জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন প্রস্তাবকে জনবিরোধী উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। বিসিএস প্রশাসন ছাড়া ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত এই পরিষদের নেতারা বলছেন, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোনো কোটা মেনে নেওয়া হবে না।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা এ কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক শওকত হোসেন। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আরেক সমন্বয়ক মুহাম্মদ মফিজুর রহমান।

গত বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রতিবেদন জমা দেন। সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আজ সংবাদ সম্মেলন করে আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ ভাগ ও বাকি ২৫ ক্যাডারের জন্য ৫০ ভাগ কোটা দিয়ে হাস্যকর ও অযৌক্তিক প্রস্তাব করেছে। এমন কোটা মানা হবে না ঘোষণা দিয়ে কমিশনের এই প্রস্তাব সংশোধন করে শতভাগ পদোন্নতি সব ক্যাডারের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানায় পরিষদ। সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন প্রস্তাবকে জনবিরোধী বলে উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে শওকত হোসেন বলেন, ‘‘বিসিএস ২৫টি ক্যাডার কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতপ্রকাশ করায় ঢালাওভাবে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৪ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলছে। কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়া সামান্য অজুহাতে এ ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি করা অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা মৌলিক অধিকার ও চাকরিবিধি পরিপন্থী।’’

শওকত হোসেন অভিযোগ করেন, প্রশাসন ক্যাডারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ থাকলেও সে বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বিভিন্ন দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে যাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ জানান শওকত হোসেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ‘অন্যায় বরখাস্ত আদেশ’ প্রত্যাহার না করলে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সব ক্যাডার কর্মকর্তারা কর্মবিরতিসহ ধারাবাহিক কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার–বহির্ভূত করার প্রস্তাব করতে চেয়েছিল; কিন্তু আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের প্রতিবাদের মুখে সরাসরি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার–বহির্ভূত করার প্রস্তাব না রাখলেও সুকৌশলে শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রাখা হয়েছে। যেন ধীরে ধীরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার থেকে বের করা যায়। শওকত হোসেন বলেন, ‘‘আমরা এ ধরনের চতুরতার তীব্র নিন্দা জানাই।’’

এক প্রশ্নের জবাবে মফিজুর রহমান বলেন, ‘‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কিছু প্রস্তাব সংবিধান ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রতিবেদনের কিছু প্রস্তাব পরস্পরের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। কমিশনের পুরো প্রস্তাব পেলে খুঁটিনাটি যাচাই করে লিখিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।’’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্ত ক্যাডারের কর্মকর্তা জামিলুর রহমান, স্বাস্থ্য ক্যাডারের মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন, প্রাণিসম্পদ ক্যাডারের মুহাম্মদ আহসান হাবীব, কৃষি ক্যাডারের কর্মকর্তা মো.

মমিনুল হক ও ফাতেহা নূর প্রমুখ।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শওকত হ স ন

এছাড়াও পড়ুন:

ওমরাহ্‌ ভিসা কমিয়েছে সৌদি আরব

বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ্‌ ভিসা কমিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। চলতি মাস থেকে ভিসাপ্রত্যাশীদের জন্য কোটা পদ্ধতি চালু করেছে দেশটি। শতকরা ১০ ভাগ বাংলাদেশিকে বর্তমানে ওমরাহ্‌ ভিসা দিচ্ছে ঢাকার সৌদি আরব দূতাবাস।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও আল নাফি ট্রাভেলসের মালিক মো. নাজিম উদ্দিন। সমকালকে তিনি বলেন, ওমরাহ্‌র ক্ষেত্রে কোটা চালু করা হয়েছে। আগে ১০০টি ভিসার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০০টিই ভিসা পাওয়া যেত। বর্তমানে ৮-১০ শতাংশ ভিসা পাওয়া যাচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই গত ৫ মার্চ থেকে এ সমস্যা শুরু হয়েছে।

এদিকে আগামী বছর হজে যেতে ইচ্ছুকদের জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে ১৫ বছরের কম বয়সীরা হজে যেতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সৌদি সরকারের হজ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বুধবার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মামুন আল ফারুকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ্ মন্ত্রণালয় শিশুদের সুস্থতা ও নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে ২০২৫ সালে হজ পালনে আগ্রহীদের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ১৫ বছর নির্ধারণ করেছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমে নিবন্ধিত যাত্রী, এজেন্সি, ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা মানতে হবে।

উপসচিব মামুন আল ফারুক সমকালকে বলেন, সৌদি সরকারের নির্দেশনা আমাদের মানতে হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বহাল তবিয়তে শওকত আকবর, অপরাধ কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ৭ গ্রামবাসী 
  • ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না
  • বাংলাদেশিদের ওমরাহ্‌ ভিসা কমিয়েছে সৌদি আরব
  • ওমরাহ্‌ ভিসা কমিয়েছে সৌদি আরব