পুলিশের সাবেক ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম ও তিনজন পুলিশ সুপারকে (এসপি) আটক করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে তাদের আটক করা হয়। আজ শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মিন্টো রোড কার্যালয়ে তাদের আনা হয়।

পুলিশের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানিয়েছে, সাবেক গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম রাজশাহী সারদা একাডেমিতে সংযুক্ত ছিলেন। গতকাল শুক্রবার রাজশাহী জেলা পুলিশ একাডেমির সহায়তায় তাকে আটক করে ঢাকায় আনা হয়। এছাড়া একইদিন রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ও আবুল হাসনাত এবং নীলফামারীর ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামানকে আটক করে রংপুর মহানগর পুলিশ। তাদের আজ দুপুরে ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।

আবুল হাসনাত বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। আব্দুল মান্নান কুমিল্লা ও সিলেটে এসপি থাকাকালীন নির্বাচন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শক্তি প্রয়োগ করেন। আসাদুজ্জামান নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। নির্বাচন ও পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এই চার পুলিশ কর্মকর্তাকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করে রাখা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তারা হাসিনা সরকারের সময় পুলিশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড আইজ

এছাড়াও পড়ুন:

যক্ষ্মার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে বড় আঘাত, বাংলাদেশে বন্ধের শঙ্কায় ১৯৬ নির্ণয় কেন্দ্র  

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রতিষ্ঠান ইউএসএআইডির অনুদান বন্ধ হওয়ায় বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াই বড় বাধার মুখে পড়ছে। এ রোগ নির্ণয়ে বিশ্বজুড়ে রয়েছে ১০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কেবল বাংলাদেশেই আছে ১৯৬টি। গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা এসব কেন্দ্রে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে যক্ষ্মা নির্ণয় ছাড়াও চিকিৎসা ও গবেষণা করা হয়। ইউএসএআইডির অর্থায়নে চলা এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কায় রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা নিরাময় কেন্দ্রগুলো বন্ধ হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে; বাধাগ্রস্ত হবে বৈশ্বিক যক্ষ্মা মোকাবিলা কার্যক্রম।

সোমবার দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বব্যাপী চলমান ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, পর্যালোচনা করতে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ইউএসএআইডির ৮৩ শতাংশ কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ৫ হাজার ২০০টির বেশি চুক্তি, যেগুলো শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় হওয়ার কথা ছিল।

ইউএসএআইডির অর্থে বিশ্বের নানা দেশে যক্ষ্মা নিরাময় কেন্দ্র পরিচালিত হয়ে আসছে। অর্থায়ন বন্ধের কারণে জটিল এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই মারাত্মকভাবে বাধার মুখে পড়বে। সুইজারল্যান্ডের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান স্টপ টিবি পার্টনারশিপের প্রধান ডা. লুসিকা দিতিউ বলেন, যক্ষ্মার চিকিৎসা বন্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী রোগটি ভয়ংকর রূপ ধারণের শঙ্কা রয়েছে। রোগটি চিকিৎসার অযোগ্য পর্যায়েও চলে যেতে পারে। তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তা বন্ধের কারণে রোগ নির্ণয়ে অপারগতা যক্ষ্মার বিস্তারকে লাগামহীন করে তুলতে পারে। 

গত মাসে (ফেব্রুয়ারি) বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা বন্ধের বিষয়ে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। গত সপ্তাহে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র দরিদ্র দেশগুলোকে প্রতিবছর যক্ষ্মা মোকাবিলায় ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটি ডলার সহায়তা দিয়ে আসছিল। এ সময় সংস্থাটি তহবিল বন্ধের বিষয়েও সতর্ক করে বলে, এমনটা করলে যক্ষ্মা মোকাবিলার কয়েক দশকের চেষ্টা জলে পড়বে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তাদের কৌশল এখন এই যে, ‘আমাদের প্রত্যেক ডলার ব্যয়, প্রত্যেক তহবিল ও প্রত্যেক নীতি যা আমরা অনুসরণ করি, তা যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে।’ ডা. লুসিকা দিতিউ বলছেন, ‘যক্ষ্মা প্রতিরোধ বন্ধ করলে এর কিছুই হবে না। প্রথমত, নিশ্চিতভাবেই এটি আমাদের কাউকেই নিরাপদ করে না। কারণ যক্ষ্মা বায়ুবাহিত। আপনি সীমান্তে এটি থামাতে পারবেন না। এটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়বে। যতক্ষণ আপনি শ্বাস নেবেন, ততক্ষণ আপনি এটি পাবেন। তবে কেবল সাধারণ যক্ষ্মা নয়, ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা এবং চরম ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মাও রয়েছে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ