বন্দরের পাড়া মহল্লায় সক্রিয় হচ্ছে ওসমান দোসররা
Published: 8th, February 2025 GMT
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন মাস ছয়েক পূর্ণ হলেও এখনও তাদের দোসরমুক্ত করা যাচ্ছেনা নারায়ণগঞ্জকে। এখনও প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ওই সকল দোসরদের দেখা মিলছে। শুধু তাই নয়, তাদেরকে আগের মতই অনেকটা প্রভাব খাটাতেও দেখা যাচ্ছে।
কোন কোন এলাকায় এখনও নিয়মিত চাঁদাবাজী ও নানা অপকর্মের সাথেও জড়িত থাকছেন তারা। কিন্তু তাদের এ বহাল থাকার পেছনে আসলে কারা রয়েছেন? কাদের শেল্টারে তারা বহাল থেকে এখনও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন আজ জনমনে বার বার ঘুরপাক খেতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ বিশেষ করে বন্দরে ওই সমস্ত দোসরদের বেশি উঁকিঝুঁকি মারতে দেখা যাচ্ছে। দিন যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে এ উঁকিঝুঁকির সংখ্যা। জুলাই-আগস্টে যারা সরাসরি ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতা করেছিলো, তাদের ওপর হামলা এবং তাদের বাড়ীঘরে গিয়ে অভিভাবকদের ভয়ভীতি দেখিয়েছিলো তাদের মধ্যে কেউ কেউ রাতারাতি বনে যাচ্ছেন বিএনপি নেতা।
তেমনি একজন হলেন সাবেক সাংসদ সেলিম ওসমানের দোসর বন্দর থানা জাতীয় যুব সংহতির দপ্তর সম্পাদক ও ২২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো: সানী হোসাইন। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের সরাসরি বিরোধীতা করাসহ রয়েছে নানা অভিযোগ।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বন্দরের কুখ্যাত খান মাসুদ যখন ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছিলো, সেই মিছিলে সানীও ছিলো বলে স্থানীদের সূত্রে জানাগেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে আরও জানাযায়, সাবেক সাংসদ সেলিম ওসমানের সাথে সুসম্পর্ক থাকার কারণে ২২নং ওয়ার্ডে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো এ সানী। আর এসব অপকর্মে সার্বিক সহযোগীতা করতো কুখ্যাত খান মাসুদ। মূলত খান মাসুদের আশকারায়ই তিনি হয়ে উঠেছিলো বেপরোয়া। ব
হু নিরিহ মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজী, মারধর ও এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন করা ছিলো তার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার জীবনে নেমে আসতো প্রলয়। হামলা ও মামলার শিকার হয়ে তাকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হতো।
কিন্তু বড় দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, ওসমানদের আমলে সানী এসব অপকর্ম করলেও তাদের পতনেও তিনি রয়ে গেছেন একই রকম। ওসমানদের পতনেও তার জীবনে একচুল পরিমান প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। কোন এক রহস্যজনক কারণে তিনি এখনও এলাকায় বহাল তবিয়তে থেকে তার অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে।
সূত্র বলছে, ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার সাথে সাথে ওসমানদের পতন হলে তিনি রাতারাতি খোলসপাল্টে চলে যান স্থানীয় বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতার শেল্টারে । বর্তমানে তিনি ওইসব বিএনপি নেতাদের শেল্টারেই এলাকায় বহাল থেকে আগের মতই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সূত্রটির দাবি।
তবে এ বিষয়ে স্থানীয় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যারা আসলে সানীদের মত ওসমানদের দোসরদের আশ্রয় প্রশ্রয় বা শেল্টার দিচ্ছেন তারা মূলত বিএনপির কেউ না। তারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে সানীদের দিয়ে অপকর্ম করিয়ে এর থেকে একটা ভাগ নিচ্ছেন। আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। খুব শীঘ্রই সানীদের সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তারা আরও বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা চালিয়েছিলো বা ওইসময়ে যারা এর বিরোধীতা করেছিলো মামলা থেকে এমন অনেক দোসরদের নামই বাদ পড়েছে। এতে আমরা সত্যিই হতাশ হয়েছি। আমরা সানীদের মত দোসরদের নাম দ্রুত মামলায় অর্ন্তভুক্ত করার জন্য বন্দর থানার ওসি এবং জেলা পুলিশ সুপারদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমরা চাই না ওসমানদের কোন দোসর বিচারের বাইরে থাকুক। কারণ, তাদেরকে বিচারের বাইরে রাখা হলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের সাথে বেঈমানি করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ওসম ন ছ ত র জনত র দ সরদ র অপকর ম এল ক য় র পতন ব এনপ ওসম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াশিংটন যাচ্ছে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল
ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৌশলগত খনিজ সম্পদ চুক্তির আলোচনার জন্য এ সপ্তাহেই ওয়াশিংটন যাচ্ছে ইউক্রেনের একটি প্রতিনিধি দল। গত মাসে চুক্তিটি সই হওয়ার কথা থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে প্রকাশ্য সংঘাতের কারণে ওই আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়।
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেনকো গতকাল সোমবার জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনায় উভয় দেশের কৌশলগত স্বার্থ এবং শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকার বিবেচনায় নেওয়া হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ আহরণ থেকে লাভের একটি অংশ রয়্যালটি হিসেবে পাবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক ও আর্থিক সহায়তার ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসেবে এই স্বত্ব দাবি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই চুক্তিতে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ আগ্রাসন ঠেকানোর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তাও অন্তর্ভুক্ত রাখার বিষয়ে কথা বলবে তারা।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করলেও, ‘এখনও বহু প্রশ্ন ঝুলে রয়েছে’ বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। সোমবার এক বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘পুতিন যুদ্ধবিরতির পক্ষে। তবে সেটি কীভাবে কার্যকর হবে এ বিষয়ে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর নেই।’
এ অবস্থায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার কায়রো সফরকালে তিনি বলেন, ‘গত প্রায় এক মাস ধরে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থাপিত যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনার প্রতি সমর্থনের কথাও জানান মাখোঁ।
ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন জেলেনস্কিও। তবে তাঁর অভিযোগ, রাশিয়া সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। যুদ্ধবিরতির অনিশ্চয়তার জন্য কিয়েভের নিয়ন্ত্রণহীনভাবে কাজ করাকে দুষছে ক্রেমলিন।