তারা আমাদের সন্তানদের যন্ত্রণা দিচ্ছে: ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী তল্লাশি নিয়ে সতর্ক যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো
Published: 8th, February 2025 GMT
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তারা তাঁর নথিপত্রহীন অভিবাসীদের ‘গণ–বিতাড়ন’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শিকাগো শহরে কাজ শুরু করেছেন। তাঁদের তল্লাশি অভিযান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার বেড়ে গেছে।
অভিবাসন কর্মকর্তারা তৎপরতা শুরুর পর অভিভাবকেরা বাচ্চাদের আগেভাগে স্কুল থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন অথবা সন্তানকে নিতে কয়েক ব্লক দূরে গাড়ি পার্ক করে অপেক্ষা করছেন। বিগত কয়েক বছরে এই শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজার হাজার নতুন অভিবাসী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। যেসব পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বাইরে বের হতে আতঙ্কবোধ করছেন, ফোন করে তাঁদের খোঁজখবর নিচ্ছেন শিক্ষকেরা।
উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে নথিপত্রহীন বাবা–মায়ের সন্তান শিক্ষার্থীদের কাছে ক্লাস শেষে ‘আপনার অধিকার সম্পর্কে জানুন’ সম্পর্কিত তথ্য বিতরণ করছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষকেরা বলছেন, ‘তারা আমাদের সন্তানদের, আমাদের শিশুদের যন্ত্রণা দিচ্ছে। তাদের ক্ষতি করছে।’
শহরজুড়ে প্রশাসনের এই সাঁড়াশি অভিযানের চাপ কমে আসতে কত দিন চলবে, তা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা ভাবছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন নিজেদের অভিবাসন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। স্কুল ক্যাম্পাসে অভিযানের বিরুদ্ধে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের দীর্ঘদিনের সুরক্ষা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আবাসিক এলাকা ও শহরতলিতে শত শত কেন্দ্রীয় এজেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ স্থান বজায় রাখতে গিয়ে শিক্ষকদের নাভিশ্বাস উঠছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বীমা খাতের উন্নয়নে আইডিআরএর সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি: ড. আসলাম
বীমা খাতের উন্নয়নে সংস্কার করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা থাকায় আইডিআরএ তার ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারে না।
এই খাতের উন্নয়ন করতে চাইলে আইডিআরএ-কে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে; ক্ষমতা প্রয়োগের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন ড. আসলাম আলম।
বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকার মতিঝিলে আইডিআরএ কার্যালয়ে ‘বীমা খাতের সংস্কার ও আমাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনারে’ তিনি এসব কথা বলেন।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ) যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে।
আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। জীবন বীমা খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রগতি লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জালালুল আজিম এবং নন-লাইফ খাত নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেনা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিক শামীম।
সেমিনারে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য, লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমে বীমা খাত নিয়ে কাজ করা সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।
বীমা আইনকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করে আসলাম আলম বলেন, আইডিআরএ-কে দুর্বল করে বীমাকারীদের পক্ষে এই আইন করা হয়েছে। আইডিআরএ কাউকে সাসপেন্ড করলে তারা আদালতে গিয়ে স্টে অর্ডার নিয়ে পুনরায় ফিরে আসে। তাই ব্যাপকভাবে আইডিআরএ এর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে তথ্যের প্রয়োজন। কিন্তু বীমা কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে তথ্য প্রদান করতে চায় না। যেসব তথ্য দেয়, তা ফেব্রিকেটেড (জাল-জালিয়াতি) কিনা তাও নিশ্চিত নয়।
তিনি বলেন, “ডিজিটালাইজেশন হলে ৮৫ শতাংশ অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা পদক্ষেপ নেই কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যায় না।”
আইডিআরএ চেয়ারম্যান আরো বলেন, আইএমএস যেটা ইউএমপি নামে পরিচিত ছিল, সেটা ১০টি সার্ভিস দিচ্ছে। বীমা কোম্পানিগুলো মনিটরিং করতে এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আইএমএস-এ পূর্ণ তথ্য দিলে আইডিআরএ কাজ করতে পারবে। কিন্তু বিআইএ এর নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা এটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে না।
আসলাম আলম বলেন, ডিজিটালাইজেশন ছাড়াও যদি যথাসংখ্যক জনবল থাকতো তাহলেও হতো। কিন্তু আইডিআরএকে স্বল্পসংখ্যক জনবল ও স্বল্প টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে বীমা খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়েই কাজ চলছে। এজন্য সময় লাগবে, রাতারাতি সম্ভব নয়।
গ্রাহকদের বকেয়া বীমা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, উল্লেখযোগ্য শেয়ারহোল্ডারের সম্পদ বিক্রি করে দাবি পরিশোধের ক্ষমতা আইডিআরএ এর নেই। এ জন্য আদালতে যেতে হয়। এরইমধ্যে কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু মামলা চলমান আছে।
তিনি আরো বলেন, অনিষ্পন্ন বীমা দাবি পরিশোধ না হলে বীমার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে না। সুশাসন কায়েম হলে আস্থা বাড়বে।
ঢাকা/এনএফ/এনটি/রাসেল