবেন। ১৬ মার্চ তিনি ফিরে যাবেন। এই চার দিনের মধ্যে মূলত শুক্র ও শনিবার তাঁর মূল কর্মসূচিগুলো আছে। এর মধ্যে শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি সেই দিন রোহিঙ্গা শিবিরে চলে যাবেন। একই সঙ্গে কক্সবাজারে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টার আলাদা কর্মসূচি আছে। আর জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার থেকে সরাসরি রোহিঙ্গাশিবিরে চলে যাবেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেখানে তাঁর কর্মসূচিগুলো শেষ হওয়ার পর তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন। আর প্রধান উপদেষ্টা তাঁর কক্সবাজারের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি শেষ করে এই ইফতারে অংশ নেবেন।

আজাদ মজুমদার বলেন, ‘আমরা আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে এক লাখ রোহিঙ্গা ইফতারে যোগ দেবেন। এই ইফতার আয়োজন করা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্যে।’

উপ–প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, পরদিন শনিবারও জাতিসংঘের মহাসচিব একটি কর্মব্যস্ত দিন কাটাবেন। তিনি সকালে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। তারপর দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তিনি সেদিন সংবাদ সম্মেলনেও বক্তব্য দেবেন। সেদিনই জাতিসংঘের মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও রাতের খাবারের আয়োজন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব যোগ দেবেন। পরদিন তিনি বাংলাদেশ ছাড়বেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সফর। বাংলাদেশে এটি তাঁর দ্বিতীয় সফর হবে। ২০১৮ সালে তিনি একবার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকার বিশ্বাস করে, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফরের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আবার বৈশ্বিক আলোচনায় আসবে। সরকার আশা করে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব একটি ভালো বার্তা দেবেন।

এদিকে আজ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে ১৩ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে সফরকালীন জাতিসংঘের মহাসচিবকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ