ইবি থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
Published: 8th, February 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানা ঝাউদিয়ায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে প্রধান ফটকের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় থানা ও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটি এ কর্মসূচির পালন করে। তাদের ডাকে ইবি শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত ও এর অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা এতে অংশগ্রহণ করেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ইবি থানা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং পার্শ্ববর্তী সাতটি ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকার মানুষের মতামত উপেক্ষা করে ফ্যাসিস্ট সরকারের স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক ব্যক্তি অসত্য তথ্য দিয়ে এ থানাকে সরিয়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে ঝাউদিয়ায় নেওয়ার অপচেষ্টা করেছে।
তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের মতামত না নিয়ে এমন অপচেষ্টা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ক্যাম্পাসকে সুরক্ষিত রাখতে হলে ইবি থানাকে তার পূর্বাবস্থায় বহাল রাখার কোন বিকল্প নেই। ইবি থানা ইবিতেই থাকবে, অন্য কোথাও এ থানা স্থানান্তর করা যাবে না।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “ঝাউদিয়াবাসী নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে ঝাউদিয়াতে থানা স্থাপনের দাবি করতে পারেন। কিন্তু ইবি থানা ইবিতেই থাকবে।”
শাখা শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “ইবিতে ইবি থানা রাখার জন্য বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে আসছে। ফ্যাসিস্ট সরকার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিয়ে এ থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। যা ইবি শিক্ষার্থীরা কখনোই মেনে নেবে না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির এসএম সুইট বলেন, “বিগত স্বৈরাচার সরকার ষড়যন্ত্র করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর কোন মতামত না নিয়ে ইবি থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। এ ষড়যন্ত্র আমরা মেনে নেব না, প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেব।”
ইবি থানা ও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি তৌহিদুল হাসান লাবু বলেন, “শহীদ জিয়ার গড়া গৌরবময় ইসলামী বিশ্ববিদালয়কে অস্থিতিশীল করতেই এখানে প্রতিষ্ঠিত দীর্ঘদিনের এ থানা সরিয়ে ফেলার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। সম্প্রতি পতিত সরকারের সুবিধাভোগীরা ঝাউদিয়ায় থানা উদ্বোধনের জন্য সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টি করেছে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
তিনি বলেন, “আজ কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আন্দোলনস্থলে এসে থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিলের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “সড়ক অবরোধের খবর শুনেছি, সেখানে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। থানা স্থানান্তর নিয়ে একটি কমিটির কাজ চলমান রয়েছে। ওই কমিটির পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদন জমা হবে।”
২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে কুষ্টিয়ার ইবি থানাকে ঝাউদিয়া এলাকায় স্থানান্তর করে ‘ঝাউদিয়া থানা’ নামকরণ এবং পুলিশ ক্যাম্পকে ইবি ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্প’ হিসেবে নামকরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দিতে পারবেন প্রবাসীরা: সিইসি
আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে জাতীয় নির্বাচনের সময় যারা প্রবাসে থাকবেন, তাদের পক্ষ থেকে অন্য কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেছেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয়, সে জন্য ইসি সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে।
বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে তারা ইসিকে সহায়তা করতে চান। পর্যবেক্ষক, ভোটার তালিকা, দল নিবন্ধন ও কেনাকাটার বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে।
নাসির উদ্দীন বলেন, তারা জাতীয় নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। এই গণতান্ত্রিক উত্তরণে তারা আমাদের সহায়তা করতে চান। আমরা ভোটার ও দলের নিবন্ধনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। আমরা খুব শিগগির কেনাকাটায় যাব। আমরা পর্যবেক্ষক নীতি পুনর্বিবেচনা করছি। পর্যবেক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করব।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু একটা সময়সীমা আছে, খুব সম্ভবত ডিসেম্বর। সেটা মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডিসেম্বরে নির্বাচন, তাই অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে। সময়সীমা যেন আমরা অতিক্রম না করি, সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে।
কী ধরনের সহায়তা আপনারা চেয়েছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে দলগুলোর এজেন্টরা থাকেন। দলের কর্মী বলে তাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়, অথচ তিনি নির্বাচনের নিয়মের কিছুই জানেন না। এখানে একটা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার পর দেখা যায়, তারা আমাদের নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না, আইনকানুন জানেন না। পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের কথা আমরা জানিয়েছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শুরুর প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এই ঘোষণাটা তো প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দিয়েছেন। তিনি ট্রেনের হুইসেল বাজিয়ে দিয়েছেন যে নির্বাচন ডিসেম্বরে অথবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।’ পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমার একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। এটি তার এবং তার টিম যে কাজগুলো করছে, সে সম্পর্কে জানার একটি সুযোগ। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরিতে সংস্কার প্রক্রিয়ায় ঐকমত্য গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।’
এনআইডিতে একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রচুর সংশোধনের আবেদন আসছে। অনেক সময় দ্বিতীয় স্ত্রীরা এসে তাদের নাম ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন। দুই নম্বর ফরমে একাধিক স্ত্রী যদি কারও থাকে, তার নামটা আগেই সংরক্ষণ করে নিই। তাহলে দেখা যাবে, ভবিষ্যতে ওই সমস্যা আর থাকবে না। এ জন্য দুই নম্বর ফরমে এটা রাখা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।