রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রবিসাস) প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী পরিষদ আত্মপ্রকাশ করেছে।

এতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রাইজিংবিডির সাংবাদিক মো. হাবিবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন চ্যানেল২৪ এর সাংবাদিক ফায়েজুর রহমান। এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মো: রাকিব মাহমুদ। 

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রবীন্দ্র  বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এ আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে রবিসাস। এর আগে, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদ ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয় এবং তাদের শ্রদ্ধায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.

সুমন কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ।

কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যান্য পদে দায়িত্ব পেয়েছেন বিডি সারাবেলার সাংবাদিক মো. মেহেদী হাসান (কোষাধ্যক্ষ), মুক্তকন্ঠের সাংবাদিক মো. মিজানুর রহমান (দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক) ও ভোরের বাণীর সাংবাদিক সাংবাদিক মো. হাফিজুল ইসলাম (কার্যকরী সদস্য)।

প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ফায়েজুর রহমান বলেন, “প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যনির্বাহী পরিষদে আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করায় সব সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা মুক্ত চিন্তা ও লেখনীর মাধ্যমে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপহার দিয়েছি সবসময়। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সবাইকে নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানাই।”

সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “সাংবাদিকরা জাতির দর্পণ। সাংবাদিকরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতির ভাল-মন্দ নানা ঘটনা, লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা খবর তুলে ধরে দেশ ও সমাজ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। রবিসাস সবসময় বস্তুনিষ্ঠ, সঠিক, তথ্যবহুল সংবাদ পরিবেশন ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সাংবাদিকদের লেখার মধ্যদিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।”

ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিথী-মেহেদীর জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল নববর্ষের সকাল

মায়ের কাছে এ পৃথিবীর সবচেয়ে দামী উপহার তার নাড়ী ছেড়া ধন, সন্তান। সেই সন্তানের জন্ম যদি হয় বিশেষ কোনো দিনে, সেটি যোগ করে বাড়তি আনন্দ। পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে বিথী-মেহেদী দম্পত্তির কোল আলো করে ফুটফুটে পুত্র সন্তানের আগমন বাঁধ ভাঙা আনন্দে ভাসিয়েছে তাদের।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার রাড়িপাড়া ইউনিয়নের দোবারিয়া এলাকার ফারহানা আক্তার বিথি ও মেহেদী সরদার দম্পত্তির জীবনে সোমবার সকালটা স্মরণীয় হয়ে রইল।

এর আগে রোববার সন্ধ্যার দিকে ব্যথা উঠলে বিথিকে প্রায় ১৫ কিলমিটার পথ ইজিবাইকে করে এনে বাগেরহাট শহরের সূর্যের হাসি ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকার বিথি ও দোবারিয়া গ্রামের মেহেদী। বিথি গৃহিণী, মেহেদী করেন মাছের ব্যবসা।

নবজাতকের খালা ফারজানা আক্তার সাথী বলেন, ‘আমরা দুই বোন, কোনো ভাই নেই। আমাদের বাবা সবসময় নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যেন আমাদের ঘরে আল্লাহ প্রথম ছেলে সন্তান দেন। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেছেন। আমারও প্রথম ছেলে সন্তান, আমার বোনেরও ছেলে সন্তান হয়েছে। হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থেকে বের হওয়ার পর নার্সের কোল থেকে বাচ্চাকে প্রথম আমার কোলেই দিয়েছিল। আমি ওর জন্য আগে থেকে কয়েক সেট ড্রেস কিনে রেখেছিলাম। সেখান থেকে একটি পরিয়েছি।’

শিশুটির নানি হালিমা বেগম বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের দিনে আমার ছোট মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে, এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে। আমি খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। হাসপাতালে সকলে খুবই আন্তরিক। বেলা ১১টায় হাসপাতালের ম্যানেজার এসে শিশুর মা ও আমাদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। সবাই সুস্থ আছে। ডাক্তার বলেছে কোন ধরনের ঝুঁকি নেই মা ও শিশুর। আর আমাদের বেশি চিন্তাও নেই, কারণ জামাই বাবাজি মেয়ের সুস্থতা নিয়ে বেশ সচেতন। আশা করি অনাগত দিনগুলো নতুন অতিথির সাথে সবার হাসি-আনন্দে কাটবে।’

নবজাতকের গর্ভধারিনী বিথি বলেন, ‘মা হওয়া যে কত আনন্দের তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। সন্তানকে যে কোনো পরিস্থিতিতে মা কেন বুকে আগলে রাখেন তা এখন বুঝতে পারছি।’

অপারেশন টেবিলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত খুব বেশি লেবার পেইন ছিল না বলে জানান বিথি। তিনি আরো বলেন, এতদিন স্থানীয়ভাবে রাড়িপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলেছেন। সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ১৫ এপ্রিল, অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার। কিন্তু শরীরে কিছুটা পানিশূন্যতা থাকায় একদিন আগে সিজার করা হয়।

বৈশাখের প্রথম দিনে সন্তান জন্ম নিবে বলে আশা করেছিলেন কিনা–এমন প্রশ্নে বিথি বলেন, ‘আল্ট্রাসোনাগ্রাম রিপোর্টে উল্লেখ ছিল বৈশাখের দ্বিতীয় দিনের কথা, তবে একদম নববর্ষের দিনে হবে তা আশা করিনি। নববর্ষের দিনে প্রথম সন্তান হওয়ায় দিনটি আরো স্মরণীয় হয়ে রইল’– যোগ করেন তিনি।

নববর্ষে এমন এক উপহার পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিথি। তাঁর স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে একজন আদর্শবান ডাক্তার হবে সন্তান। যাতে সমাজ ও দেশের সেবা করতে পারে সে। বিশেষ করে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও অসহায় মানুষদের পাশে তাঁর সন্তান দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা এই মায়ের।

সূর্যের হাসি ক্লিনিকের মেডিকেল অফিসার রিফাত আরা শীলা বলেন, রোববার রাত ১১টার দিকে বিথিকে তাদের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। তিনি বলেন, ‘নববর্ষের এই শুভদিনে নতুন প্রাণের আগমন আমাদেরও আপ্লুত করেছে। মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের যত্ন নিচ্ছি। বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৮০০ গ্রাম। এখনও পর্যন্ত মায়ের দুধ যথেষ্ট। যেহেতু স্বাস্থ্য ভালো আছে এবং উভয়েই সুস্থ আছে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা জরুরি।’ পরিবারটিও সে বিষয়ে সচেতন রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

শিশুর বাবা মেহেদী সরদার বলেন, ‘প্রথম বার বাবা হওয়ায় অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। তাও আবার ঐতিহ্যবাহী দিনে। তবে রোববার রাতে একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। প্রথম সন্তান তো, স্ত্রীর কিছুটা ব্যথা হচ্ছিল। বিশেষ করে ক্লিনিকে নিয়ে আসার পথটুকু ১৫ কিলোমিটার হলেও মনে হচ্ছিল হাজার মাইল। রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাবা হওয়া একটি স্বপ্নের মত জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এখন মনে হচ্ছে মা-বাবার সঙ্গে অনেক ভুল করেছি। বিভিন্ন সময় বুঝে-না বুঝে তাদের কষ্ট দিয়েছি। যখন নিজের সন্তানের মুখ দেখলাম, তখন মনে হলো বাবা-মায়ের প্রতি আরো যত্নবান হওয়া উচিত ছিল।’ মেহেদী জানান, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই রক্ত দিতে আসা তাহিদুল ইসলাম নবজাতককে আজান শুনিয়েছেন। শিশুটির কোনো নাম এখনো ঠিক করা হয়নি বা আত্মীয়-স্বজন কেউ প্রস্তাব করেনি বলে জানান তিনি। বাড়ি ফিরে আকিকা করে নাম রাখা হবে। আপাতত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে। আর সকলের কাছে শিশু ও শিশুর মা যেন সবসময় সুস্থ থাকে সেই দোয়া কামনা করেছেন তিনি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিথী-মেহেদীর জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল নববর্ষের সকাল