‘কোনো অন্যায় চিরকাল টিকে থাকতে পারে না, তাই স্বৈরশাসক দেশ থেকে দূর হয়েছে। এখন দেশ পরিচালনায় সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী থেকে অজপাড়াগাঁ পর্যন্ত আপনাদের মাধ্যমেই দেশের সব মানুষ সেবা পান। তাই দেশের জনগণের কথা মাথায় রেখে হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করবেন। তাহলেই দেশের মানুষও আপনাদের মাথায় তুলে রাখবেন।’

আজ শনিবার বিকেলে নরসিংদীর পাঁচদোনার ড্রিম হলিডে পার্কে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের বনভোজন ও পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন।

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষকে আপনারা সাংবিধানিকভাবে সেবা দিয়ে থাকেন, সেই কারণেই আপনাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের কথা বলা হয়েছে। একটি হলো জাতীয় সংসদ, দ্বিতীয়টি সুপ্রিম কোর্ট এবং তৃতীয়টি হচ্ছে সচিবালয়। সচিবালয় হলো এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চ, রাষ্ট্র পরিচালনার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আপনারা সে হিসেবে রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’

দেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই গত ১৬ বছর কঠিন সময় পার করে এসেছেন বলে মন্তব্য করেন আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন ‘আপনারা কীভাবে সেসব দিন কাটিয়েছেন। আমার চেয়ে বেশি কেউ জানে না। সে সময়ও আপনারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম, আপনারা ধৈর্য ধরেছেন। এ জন্যই আজ সুদিনের স্বপ্ন আপনারা দেখতে পারছেন। কোনো অন্যায় চিরকাল টিকে থাকতে পারে না। এখন অন্যায় ও স্বৈরশাসক বাংলাদেশ থেকে দূর হয়েছে।’

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘গত সরকারের আমলে যে জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন আপনাদের ও আমাদের ওপর হয়েছে, এ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করুন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে আমরা যদি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করি, তবে অবশ্যই সব অন্যায় দূর করে আপনাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে।’

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আবদুল মঈন খান বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের গঠিত ২০২৫-২৬ মেয়াদের ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। কমিটির সভাপতি হয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো.

নুরুল ইসলাম ও মহাসচিব হয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক মো. মোজাহিদুল ইসলাম।

সংগঠনটির সভাপতি মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মো. মোজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এ বি এম আবদুস সাত্তার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী, ড্রিম হলিডে পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন দ র ল ইসল ম র হয় ছ আপন র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না

জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে  কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে আগাতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরিতে আলোচনার সিদ্ধান্ত গণসংহতির
  • ড. ইউনূস অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেননি, আমাদের হাতে বিপ্লবের দলিল নেই: ফরহাদ মজহার
  • ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থানের ফসল, নেতা নন: ফরহাদ মজহার
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
  • জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না
  • পুনর্বহালের দাবি জানালেন অপসারিত কাউন্সিলররা
  • আমরা জুলুম করে রাজনীতি করতে চাই না : নাহিদ ইসলামের বাবা 
  • ‘সিন্ধু দিয়ে হয় আমাদের পানি, নয় তাদের রক্ত বইবে’, ভারতকে বিলাওয়ালের হুঁশিয়ারি
  • সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো