শিক্ষামূলক ভিডিও দেখার জন্য অনেকেই নিয়মিত ইউটিউব ব্যবহার করে থাকেন। তবে ভিডিওর আকার বড় হলে ভিডিওর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার জন্য পুরো ভিডিও দেখতে হয়, যা বেশ সময়সাপেক্ষ। এ সমস্যার সমাধান দিতে নিজেদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির জেমিনি চ্যাটবট হালনাগাদ করেছে গুগল। ‘জেমিনি ২.০ আপডেটস’ নামের সংস্করণটি ব্যবহারকারীদের নির্দেশমতো নির্দিষ্ট ইউটিউব ভিডিও দেখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে পারে।

গুগলের তথ্যমতে, জেমিনি চ্যাটবটের হালনাগাদ সংস্করণটি ব্যবহার করে এখন ব্যবহারকারীরা ইউটিউব ভিডিও না দেখেই সেখানে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। অর্থাৎ ইউটিউব ভিডিও চালু না করেই সেই ভিডিওর নির্দিষ্ট কোনো বিষয় বা খুঁটিনাটি সব তথ্য জানার সুযোগ মিলবে।

আরও পড়ুনচটকদার শিরোনামের ভিডিও ঠেকাতে ইউটিউবের কঠোর নীতিমালা, প্রয়োগ শুরু ভারত থেকে২২ ডিসেম্বর ২০২৪

জেমিনি চ্যাটবটের মাধ্যমে ইউটিউব ভিডিওর বিষয়বস্তু জানার জন্য অবশ্যই ‘২.

০ ফ্ল্যাশ থিঙ্কিং এক্সপেরিমেন্ট উইথ অপশন’ চালু করতে হবে। এরপর কোন কোন বিষয় জানাতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে ইউটিউবে থাকা নির্দিষ্ট ভিডিওর লিংক উল্লেখ করতে হবে। ব্যবহারকারীর নির্দেশ পাওয়ার পর ভিডিওতে থাকা সব তথ্য বিশ্লেষণ করে ফলাফল দেখাবে জেমিনি চ্যাটবট। পর্যায়ক্রমে সব ব্যবহারকারী এ সুবিধা পাবেন।

সূত্র: টেক রাডার

আরও পড়ুনশিশুদের নিরাপত্তায় ইউটিউবে নতুন প্যারেন্ট কোড সুবিধা১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ য টবট

এছাড়াও পড়ুন:

হজের প্রস্তুতি যেভাবে নিতে হবে

কোরআন মজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর তরফ থেকে সে সকল মানুষের জন্য হজ ফরজ, যারা তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে।’ (সুরা আল–ইমরান, আয়াত: ৯৭) হজ সম্পন্নকারীকে ‘হাজি’ বলা হয়।

সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য ওমরাহ পালন করা সুন্নত। ওমরাহর ফরজ দুটি—ইহরাম ও তাওয়াফ। ওয়াজিব দুটি—সাফা ও মারওয়া সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডন করা বা চুল কাটা। হজের নিয়তকে ইহরাম বলা হয়। সম্পাদন পদ্ধতি অনুসারে হজ তিন প্রকার—১. ইফরাদ, ২. কিরান ও ৩. তামাত্তু।

শুধু হজের ইহরামের নিয়ত করে তা সম্পন্ন করলে একে ‘ইফরাদ হজ’ (একক হজ) বলা হয়। ইফরাদ হজ পালনের জন্য ঢাকা থেকে শুধু হজের ইহরামের নিয়ত করে মক্কা শরিফে পৌঁছার পর তাওয়াফ ও সাঈ করে ইহরাম না ছেড়ে ১০ জিলহজ হজ সম্পন্ন হওয়ার পর ইহরাম ত্যাগ করতে হবে।

হজ ও ওমরাহর জন্য একত্রে ইহরামের নিয়ত করে একই ইহরামে তা সম্পন্ন করলে তাকে ‘কিরান হজ’ বা যৌথ হজ বলা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে একমাত্র হজ ছিল ‘কিরান হজ’। কিরান হজ পালনের জন্য ঢাকা থেকে ওমরাহ ও হজের একত্রে ইহরামের নিয়ত করে মক্কা শরিফে পৌঁছার পর প্রথমে ওমরাহর তাওয়াফ ও সাঈ করে ইহরাম না ছেড়ে সেই ইহরামেই হজ সম্পাদন করে ১০ জিলহজ ইহরাম ত্যাগ করতে হবে।

একই সফরে প্রথমে ওমরাহর ইহরামের নিয়ত করে, তা সম্পন্ন করার পর হজের জন্য নতুন করে ইহরামের নিয়ত করে তা সম্পাদন করাকে ‘তামাত্তু হজ’ বা সুবিধাজনক হজ বলা হয়। বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ হাজি তামাত্তু হজ করে থাকেন। তামাত্তু হজের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে শুধু ওমরাহর ইহরামের নিয়ত করে মক্কা শরিফ পৌঁছে তাওয়াফ ও সাঈ করে চুল কেটে বা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম সমাপ্ত করতে হবে। এরপর ৭ জিলহজ তারিখে হজের জন্য নতুন করে ইহরামের নিয়ত করে ১০ জিলহজ তা সম্পন্ন করতে হবে।

সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য ওমরাহ পালন করা সুন্নত। ওমরাহর ফরজ দুটি—ইহরাম ও তাওয়াফ। ওয়াজিব দুটি—সাফা ও মারওয়া সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডন করা বা চুল কাটা

কিরান ও তামাত্তু হজে ‘দমে শোকর’ বা কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব। এতে অপারগ হলে ১০টি রোজা পালন করতে হবে। এর মধ্যে অন্তত তিনটি রোজা হজকালীন মক্কা শরিফে রাখতে হবে।

হজ পালনরত হাজিরা ৯ জিলহজ (হজের বা আরাফার দিন) ও ১০ জিলহজ (কোরবানির ঈদের দিন) ছাড়া অন্য দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারবেন। যাঁরা হজ পালনরত নন, তাঁরা ৯ জিলহজ রোজা রাখা সুন্নত এবং ১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ রোজা রাখা নিষিদ্ধ।

হজের ফরজ তিনটি—১. ইহরামের নিয়ত বা ইচ্ছা করা; ২. অকুফে আরাফাহ করা, ৯ জিলহজ জোহর থেকে ১০ জিলহজ ফজরের পূর্ব পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফাহ ময়দানে অবস্থান করা এবং ৩. তাওয়াফে জিয়ারত করা, ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় কাবাঘরের তাওয়াফ (সাত চক্কর) করা।

পুরুষেরা ইহরাম অবস্থায় খোলা চাদর পরিধান করবেন, মাথা খালি রাখতে হবে এবং এমন স্যান্ডেল পরিধান করতে হবে, যাতে পায়ের পাতা খোলা থাকে। নারীদের ইহরামের বিশেষ কোনো পোশাক নেই; তবে মুখমণ্ডল খোলা রাখতে হবে।

ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ: প্রাণী হত্যা, রতিক্রিয়া, অন্যায় আচরণ, কলহ-বিবাদ ইত্যাদি (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৭)

হজের ওয়াজিব সাতটি—১. আরাফাত থেকে মিনায় ফেরার পথে মুজদালিফা নামক স্থানে ১০ জিলহজ ফজর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কিছু সময় অবস্থান করা; ২. সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করা; ৩. রমিয়ে জিমার—১০, ১১ ও ১২ জিলহজ জামারায় শয়তানকে পাথর মারা; ৪. তামাত্তু ও কিরান হজে দমে শোকর বা কোরবানি দেওয়া; ৫. মাথার চুল কেটে বা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করা; ৬. বিদায়ী তাওয়াফ করা; ৭. মদিনা শরিফে রওজাতুন নবী (সা.) জিয়ারত করা।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ