রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের
Published: 8th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসে। এ বিষয়ে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকারবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড.
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ রোহিঙ্গা ইস্যুর টেকসই সমাধানের জন্য জরুরি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি এই ইস্যুর দ্রুত ও টেকসই সমাধানের জন্য সম্মেলন যাতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ জানান।
বৈঠকে ড. রহমান রাখাইন রাজ্যের গুরুতর মানবিক পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন এবং সতর্ক করে দেন যে, আসন্ন দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সংঘাত বিধ্বস্ত রাষ্ট্রকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। তিনি মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধ, জীবিকা পুনরায় চালু করা এবং এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য সক্ষম পরিবেশ তৈরিতে রাষ্ট্রটিতে জাতিসংঘের নেতৃত্বে গৃহীত উদ্যোগগুলোকে সমর্থনের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বাহ্যিক তহবিল পরিস্থিতির অবনতির দিকে মহাসচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি ত্রাণদাতা ও গ্রহীতাদের অবাধ প্রবেশাধিকার এবং সহিংসতা, ভয়ভীতি, বৈষম্য ও বাস্তুচ্যুতি থেকে মুক্ত এবং বিমান হামলা ও বোমা হামলা বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজার ও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা স্মরণ করেন এবং পদ্ধতিগত বৈষম্য ও মৌলিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য তার উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি আট বছর ধরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের অব্যাহত উদারতার প্রশংসা করেন । সংকটময় এই মুহূর্তে রাখাইনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের অপরিহার্য ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। তিনি রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে জাতিসংঘের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এসব কার্যক্রমে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সহায়তার আশ্বাস দেন মহাসচিব।
ড. রহমান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংস্কার প্রচেষ্টা সম্পর্কে মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের জোরালো ভূমিকার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব দাভোসে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার সাম্প্রতিক বৈঠকের কথা স্মরণ করেন এবং সংস্কার প্রচেষ্টার প্রতি দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিএইচ
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর পর স থ ত ত কর ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
করব্যবস্থার জটিলতা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা: ঢাকা চেম্বার সভাপতি
করব্যবস্থার জটিলতা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে উদ্যোক্তাদের ক্রমেই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে করব্যবস্থার জটিলতা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে করের নিয়মিত পরিবর্তন, অগ্রিম আয়কর ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কের বোঝা এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতার কারণে দেশের বেসরকারি খাতের ওপর অতিরিক্ত অর্থনৈতিক চাপের সৃষ্টি হচ্ছে।
দেশে সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও যানজটের অবনতির কারণে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে না বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। তিনি বলেন, ঋণপত্র (এলসি) খুলতে জটিলতা, এসএমই উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তিতে পদ্ধতিগত প্রতিবন্ধকতা এবং উচ্চ সুদ স্থানীয় শিল্পায়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ অবস্থায় দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ায় জোর দেন তিনি।
রাজধানীর তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সমস্যা চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বারের আয়োজিত ‘আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক, যানজট ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি’ শীর্ষক মত বিনিময় সভায় এ কথা বলেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ। ডিসিসিআইর গুলশান সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এ সভায় গুলশান, মহাখালী, বনানী ও বাড্ডা এলাকার ১৪টি বাণিজ্য সংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
ঢাকা চেম্বারের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, মত বিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক (বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ) মো. সাইয়েদুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (মূসক বাস্তবায়ন) মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (গুলশান বিভাগ) মো. তারেক মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গুলশান ১ নম্বর ডিএনসিসি দক্ষিণ পাঁকা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মো. আবু তাহের বলেন, শতভাগ মার্জিনের কারণে ব্যবসায়ীরা ভুগছেন। ঋণপত্র (এলসি) খোলা থেকে সমন্বয় হওয়া পর্যন্ত তিন মাস সময় লেগে যায়। দীর্ঘ সময়ের জন্য টাকা আটকে থাকায় মূলধনে টান পড়ে।
মহাখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফিরোজ আলম স্বপন জানান, ভ্যাটের হার বৃদ্ধি, ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের উচ্চ ফির কারণে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন।
আমিন হোসেন অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পার্টনার মোহাম্মদ আল আমিন জানান, অগ্রিম আয়কর সমন্বয়ের দীর্ঘসূত্রতার জন্য ব্যবসায়ীরা আর্থিক দিক থেকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসার মূলধন থেকে ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
হাসান হার্ডওয়্যারের স্বত্বাধিকারী মাহফিজুল হক বলেন, অসহনীয় যানজট, অটোরিকশার দৌরাত্ম্য এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ক্রেতার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
মেট্রোপলিটন শপিং প্লাজা মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দোকানমালিক দুর্বৃত্তদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট থানায় সহযোগিতা চাওয়া হলে কাঙ্ক্ষিত সাড়া মেলেনি। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোরালো ভূমিকার ওপর জোর দেন তিনি।
মওলা ট্রেডার্সের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যাংকঋণের সুদের উচ্চ হার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, এলসি পেমেন্টে দীর্ঘসূত্রতা, ভ্যাট প্রদানে হয়রানি প্রভৃতি কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, ঋণপত্রের মার্জিন শতভাগ হবে কি না, এটি ব্যাংক ও ভোক্তার সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। ঋণপত্রের মার্জিনের বিষয়টি সব পণ্যে এক নয়।
রাজস্ব আহরণে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে এনবিআরের প্রথম সচিব মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিবন্ধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে করজাল বিস্তারের লক্ষ্যে এনবিআর কাজ করছে। এ ছাড়া সার্বিকভাবে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে অটোমেটেড ও স্বচ্ছ রাজস্ব ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (গুলশান বিভাগ) মো. তারেক মাহমুদ চাঁদাবাজি, হয়রানি ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণকে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তার আহ্বান জানান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা চেম্বারের সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী ও মো. সালেম সোলায়মান।
মত বিনিময় সভার পর ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ডিসিসিআইয়ের সদস্যপদ প্রদান করা হয় বলে সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।