রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান ও ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন
Published: 8th, February 2025 GMT
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এই হল দুটির নতুন নাম দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ‘বিজয় চব্বিশ হল’ ও ‘শহীদ ফেলানী হল’।
আজ শনিবার বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১০তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেট সভা শেষে সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.
শওকাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনার পরিবারের নামে যেসব স্থাপনা আছে, সেগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এসেছিল। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা পরিবারের নামে দুটি হল ও একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। এর মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামকরণ পরিবর্তন সিন্ডিকেট সভা অনুমোদন করেছে। ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নামকরণ পরিবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের পরিবর্তে বিজয় চব্বিশ ও বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের পরিবর্তে শহীদ ফেলানী হলের নাম আজ থেকে কার্যকর করা হবে বলেও জানান শওকাত আলী। উপাচার্য আরও বলেন, সিন্ডিকেট সভায় আগামী ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে দিনটিকে ছুটি হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে ওই দিন প্রশাসনিক কাজ চলবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আহত শিক্ষার্থীর বিষয়ে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আহত শিক্ষার্থীদের বেতন ও উন্নয়ন ফি মওকুফ করা হয়েছে।
এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে রেজিস্ট্রার হারুন অর রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক তাজুল ইসলাম, ইলিয়াছ প্রামাণিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ খ ম জ ব র রহম ন ম জ ব হল র উপ চ র য হল র ন ম
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ বছর আগের যে মহামারিতে মরদেহ সৎকারেরও লোক ছিল না
সারা বিশ্বে সাম্প্রতিক সময়ে মহামারির কথা উঠলে প্রথমেই করোনাভাইরাসের নাম আসবে। ২০২০ সালে এই মহামারির প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্বে প্রাণ গেছে ৭০ লাখের বেশি মানুষের। তবে এর ১০০ বছর আগেও এ ধরনের একটি মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বব্যাপী। যার নাম দেওয়া হয়েছিল স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু। যে মহামারিতে পাঁচ কোটির বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো মহামারি বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কখনো এত মানুষের মৃত্যু হয়নি।
মহামারির শুরু
সময়টা তখন ১৯১৮ সাল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রায় শেষ হয়ে আসার পথে। যুদ্ধ শেষে সৈন্যরা যাঁর যাঁর দেশে প্রিয়জনদের কাছে মাত্রই ফিরতে শুরু করেছেন। ঠিক এমন সময় তাঁদের বাড়িতে অপেক্ষা করছিল নীরব এক ঘাতক। যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা’।
করোনার সঙ্গে বোধ হয় এই মহামারির অনেকটা মিল আছে। বাংলাদেশে ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এর ঠিক ১০০ বছর আগে ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ১৯১৯ সাল পর্যন্ত রোগটির দাপট ছিল।
স্প্যানিশ ফ্লুর প্রথম খবর আসে ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে। যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প থেকে। প্রথম দিকে এটি মৌসুমি জ্বর, সর্দি ও কাশির মতো উপসর্গ দেখা দেখা দিয়েছিল।এই মহামারিকে তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়। প্রথম ধাপে দ্রুতই এটি পশ্চিম ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই মাসে পোলাল্ডে রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম দিকে অনেকেই এটিকে সাধারণ সর্দি–কাশি মনে করছিলেন। তা ছাড়া এর প্রভাবও তেমন একটা দেখা যায়নি।
তবে দ্বিতীয় ধাপে এই ভাইরাস প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে শুরু করে। আগস্ট নাগাদ অর্থাৎ গ্রীষ্মকালের শেষ দিকে পুরো ইউরোপসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভাইরাসটি। প্রথম দিকে রোগীর নিউমোনিয়া শনাক্ত হতো। এর দুই–তিন দিনের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু হতো।
এরপরের ধাপটি ছিল শীতকালে। শীত মৌসুমের পর বসন্তকালে এটি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে থাকে। বিভিন্ন বয়সী মানুষ রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মুত্যুর কোলে ঢলে পড়তে থাকেন।
স্প্যানিশ ফ্লু নামকরণের কারণ
এই মহামারির নাম স্প্যানিশ ফ্লু কেন হলো, স্বভাবতই সেই প্রশ্ন আসতে পারে। মহামারির সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এতে অংশ নেয়। তারা তখন যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত। ঠিক এমন সময় মহামারি শুরু হওয়ায় প্রথম দিকে এসব দেশ ভাইরাসটির দিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি।
অপর দিকে ইউরোপের আরেক দেশ স্পেন তখন বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়নি। মহামারি শুরুর পর দেশটির সংবাদপত্রগুলো তাই এই রোগ নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা শুরু করে। তাদের মাধ্যমেই সারা বিশ্বের নজরে আসে নতুন এই রোগ।
এ নিয়ে লন্ডনের কুইন ম্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েলকাম ট্রাস্টের একজন গবেষক মার্ক হনিগসবাউম ১৯১৮ সালে এই মহামারি নিয়ে একটি বই লেখেন। যার নাম ‘লিভিং উইথ এঞ্জা’।
মার্ক হনিগসবাউম বলেন, স্পেনের সংবাদমাধ্যমগুলো এই রোগের খবর প্রকাশ করছিল। এটাই স্প্যানিশ ফ্লু নামকরণের পেছনের কারণ। মহামারি শুরু হলে স্পেনের রাজপরিবার এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তির অসুস্থ হওয়ার খবর দেশটির সংবাদমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করেছিল। কিন্তু ইউরোপের অন্য দেশে এ ধরনের সংবাদ তেমন গুরুত্ব পায়নি। তাই স্পেনের নামানুসারেই রোগটির নামকরণ হয়েছিল।
ফ্লু কখন ছড়াল
স্প্যানিশ ফ্লুর প্রথম খবর আসে ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে। যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প থেকে। প্রথম দিকে মৌসুমি জ্বর, সর্দি ও কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে প্রথম স্প্যানিশ ফ্লু শনাক্ত হয়