গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়।

গুলিতে মোবাশ্বের হোসেন (২৬) নামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় এক সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি গাজীপুর মহানগরের হারিনাল দক্ষিণপাড়া এলাকার আলী আহমেদের ছেলে। তাঁকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজীপুরে হামলার প্রতিবাদে হাসনাত-সারজিসের নেতৃত্বে সড়ক অবরোধ৩ ঘণ্টা আগে

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, শুক্রবার রাতের হামলার ঘটনায় বিচারের দাবিতে আজ শহরের রাজবাড়ি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান শিক্ষার্থীদের বিচার নিশ্চিত ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেন এবং মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন।

আরও পড়ুনগাজীপুরে হামলার ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার, ক্ষমা চাইলেন মহানগর পুলিশ কমিশনার১ ঘণ্টা আগে

আহত মোবাশ্বের হোসেন বলেন, তাঁরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলেন। তখন শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা এসে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। গুলিটি তাঁর ডান হাতের এক পাশে লাগায় তিনি বেচে যান। পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একজন ছাত্রের হাতে গুলি লেগেছে বলে শুনেছেন। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর হাতে গুলি লেগেছে। ঘটনাটি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

আরও পড়ুনগাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা, মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক ডেকে মারধরে আহত ১৫১৮ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

৩২ নম্বরে ভাঙচুরে কারা জড়িত, আমাদের কাছে তথ্য নেই: হাফিজ উদ্দিন আহমদ

এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সব দেশপ্রেমী শক্তির ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি কারা করেছে, এ তথ্য আমাদের কাছে নেই। এতে সরকারের কী ভূমিকা ছিল, সেই তথ্যও আমাদের কাছে নেই।...আশা করব, অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এ জন্য দায়ী।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে আমরা এ সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া মিডিয়ার সামনে, জনগণের সামনে প্রকাশ করব। অপূর্ণ তথ্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সঠিক নয়।’

তবে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, এগুলো গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য আগামী দিনে গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে জন্য কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারেন। বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ আছে কি না, তা জানার চেষ্টা করব।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির ছয় মাস পূর্তির দিনে গতকাল ৩২ নম্বরে ভাঙচুর চালানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালেও বাড়ি ভাঙার কাজ অব্যাহত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে এ দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে নেওয়ার জন্য, এ দেশকে ধ্বংস করতে যেটুকু তিনি বাকি রেখেছেন, সেটি পূর্ণ করার জন্য নতুনভাবে এই ফ্যাসিস্ট দলকে (আওয়ামী লীগ) নিয়ে মাঠে নামতে চান।’ তিনি বলেন, ‘একাত্তর সালে অনেক যুদ্ধের পর আমরা কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকে আমাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হলো। যে লক্ষ্য ধারণ করে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার...ধীরে ধীরে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।’

আওয়ামী লীগের নাম উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এদের কাছে কোনো দেশ নেই। এদের কাছে নিজের দল, নিজের পরিবার, নিজের স্বার্থ, নিজের সম্পদ আহরণ মূল কাজ। আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের কত সম্পত্তি, জানি না। আমরা মিডিয়াতে মাঝেমধ্যে খবর দেখি...আগে তো জানতাম না যে শেখ পরিবারেই আটটি বাগানবাড়ি রয়েছে গাজীপুর এলাকাতে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিয়ন সেখানে চার শ কোটি টাকা আয় করেছে, হেলিকপ্টারে ঘুরে বেড়ায়, অকল্পনীয়।’

হাফিজ উদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, অতিদ্রুত দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। কারণ, গণতন্ত্র না থাকার ফলেই নানা ধরনের ঘটনা ঘটে। কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, একটি মহল মনে করে, এখন নির্বাচন হলে পরে বিএনপি বিজয়ী হবে। সুতরাং এ নির্বাচনকে যত দীর্ঘায়িত করা যায়। বিএনপি যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, এটা তো অপরাধ হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার জন্য কেন নির্বাচন দীর্ঘায়িত করা হবে, এটি আমরা বুঝতে অক্ষম। আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অনুরোধ রাখব, আপনি দ্রুত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগ নিন। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রের প্রধান অনুষঙ্গ।’

আয়োজক সংগঠন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সহসভাপতি ইশতিয়াক আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি
  • ঢাবির সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
  • গাজীপুরে মোজাম্মেলের বাড়িতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে হাসনাত ও সারজিস
  • গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষ দিন: সারজিস আলম
  • কুয়েতের কৃষি অঞ্চলে প্রবাসীদের সাথে রাষ্ট্রদূতের মতবিনিময়
  • ৩২ নম্বরে ভাঙচুর কারা করেছে, আমাদের জানা নেই: হাফিজ উদ্দিন আহমদ
  • ৩২ নম্বরে ভাঙচুরে কারা জড়িত, আমাদের কাছে তথ্য নেই: হাফিজ উদ্দিন আহমদ
  • ওসমানী বিমানবন্দরে দুই যাত্রীর কাছ থেকে সাড়ে ১৭ কেজি সোনা উদ্ধার
  • আওয়ামী লীগের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা দ্বিচারিতা: সালাহ উদ্দিন আহমদ