কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে এক মাস সাত দিন বয়সী ছেলেশিশুকে রেখে শৌচাগারে যান মা। কয়েক মিনিট পর ফিরে এসে দেখেন, ঘরের ভেতর বিছানায় নেই তাঁর কোলের শিশুসন্তান। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ শিশুটির বাবার নাম বাবুল হোসেন মণ্ডল। তিনি পেশায় কৃষক। তাঁর পরিবারে ছয় বছর বয়সী অপর এক ছেলেসন্তান আছে। শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে বাবুল হোসেন জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে যান। এ সময় ছয় বছর বয়সী ছেলেসন্তানটিও বাড়ির বাইরে ছিল। বাড়িতে শিশুটির মা সোনিয়া খাতুন ছিলেন। শিশুটিকে শোবার ঘরে বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে পাশে শৌচাগারে যান তিনি। কয়েক মিনিট পর শৌচাগার থেকে ফিরে এসে দেখেন, বিছানায় শিশুসন্তানটি নেই। এ সময় সোনিয়া খাতুন চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এসে শিশুটিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।

এ ঘটনায় নিখোঁজ শিশুটির বাবা বাবুল হোসেন মণ্ডল বিকেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আজ শনিবার বাবুল হোসেন বলেন, ‘নিখোঁজের এক দিন পার হলেও এখনো তাঁর ছেলের কোনো হদিস পায়নি পুলিশ। সে কি নিখোঁজ হয়েছে, নাকি কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে, তা–ও বুঝতে পাচ্ছি না।’

দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বাদশা মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারটির সঙ্গে আশপাশের কারও বিরোধ নেই বলে জেনেছেন। কিন্তু কেন শিশুটি নিখোঁজ বা পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা ধারণা করতে পারছেন না। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিটের অভিযোগ

কুড়িগ্রামে চিলমারীতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ও ছবি ডিলিট করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে। 

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে। 

অন্যদিকে জেলা পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পুলিশের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অস্ত্র সংক্রান্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় এক তরুণ না জানিয়ে সেই অভিযানের ভিডিও ধারণ শুরু করে। অভিযানের তথ্য ফেসবুকে ফাঁস হতে পারে বলে তার মোবাইল হতে ধারণকৃত ভিডিও ডিলিট করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই সাংবাদিকের পরিচয় না জানায় এমনটা ঘটেছে। 

এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে জেলা পুলিশ। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সত্য ঘটনা প্রকাশের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর শহরের মোড় এলাকায় ঈদে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে যাওয়া মা-মেয়েকে উত্যক্তের অভিযোগ ওঠে। পরে মাইকিং করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান।

এসময় স্থানীয় সাংবাদিক, স্বদেশ পত্রিকার চিলমারী উপজেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম ছবি ও ভিডিও ধারণ করলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশের এক সদস্য তার ফোনটি কেড়ে নিয়ে ভিডিও ও ছবি ডিলেট করে ফোন ফেরত দেন। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার আসার খবর শুনে সেখানে গিয়ে ভিডিও ও ছবি তোলার সময় পুলিশ সুপার আমার ফোন কেড়ে নিতে বলেন। সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়েও তিনি ফোনটি কেড়ে নিতে বলেন। ওনার সাথে থাকা এক পুলিশ সদস্য ফোনটি কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করেন। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেবার পরও আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন। মিডিয়া ছুটিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন।”

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান বলেন, “কোনো সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না। এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’’

চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে ১০টার পরে এসপি স্যার এসেছিলেন। কিন্তু ফোন কেড়ে নেওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই।”

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “এটি ভুল তথ্য। রাতে অভিযানের সময় একটা ইয়ং ছেলে অন্ধকারে ভিডিও করছিল। তাকে বলেছি ভিডিও করো না। যাস্ট এটুকু। সেতো পরিচয় দেয়নি সে সাংবাদিক। তার আইডি কার্ডও ছিল না। আমরা ভেবেছি ফেসবুকে ছাড়তে ভিডিও করেছে। এজন্য ডিলেট করে দেওয়া হয়। মিডিয়া নিয়ে আমরা এটা বলতে পারি না।”

ঢাকা/বাদশাহ্/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ