সারা দেশে রাজনৈতিক ব্যানারে হাট-ঘাট-নদী দখলের প্রতিযোগিতা চলছে: আসাদুজ্জামান ফুয়াদ
Published: 8th, February 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফু্য়াদ বলেছেন, ‘ছয় মাস ধরে সারা দেশে রাজনৈতিক ব্যানারে হাট-ঘাট-মাঠ দখলের যে প্রতিযোগিতা চলছে, জনগণ সেটি চলতে দেবেন না। যদি কেউ মনে করেন যে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতিতে তরুণদের স্বপ্নকে ব্যর্থ করে দেবে, তা সফল হবে না।’ শনিবার বিকেলে জামালপুর শহরের ফৌজদারি এলাকায় এবি পার্টি আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির জামালপুর জেলার আহ্বায়ক আইনজীবী সানোয়ার হোসেন ও সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক লিপসন মিয়া। সভায় আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আগামী দিনে যাঁরা ক্ষমতায় ফিরবার স্বপ্ন দেখছেন। তাদের পতিত সরকারের কর্মকাণ্ড থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। পুরাতন বংশীয় লুটপাট তরুণেরা আর মেনে নেবে না। তাই চরিত্র বদলান, তা না হলে আপনাদের কপালও ৩২ নম্বরের মতো পুড়বে।’
সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পালাতে বাধ্য করা হয়েছিল, সে আর ফিরবে না। অনলাইনে উসকানি দিয়ে দুনিয়ার কোনো শক্তি অপচেষ্টাকে সফল হতে দেবে না গণতন্ত্রকামী জনগণ। আওয়ামী লীগের দোসর ও পুনর্বাসনকারীদের প্রতিহত করবে জামালপুরবাসী, যেটা আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে দেশের তরুণ-যুবকেরা।’
জামালপুরের স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান ফু্য়াদ বলেন, শহরের ফৌজদারি মোড়ে অবস্থিত বেসরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটি (প্রস্তাবিত নাম ব্রহ্মপুত্র ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি) নির্মাণকাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। নদী দখল করে ওই ইউনিভার্সিটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বহু দরিদ্র কৃষকের জমি দখল করা হয়েছে। নদীরক্ষা এবং জমিগুলো উদ্ধার করে, কৃষকদের বুঝিয়ে দিতে হবে। নদী উদ্ধারে জামালপুর এবি পার্টি প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেবে। দীর্ঘদিনেও জামালপুর মেডিকেল কলেজের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। জামালপুরে নতুন চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি বন্ধ করে, আইনের আওতায় আনতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এবি যুব পার্টির সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মোমেনশাহী জেলার আহ্বায়ক শাহজাহান মল্লিক, শেরপুর জেলার সদস্যসচিব মুকসিতুর রহমান, এবি পার্টির সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, জামালপুর পৌরসভার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, সদস্যসচিব মাহমুদুল হাসান বুলবুল, যুগ্ম আহ্বায়ক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব
এছাড়াও পড়ুন:
ইলিশের দাম যেন ঠিক থাকে, তা না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না: উপদেষ্টা ফরিদা
ইলিশকে গ্লোবাল ফিস উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘যে ১১টা দেশে ইলিশ পাওয়া যায় তার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। ইলিশ বিশ্বের মধ্যে একটা সম্পদ, যা বাংলাদেশে আছে। ইলিশের ব্যবস্থাপনা ঠিক মতো করতে পারলে বিশ্বের কাছে তা পরিচয় করিয়ে দেওয়া সম্ভব। তাই ইলিশকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে হবে। জুন মাসের পরে যখন ইলিশ বাজারে আসবে তখন যেন দামটা ঠিক থাকে। তা না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না।’
শনিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনার ‘ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রজনন সাফল্য নিরুপণ, জাটকা সংরক্ষণ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এখনই আমরা ইলিশের কৃত্রিম প্রজননের যেতে চাই না। তিনি আরও বলেন, কৃত্রিম প্রজনন আমাদের প্রাণিসম্পদের খুব বেশি উপকার করেনি। এটা আমাদের বুঝতে হবে। ইলিশ প্রকৃতি থেকে আসা একটা মাছ। এটা প্রাকৃতিকই রাখা ভালো। একই সঙ্গে জুন মাসের পরে যখন ইলিশ বাজারে আসবে তখন যেন দামটা ঠিক থাকে তা আমাদের দেখতে হবে। তা না হলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না।
পরিবেশ ওপর গুরুত্বরোপ করে উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততার প্রভাবতো আছেই, সেই সঙ্গে বৃষ্টি হওয়া না হওয়ার সঙ্গে ইলিশের ডিম ছাড়ার একটা সম্পর্ক আছে। কাজেই জলবায়ু পরিবর্তনে আমরা কী করতে পারি তা দেখার জন্য গবেষকদের আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, আমরা যদি যথেষ্ট সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি। তাহলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। আর ৯৫ ভাগ জেলেরা যদি ইলিশ ধরা বন্ধের সময় তারা না ধরে তাহলে কেন আমরা বাকি কাজটা করতে পারব না। জেলারা যেখানে মাছ ধরতে যায়, সেখানে দস্যুরা আক্রমণ করে। তাদের চিহ্নিত করে ধরতে হবে। আমরা যে মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকি তা যেন জেলেরাই পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইলিশের অর্থনৈতিক মূল্যের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মৌসুমে দেশ থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ইলিশ রপ্তানি করা সম্ভব। আমরাও ইলিশ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারি। তবে আগে আমাদের দেশের মানুষকে ইলিশ খাওয়াতে হবে।
পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, যারা ইলিশ খায় তাদের বুঝতে হবে ইলিশ আর জাটকা এক নয়। এ বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। একদিন পরেই পহেলা বৈশাখে তখন যারা পান্তা-ইলিশ খাবেন তারা মূলত জাটকা খাবেন।
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন। গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন প্রফেসর ড. ইয়ামিন চৌধুরী, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী।