ময়মনসিংহে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূলহোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। এই চক্রটি ৫০টিরও বেশি অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে বলে জানিয়েছেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোহাইমেনুর রশিদ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার মো. শাহাদত হোসেন (৪৬), একই উপজেলার আব্দুস সালাম (৪৫), শেরপুর সদর উপজেলার মো.

শিখন আলী (২০), ময়মনসিংহ মুক্তাগাছ উপজেলার মো. আবু তাহের (৩৫)।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ বলেন, “গত ২৬ ডিসেম্বর ‘দৈনিক প্রথম আলো’ পত্রিকার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (সার্কুলেশন) আবুল বাশারকে ময়মনসিংহ নগরীর দিঘারকান্দা বাইপাস থেকে অপহরণ করে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ঘোরাঘুরি এবং মারধর করে। ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে এবং তার মোবাইল থেকে নিকট আত্মীয়ের কাছে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে দুই লক্ষাধিক টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। পরে তাকে ত্রিশাল থানাধীন চেলেরঘাট এলাকায় আহত অবস্থায় ফেলে যায়।” 

এই ঘটনায় মামলার পর গাজীপুর, শ্রীপুর, মাওনা, ভালুকা এবং ফুলপুরে একই প্রকৃতির একাধিক ঘটনার তথ্য পায় পুলিশ। পরে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি দল চক্রটিকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে। 

গত ৫ ফেব্রুয়ারি চক্রটি একইভাবে আরও একজনকে অপহরণের জন্য প্রাইভেটকার নিয়ে বের হয়। এমন খবরের ভিত্তিতে গত ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি জেলার ত্রিশাল, ভালুকা-গফরগাঁও সড়ক এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা ও শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুলহোতা শাহাদাত ও তার ভাই সালামসহ এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। 

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি নীল রঙের প্রাইভেটকার, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৮৭ হাজার টাকা জব্দ করে পুলিশ।


সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চক্রের মূল হোতা শাহাদত প্রায় ৮ বছর আগে মাওনা বাসস্ট্যান্ডে প্রাইভেটকার চালক থাকা অবস্থায় এই অপরাধে যুক্ত হয়। বিভিন্ন সময় একই পদ্ধতিতে ৫০ টিরও বেশি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে সে তিন দফায় প্রায় দুই বছর কারাভোগ করেছে। 

সর্বশেষ কাশিমপুর কারাগারে আটককৃত তাহেরের সাথে পরিচয় হয় এবং প্রায় দুই মাস আগে তারা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে আবারও তাদের পুরাতন পেশায় ফিরে আসেন। শাহাদতের বড় ভাই সালাম ও তার আত্মীয় শিখন এই কাজে তাদেরকে সহযোগিতা করতেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করে যে, তারা বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে শাহাদাত তার সঙ্গীদের প্রাইভেটকারে যাত্রী তুলতেন। গাড়িতে তোলার পর মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে ফোনে কথা বলে হত্যার হুমকি দিয়ে বিকাশে টাকা দিতে বাধ্য করতেন। 

তাদের ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত দুই মাসে প্রায় দশ লক্ষাধিক টাকার লেনদেন করেছে। চক্রটির আরও ছয় জন সদস্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে কাজ চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

ঢাকা/মিলন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার

ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার দাপট ও যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে বিআরটিএ। এ ছাড়া জেলা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষেও মহাসড়কে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার দৈনিক সমকালে ‘কমছে না অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, বাড়ছে দুর্ঘটনা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। 

রহমতপুর বাইপাসে বিআরটিএ পরিচালিত অভিযানে ছয়টি মামলায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাফসান রাব্বি। 

তিনি সমকালকে জানান, মহাসড়কে অবৈধভাবে অটোরিকশা চলছে। এগুলোর বেশির ভাগেরই রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া ফিটনেসবিহীন অনেক লোকাল বাস ঢাকা থেকে দূরপাল্লায় যাত্রী পরিবহন করছে। তারা যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের জরিমানা করা হয়। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। 

অভিযানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মিনিবাস সার্ভিসসহ বেশ কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সময় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত আদায়, ভাড়ার তালিকা প্রদর্শনে অবহেলা,  রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকাসহ অন্যান্য অনিয়মের প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। 
বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) আবু নাঈম জানান, এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিআরটিএ থেকে প্রায় ছয় হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্র বলছে, মহাসড়কে চলা সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা বাস্তবে কয়েক গুণ বেশি।

জরিমানার শিকার এক অটোরিকশাচালক জানান, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীচাপ থাকায় বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে জরিমানার কারণে আর বাড়তি ভাড়া আদায় করা হবে না বলে জানান তিনি।

এদিকে মহাসড়কে অবৈধ অটোরিকশার দাপট ও সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘন করায় জোরালো অভিযান চালিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা ট্রাফিক পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৪৪টি মামলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া আইন অমান্য করায় আটক করা হয়েছে একাধিক যানবাহন। 

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবু নাসের মো. জহির জানান, সিএনজি অটোরিকশাগুলো মহাসড়কের গলার কাঁটা হয়ে আছে। এগুলো বড় যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলায় দুর্ঘটনা বাড়ছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নওমুসলিমের বাড়ি ভেঙে ফেলায় সড়কে বিক্ষোভ-নামাজ আদায়
  • ময়মনসিংহে চিড়িয়াখানাটির চুক্তি শেষ হয় ৯ মাস আগে, জানে না সিটি করপোরেশন
  • ভালুকের শরীরে পচন, বন্ধ হল ময়মনসিংহের মিনি চিড়িয়াখানা
  • লামায় ৯ তামাক চাষিকে অপহরণ 
  • সাগর থেকে ১১ মাঝিমাল্লাসহ দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
  • আবারো ট্রলারসহ ১১ জেলে অপহরণ
  • মার্চে ৪৪২ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার: মহিলা পরিষদ
  • বান্দরবানে ৯ জনকে অপহরণ
  • ময়মনসিংহের মিনি চিড়িয়াখানায় ভালুকের শরীরে পচন
  • অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার