সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলেছে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ কারও সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন।  

আজ শনিবার বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো.

মতিউর রহমান শেখ ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ এই পলাতক কর্মকর্তার (বেনজীর) বক্তব্য পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত সব সদস্যকে ক্ষুব্ধ করেছে। ২০২৪–এর জনতার অভ্যুত্থানে হাজার হাজার মানুষ নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের আলোকবর্তিকা স্থাপন করেছে, পুলিশ বাহিনী সেই আলোকবর্তিকার আলোতে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়চিত্তে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সে লক্ষ্যেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মামলা তদন্ত ও অন্যান্য কাজে বর্তমান সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, পলাতক ও দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বেনজীরের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অবাস্তব বক্তব্যকে পুলিশ সদস্যরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। বিগত সরকারের আমলে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে প্রত্যেক পুলিশ সদস্য দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞ। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ কারও সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাকে এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য অত্যন্ত ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন।  

প্রসঙ্গত, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অনুসারীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে অংশ নেন। সেখানে দেওয়া তাঁর বক্তব্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

চীনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একত্রে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ট্রাম্প–ইশিবার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা তাঁদের প্রথম বৈঠকে উষ্ণ সুরে কথা বলেছেন। গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এ দুই নেতা বৈঠক করেন। ট্রাম্প যেসব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন বৈঠকের পর তা এড়াতে সক্ষম হয়েছে জাপান।

হোয়াইট হাউসে বৈঠকে পরস্পরের প্রশংসা করার পাশাপাশি দুই নেতা চীনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়া নিয়ে উদ্বেগের কারণে উভয় দেশই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

ট্রাম্পের পক্ষ থেকে জাপানের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্যঘাটতি শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য ইশিবাকে চাপ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, বাণিজ্যঘাটতি পূরণ না হলে টোকিওকেও অন্যদের মতো শুল্ক আরোপের মুখে পড়তে হবে। জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মতো ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার চাপে রয়েছেন ইশিবা।

বৈঠকের পর দুই নেতা জোর দিয়ে বলেছেন, তাঁরা উভয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী।

উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় কোনো বিদেশি নেতা হিসেবে সফর করছেন ইশিবা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সপ্তাহে ট্রাম্পের প্রথম অতিথি ছিলেন।

ইশিবা তাঁর এক দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন যান। গত শুক্রবার দুপুরে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন।

পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইশিবা বলেন, ‘টেলিভিশনে ট্রাম্পকে দেখে অত্যন্ত ভীতিকর ও কঠিন ব্যক্তিদের মানুষ মনে হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের পর দেখেছি, তিনি খুবই আন্তরিক ও শক্তিশালী একজন ব্যক্তি।’

ট্রাম্পের পক্ষ থেকেও ইশিবার প্রশংসা করা হয়। তাঁকে সুদর্শন বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র যদি জাপানের ওপর শুল্ক আরোপ করে তবে এর পাল্টা ব্যবস্থা ইশিবা নেবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাত্ত্বিক প্রশ্নের’ উত্তর দেন না তিনি। ট্রাম্প এ কথায় হেসে বলেন, খুব ভালো উত্তর।

ট্রাম্প এ সময় বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত কারখানা ইউএস স্টিলে বিনিয়োগ করবে জাপানের নিপ্পন স্টিল। তবে প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণ করবে না। ট্রাম্প বলেন, তাঁরা ক্রেতার পরিবর্তে বিনিয়োগকারী খুঁজছেন। এর আগে বাইডেন প্রশাসন এ চুক্তিতে বাধা দিয়েছিল।

দুই নেতা নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের কয়েক দশক ধরে চলা সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতির কথা বলেন।

ট্রাম্প বলেছেন, তাঁরা চীনা অর্থনৈতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সম্মত হয়েছেন। এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে উসকানিমূলক কার্যকলাপের জন্য বেইজিংয়ের নিন্দা করেছেন।

উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণেরও আহ্বান জানিয়েছে তাঁরা। তবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান। ইশিবা বলেন, তাঁর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী এবং সেখানে তাঁদের ব্যয় বাড়াবে। জাপানের পক্ষ থেকে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার বিষয়টিও রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ