নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় গণপিটুনিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ছবিরপাইক গ্রামের ধুমচর-ছবিরপাইক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
কবিরহাট থানার ওসি শাহিন মিয়া বলেন, “নিহত ব্যক্তি চুরির চেষ্টা করে। স্থানীয়রা টের পেয়ে ধাওয়া দিয়ে তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। গুরুত্বর আহত হয়ে তার মৃত্যু হয়। মরদহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিহত ব্যক্তির নাম জহির উদ্দিন বেচু (৪০)। তিনি সুন্দলপুর ইউনিয়নের উত্তর লামছি গ্রামের নাটাই মোস্তফার বাড়ির বাসিন্দা।
আরো পড়ুন:
১০ হাজারে চুক্তি, নদীতে নেমে প্রাণ গেল যুবকের
ঝিনাইদহে ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের মৃত্যু
এলাকাবাসী জানান, জহির রাতে ছবিরপাইক গ্রামের মসজিদের তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। এসময় মসজিদের ইমাম জেগে উঠলে তিনি পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর জহির ফিরে এসে মসজিদের পাশের একটি চায়ের দোকানে ঢোকার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে জহিরকে ধাওয়া দিয়ে ধরে গণপিটুনি দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
সুন্দলপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো.
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু নাছের মো. লুৎফুল হাসান বলেন, “গুরুতর আহত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ আনা হয়েছে।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর গণপ ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
পুরান ঢাকার ব্যবসার সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি
অসহনীয় যানজট, অপ্রতুল অবকাঠামো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অপর্যাপ্ত ঋণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, কর–ভ্যাট বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু বিষয়কে পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ ও সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পুরান ঢাকার ব্যবসা–বাণিজ্যের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। আজ শনিবার পুরান ঢাকার লালবাগের মীম কমিউনিটি সেন্টারে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তারা বলেন, রাজধানীর ব্যবসার অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই তাঁরা এসব সমস্যার আশু সমাধান দাবি করেছেন। সভায় পুরান ঢাকার বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক (গবেষণা) মো. সেলিম আল মামুন, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ)-এর অতিরিক্ত কমিশনার মানস কুমার বর্মন এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মো. জসীম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ কর ও ভ্যাট ব্যবস্থার জটিলতা, ব্যবসার আকার, প্রকৃতি ও সক্ষমতা অনুযায়ী কর ব্যবস্থার সহজীকরণ, আমদানি-রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা নিরসন, বাস্তবভিত্তিক ভ্যাট হার নির্ধারণের ওপর জোর দেন। এ সময় তিনি বলেন, শত বছর ধরে পুরান ঢাকা ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হলেও যানজট, অবকাঠামোর অপ্রতুলতা এবং কর ও ভ্যাট প্রতিবন্ধকতার কারণে এখানকার উদ্যোক্তারা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এসব সমস্যা নিরসনে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন খুবই জরুরি।
অনুষ্ঠানে আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক পরিচালক মনোয়ার হোসেন করের হার কমিয়ে করের আওতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। সেই সঙ্গে করহার যৌক্তিক করার দাবি জানান তিনি।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, অসহনীয় যানজটের কারণে ব্যবসায়ীদের বিক্রি ক্রমাগত কমছে। কর ও ভ্যাটের উচ্চ হার এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার জটিলতার কারণে এই ক্ষতি আরও বাড়ছে।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে নগদ জমার হার ন্যূনতম ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা দরকার।
এ ছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে খাতভিত্তিক ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর প্যাকেজ ভ্যাট ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।
মতবিনিময় সভা শেষে পুরান ঢাকার ৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ঢাকা চেম্বারের সদস্যপদ দেওয়া হয়। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে এই সদস্যপদের সনদ তুলে দেন।