আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফু্য়াদ বলেছেন, ‘ছয় মাস ধরে সারা দেশে রাজনৈতিক ব্যানারে হাট-ঘাট-মাঠ দখলের যে প্রতিযোগিতা চলছে, জনগণ সেটি চলতে দেবেন না। যদি কেউ মনে করেন যে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতিতে তরুণদের স্বপ্নকে ব্যর্থ করে দেবে, তা সফল হবে না।’ শনিবার বিকেলে জামালপুর শহরের ফৌজদারি এলাকায় এবি পার্টি আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির জামালপুর জেলার আহ্বায়ক আইনজীবী সানোয়ার হোসেন ও সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক লিপসন মিয়া। সভায় আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আগামী দিনে যাঁরা ক্ষমতায় ফিরবার স্বপ্ন দেখছেন। তাদের পতিত সরকারের কর্মকাণ্ড থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। পুরাতন বংশীয় লুটপাট তরুণেরা আর মেনে নেবে না। তাই চরিত্র বদলান, তা না হলে আপনাদের কপালও ৩২ নম্বরের মতো পুড়বে।’

সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পালাতে বাধ্য করা হয়েছিল, সে আর ফিরবে না। অনলাইনে উসকানি দিয়ে দুনিয়ার কোনো শক্তি অপচেষ্টাকে সফল হতে দেবে না গণতন্ত্রকামী জনগণ। আওয়ামী লীগের দোসর ও পুনর্বাসনকারীদের প্রতিহত করবে জামালপুরবাসী, যেটা আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে দেশের তরুণ-যুবকেরা।’

জামালপুরের স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান ফু্য়াদ বলেন, শহরের ফৌজদারি মোড়ে অবস্থিত বেসরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটি (প্রস্তাবিত নাম ব্রহ্মপুত্র ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি) নির্মাণকাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। নদী দখল করে ওই ইউনিভার্সিটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বহু দরিদ্র কৃষকের জমি দখল করা হয়েছে। নদীরক্ষা এবং জমিগুলো উদ্ধার করে, কৃষকদের বুঝিয়ে দিতে হবে। নদী উদ্ধারে জামালপুর এবি পার্টি প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেবে। দীর্ঘদিনেও জামালপুর মেডিকেল কলেজের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। জামালপুরে নতুন চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি বন্ধ করে, আইনের আওতায় আনতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এবি যুব পার্টির সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন, মোমেনশাহী জেলার আহ্বায়ক শাহজাহান মল্লিক, শেরপুর জেলার সদস্যসচিব মুকসিতুর রহমান, এবি পার্টির সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, জামালপুর পৌরসভার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, সদস্যসচিব মাহমুদুল হাসান বুলবুল, যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

আতিকুর রহমান ও যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান গণি, জামালপুর এবি যুব পার্টির আহ্ববায়ক শিহাব ইসলাম, সদস্যসচিব আবু সালেহ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে বর্ণালী একাডেমি ও অদৃশ্য ব্যান্ড।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে শুক্রবার শক্তির জানান দিবে জামায়াত

প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে জনসমাবেশ করছে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এই জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। জনসভা সফল এবং ব্যাপক জনমাগম ঘটাতে গত কয়েকদিন জেলার ৫টি উপজেলা এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মী সভা করেছে জামায়াতের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও মাইকিং, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন লাগিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে।  


এদিকে এই জনসভার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে জামায়াতে ইসলামী তাদের শক্তি ও সক্ষমতা জানান দিবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সচেতন মহল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই জনসভায় নারায়ণগঞ্জবাসীকে কি ম্যাসেজ দিবে জামায়াতে ইসলামী তা নিয়েও স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা। কারণ নারায়ণগঞ্জে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলমান থাকলেও কখনো তারা প্রকাশ্যে জনসভা করতে পারেনি। গত ১৬ বছরের আওয়ামীলীগের শসনামলে মামলা-হামলায় জর্জরিত ছিল নারায়ণগঞ্জে জামায়াত ইসলাম ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা। রীতিমত দলীয় কোন কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় পর্যন্ত দাঁড়াতে পারেনি। এরমধ্যে বিদায়ের শেষ দিকে আওয়ামীলীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে। এতে আরও বিপাকে পড়ে যায় দলটির নেতাকর্মীরা। তবে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জে ঘুরে দাঁড়ায় জামায়েতে ইসলামী। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নারায়ণগঞ্জে হতাহতদের বাড়ি-ঘরে ছুটে আসে কেন্দ্রীয় জামায়াতের আমীর সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে তারা হতাহতদের আর্থিক সহায়তা ও আগামীতে পাশে থাকার আশ^াস দেন। তাদের এই কর্মকান্ডকে পজেটিভভাবে নিয়েছে জুলাই বিপ্লবে হতাহতদের স্বজন ও সাধারণ মানুষ। তাই এমন সময়ে জনসভা ঘিরে উৎসবমুখোর জামায়েতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।


অপরদিকে শুক্রবারের জনসভা সফল ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর ড. শফিকুর রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা ও মহানগর নারায়ণগঞ্জ জামায়েতে ইসলাম।


সংবাদ সম্মেলনে জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ আবদুল জব্বার লিখিত বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ সময়কাল ধরে ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে আমরা সকলেই আওয়ামী লীগের জুলুমতন্ত্রদ্বারা নিষ্পেষিত হয়েছিলাম, যার কারণে এদেশের সিংহভাগ মানুষ তাদের মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। গুম-খুন, জেল-জুলুম, নির্যাতন, দুর্নীতি, অনিয়ম, কালোবাজারি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, মাদক বাণিজ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মাধ্যমে দেশকে এক অনিশ্চিত পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জনগনের শেষ ভরসাস্থল বিচারালয়কেও আওয়ামী লীগ তাদের দলীয়করণের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে জনগণের ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকারকে কেড়ে নিয়েছিল। মোট কথা আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগিরা দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। এহেন চরম দূর্বিসহ পরিস্থিতিতে নির্যাতিত মজলুম জনগনের রোনাজারিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল। আল্লাহ তা'য়ালা মজলুমের ফরিয়াদ কবুল করেছেন। তাঁর মেহেরবানীতে ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ৫ আগস্টের দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। 


তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের জনপদ হিসেবে অতীতে চিহ্নিত হয়েছিল। এ কারণে এ শহর সমৃদ্ধি-স্বস্তির নারায়ণগঞ্জের পরিবর্তে নৈরাজ্যের নারায়ণগঞ্জে পরিণত হয়েছিল। আমরা জুলাই-আগস্ট এর ছাত্র-জনতার অনন্য ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন বিজয়কে বুকে লালন করে সবাই মিলে ধ্বংস-ভাঙ্গা রাষ্ট্রকে মেরামতের মাধ্যমে নতুন নিরাপদময় একটি বাংলাদেশ এবং কাঙ্ক্ষিত ও প্রত্যাশিত বসবাস যোগ্য নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলতে চাই। যেখানে থাকবে না কোন বৈষম্য। কেউ আইনের বাইরে থাকবেনা। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলগণ হবেন জনগনের সেবক ও বন্ধু। 


লিখিত বক্তব্যে জামায়েতের এই নেতা আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেকগুলো সমস্যার পাশাপাশি অঢেল সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করে এবং সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা নারায়ণগঞ্জকে একটি আদর্শ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির নারায়ণগঞ্জ হিসেবে রূপান্তরিত করতে পারব ইনশাআল্লাহ। যে নারায়ণগঞ্জে থাকবেনা সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মহড়া, কিশোরগ্যাঙ্গ, মাদক সেবন ও বিপণন, মাস্তানী ও দখলদারিত্ব। থাকবেনা বেকারত্বের আহাজারি। যে নারায়ণগঞ্জ হবে বসবাসযোগ্য, ভয়হীন, বৈষম্যমুক্ত একটি আদর্শ নগরী। সেই প্রত্যাশাকে নারায়ণগঞ্জবাসির উদ্দেশ্যে তুলে ধরতে আগামীকাল ৭ই ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলা শাখার উদ্যোগে ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, মজলুম জননেতা ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। এছাড়াও জনসভায় কেন্দ্রীয় এবং জেলা ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। আশাকরি উক্ত জনসভা জন সমুদ্রে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। এই জনসভা হবে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জুলমবাজ, দখলবাজদের বিরুদ্ধে হুসিয়ারী উচ্চারণ, এই জনসভা হবে নারায়ণগঞ্জসহ দেশবাসীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের প্রতীক। 


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রেীয় জামায়াতের নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা দক্ষিন অঞ্চলের পরিচালক সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রেীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুউদ্দিন আহমদ,কেন্দ্রেীয় মজলিসে সূরা সদস্য জেলা আমীর মমিনুল হক সরকার, মহানগরী নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানয়োর হোসাইন, কেন্দ্রেীয় মজলিসে সূরা সদস্য জাকির হোসাইন, কেন্দ্রেীয় মজলিসে সূরা সদস্য প্রফেসর ড.ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া সহ নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলা কর্ম পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬৪ জেলায় জনসভা করবে বিএনপি
  • প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রদল আহ্বায়কসহ ১০ জন আহত
  • উসকানির কারণে সৃষ্ট পরিবেশের দায় উসকানিদাতাকেই নিতে হবে: জামায়াত আমির
  • নারায়ণগঞ্জের সেই গডফাদার কোথায়: জামায়াত আমির
  • সেই গডফাদার কোথায়, নারায়ণগঞ্জে জামায়াত আমির
  • সেই গডফাদার কোথায়: নারায়ণগঞ্জে জামায়াত আমিরের
  • নারায়ণগঞ্জের সেই গডফাদার কোথায়: জামায়াত আমীর
  • কানায় কানায় পূর্ণ নারায়ণগঞ্জ জামায়াতের জনসভা
  • নারায়ণগঞ্জে শুক্রবার শক্তির জানান দিবে জামায়াত