গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক কারখানার কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার মাওনা উত্তর পাড়া গ্রামে নাইস ডেনিম কারখানার মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

সাদ গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাস্থ্যসেবার এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ইসমাইল আঞ্জুমান আরা ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নূরে ইয়াসমিন ফাতিমা। ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাদ গ্রুপের ৭০ হাজার কর্মীকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে।

উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, চিকিৎসাসেবা পাওয়া শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে সাদ গ্রুপের ৭০ হাজার শ্রমিকের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ করবে কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি বিমা সেবা অব্যাহত থাকবে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় আল হেরা হাসপাতাল ও আল হেরা মেডিকেল সেন্টারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় শ্রমিকেরা নিয়মিত চিকিৎসাসেবা পাবেন। সেবা পেতে শ্রমিকদের প্রত্যেককে কার্ড দেওয়া হয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো শ্রমিক অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে কারখানার ভেতরে স্থাপিত প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রে তাঁর চিকিৎসা করা হবে। এ ছাড়া তাঁর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে চুক্তিভুক্ত হাসপাতালে চিকিৎসা করা হবে। প্রয়োজনে দেশের যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সেখানকার ব্যয়–সম্পর্কিত কাগজপত্র জমা দিয়ে খরচ উত্তোলন করা যাবে।

অনুষ্ঠানে নাইস ডেনিম কারখানার কর্মী মোছা নাসরিন আক্তার বলেন, তাঁরা এখন থেকে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে আরও নিশ্চয়তা পেলেন। কারখানার আরেক কর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, বিতরণ করা কার্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পেলে তাঁদের অতিরিক্ত আয় হবে। এ আয় পারিবারিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারবেন তাঁরা।

‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কারখানার প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্ড বিতরণ করা হয়। সাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান নূরে ইয়াসমিন ফাতিমা উপস্থিত শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, রোগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা নিতে চলে যেতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে পরিচ্ছন্ন থাকা ও ভালো খাবার খেতে হবে। পরিকল্পিতভাবে ও পরিমিতভাবে বেতন খরচ করলে শ্রমিকেরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভালো খাবার খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অযাচিত খরচ পরিত্যাগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দিতে পারবেন প্রবাসীরা: সিইসি

আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে জাতীয় নির্বাচনের সময় যারা প্রবাসে থাকবেন, তাদের পক্ষ থেকে অন্য কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অংশ নেন তিনি।

নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেছেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয়, সে জন্য ইসি সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে।

বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে তারা ইসিকে সহায়তা করতে চান। পর্যবেক্ষক, ভোটার তালিকা, দল নিবন্ধন ও কেনাকাটার বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে।

নাসির উদ্দীন বলেন, তারা জাতীয় নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। এই গণতান্ত্রিক উত্তরণে তারা আমাদের সহায়তা করতে চান। আমরা ভোটার ও দলের নিবন্ধনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। আমরা খুব শিগগির কেনাকাটায় যাব। আমরা পর্যবেক্ষক নীতি পুনর্বিবেচনা করছি। পর্যবেক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করব।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু একটা সময়সীমা আছে, খুব সম্ভবত ডিসেম্বর। সেটা মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডিসেম্বরে নির্বাচন, তাই অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে। সময়সীমা যেন আমরা অতিক্রম না করি, সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। 

কী ধরনের সহায়তা আপনারা চেয়েছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে দলগুলোর এজেন্টরা থাকেন। দলের কর্মী বলে তাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়, অথচ তিনি নির্বাচনের নিয়মের কিছুই জানেন না। এখানে একটা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার পর দেখা যায়, তারা আমাদের নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না, আইনকানুন জানেন না। পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের কথা আমরা জানিয়েছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শুরুর প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এই ঘোষণাটা তো প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দিয়েছেন। তিনি ট্রেনের হুইসেল বাজিয়ে দিয়েছেন যে নির্বাচন ডিসেম্বরে অথবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।’ পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমার একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। এটি তার এবং তার টিম যে কাজগুলো করছে, সে সম্পর্কে জানার একটি সুযোগ। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরিতে সংস্কার প্রক্রিয়ায় ঐকমত্য গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।’

এনআইডিতে একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রচুর সংশোধনের আবেদন আসছে। অনেক সময় দ্বিতীয় স্ত্রীরা এসে তাদের নাম ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন। দুই নম্বর ফরমে একাধিক স্ত্রী যদি কারও থাকে, তার নামটা আগেই সংরক্ষণ করে নিই। তাহলে দেখা যাবে, ভবিষ্যতে ওই সমস্যা আর থাকবে না। এ জন্য দুই নম্বর ফরমে এটা রাখা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ