‘আমার ভাই বলেছিল, মেয়েদের রিকোয়েস্ট সে একসেপ্ট করে না’
Published: 8th, February 2025 GMT
আমি ছিলাম তার গোপন অনুরাগী। আমার ভাই বলেছিল, ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে লাভ নেই, মেয়েদের রিকোয়েস্ট সে একসেপ্ট করে না।
মাত্র কয়েক দিন হলো ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছি। ঝোঁকের বশে পাঠিয়েই দিলাম বন্ধু হওয়ার অনুরোধ। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, সত্যি সত্যি সে রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেছে!
এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী। কেউ কাউকে কিচ্ছু বলি না। কালেভদ্রে স্ট্যাটাসে দু–একটা লাইক। ও হ্যাঁ, সে যুগে কেয়ার, লাভ, ওয়াও রিঅ্যাক্ট ছিল না।
আমাকে অবাক করে কোনো এক বসন্তের রাতে হঠাৎ তার মেসেজ, ‘আচ্ছা, আমি কি তোমাকে চিনি?’
এই প্রশ্নের উত্তর সেদিন আর দেওয়া হয়নি!
অসম্পূর্ণ কথামালা নিয়ে এরপর বিভিন্ন সময় আমার ইনবক্সে সে এসেছে। বুঝতে পারতাম, কিছু একটা বলতে চেয়েও বলতে পারছে না। আমিও কোনো দিন জোর করে শুনতে চাইনি সে কথা। একবার স্ট্যাটাসে লিখল, ‘চায়ের দোকান দিতে চাই, দোকানের নাম হবে “কাকার দোকান”।’
আমি লিখেছিলাম, ‘দোকানের মালিকের সঙ্গে চা খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা আছে?’
একদিন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরছি। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে বলে দ্রুত হাঁটছি। হুট করে কোথা থেকে সে সামনে এসে দাঁড়াল! আবার সেই অদ্ভুত প্রশ্ন, ‘আমি কি তোমাকে চিনি?’
আমি শুধু হেসে চলে এসেছিলাম।
ডাক্তারদের একটা পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দায়িত্বে সে ছিল। বন্ধুরা মিলে র্যাম্প ওয়াক করব বলে রিহার্সাল করছিলাম। মঞ্চের পর্দাগুলো কীভাবে সাজাতে হবে, এটা জানার জন্য তাকে ডেকে আনলাম। সে স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান, প্রতিটি কথাতেই পাঞ্চলাইন আর জোক। সবাইকে সব সময় হাসাতেই থাকে। স্টেজের ডিরেকশন বোঝাতে গিয়ে সে হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যাচ্ছিল। স্টেজের সবাই জোরে হেসে উঠল।
আমি একাই নাকি সেদিন ‘ইশ্’ বলে দুঃখ প্রকাশ করেছিলাম। গোমড়ামুখে দাঁড়িয়েও ছিলাম।
পার্বতীর ‘ইশ্’ শুনে ফেঁসেছিল দেবদাস আর আমার বলা ‘ইশ্’ তার মনে দাগ কেটেছিল। সেদিনের পর থেকে বারবার আমার গোমড়ামুখটাই নাকি তার চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। বারবারই তাই এড়িয়ে গেছে অনেক যোগ্য নারীর বিয়ের প্রস্তাব। মজার বিষয় হলো, তার মনে দাগ কাটা ঘটনাটার বিন্দুমাত্র আমার মনে নেই।
আয়োজন করে ‘ভালোবাসি’ না বলে একরাশ অসম্পূর্ণ কথোপকথন নিয়েই একসময় বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়েছিলাম। আসছে ভালোবাসা দিবসে গাঁটছড়া বাঁধার চার বছর পূর্তি। চায়ের দোকান দেওয়ার স্বপ্নটা দুজন মিলেই দেখি এখন। নামটা শুধু বদলেছে ‘ফলিং ইন লাভ অ্যাট আ টি স্টল’।
আরও পড়ুনপ্রেমিকের থুতনিতে নাড়া দিয়ে বলে আসলাম, ‘বুঝেছ উপেন, এ জমি লইব কেড়ে’১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, অভিযুক্ত তরুণ আটক
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য নিজের স্মার্টফোনে ধারণ করেন এক তরুণ। পরে মো. আরমান মিয়া (২৭) নামের ওই তরুণকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় জনতা।
অভিযুক্ত আরমান মিয়া ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের মো. শামসুল হকের ছেলে। আর নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর (৮) বাড়ি উপজেলার বরমী ইউনিয়নে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের শালবনের ভেতর থেকে আরমান মিয়াসহ ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে ওই তরুণকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা। ওই তরুণ ইয়াবা সেবন করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
কয়েক বছর ধরে ঘটনাস্থলের পাশে মাঝেরটেক এলাকায় বন বিভাগের জমিতে কুঁড়েঘর বানিয়ে বসবাস করছেন আরমান। সেখানে থেকে বিভিন্ন জায়গায় দৈনিক মজুরিভিত্তিক কাজ করেন তিনি।
নির্যাতনের শিকার শিশুর বাবা বলেন, দুপুর থেকেই তাঁর মেয়েকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্ধ্যায় বনের ভেতর চিৎকারের শব্দ শুনে সেদিকে এগিয়ে যান স্থানীয় পথচারীরা। পরে বনের ভেতর নির্জন স্থানে হাতেনাতে আটক করা হয় আরমানকে। আটকের পর শিশুটি জানায়, তাকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেছে আরমান। পরে আরমানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ধারণ করে তাঁর তিন বন্ধুর মুঠোফোনে পাঠিয়েছেন। এরপর তাঁকে গণধোলাই দেওয়া হয়। পরে পুলিশে খবর দিয়ে আরমানকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামীম আখতার বলেন, আরমানকে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।