ঘরেই আর্ট অব প্লেটিং: সাধারণ খাবারকেও দিন রেস্টুরেন্টের লুক
Published: 8th, February 2025 GMT
খাবারের স্বাদের পাশাপাশি এর পরিবেশনও সমান গুরুত্বপূর্ণ। দৃষ্টিনন্দন পরিবেশন খাবারের স্বাদকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে গেলেই দেখবেন, খাবারের চেয়ে বেশি মন কাড়ে এর অসাধারণ প্লেটিং। অনেকেই মনে করেন এগুলো শুধু রেস্টুরেন্টেই সম্ভব, মোটেও তা নয়। আজকাল ঘরে বসেই সহজ কিছু টিপস ও টেকনিক অনুসরণ করে যে কেউ করতে পারেন দৃষ্টিনন্দন প্লেটিং।
রঙের সমন্বয়, লেয়ারের বিন্যাস আর বাহারি প্লেট, এ সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া পরিবেশেই সাধারণ খাবারকেও দিতে পারেন রেস্টুরেন্টের মতো লুক। চলুন জানা যাক, কীভাবে সহজ কিছু টিপস ব্যবহার করে বাড়িতেই করা যায় খাবারের নান্দনিক পরিবেশন।
১.
রঙের খেলা
খাবার প্লেটিংয়ে রঙের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জানতে হবে কোন রঙের প্লেটে কোন রঙের খাবার পরিবেশন করলে তা দেখতে আরও আকর্ষণীয় লাগবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন বহুল পরিচিত কিছু থিম। উদাহরণস্বরূপ ব্যবহার করতে পারেন ‘মনোক্রোমাটিক থিম’। এই থিমে শুধু একটি রঙের বিভিন্ন শেড ব্যবহার করে করতে পারেন অসাধারণ প্লেটিং। যেমন সবুজের ভিন্ন ভিন্ন শেড ব্যবহার করে সালাদ পরিবেশন করতে পারেন এই থিমে। এ ছাড়া তৈরি করতে পারেন ‘কালার কনট্রাস্ট’। এ ক্ষেত্রে করতে হবে গাঢ় ও হালকা রঙের সমন্বয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ফল ও সবজির নিজেরই রয়েছে অসাধারণ রং। প্লেটিংয়ে এগুলো কাজে লাগাতে একেবারেই ভুলবেন না। এগুলো প্লেটিংয়ে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে, যেমন বেরি, ড্রাগন ফ্রুট, পেঁপে ইত্যাদি।
২. লেয়ারিংয়ে জাদু
খাবারকে একেবারে সাদামাটাভাবে পরিবেশন না করে লেয়ার তৈরি করলে তা দেখতে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। শেফরা প্রায়ই খাবার পরিবেশনের সময় লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে একটি ‘থ্রিডি’ ইফেক্ট তৈরি করেন। এ জন্য প্রথমেই একটি বেজ তৈরি করতে হবে। বেজ হিসেবে ম্যাশ করা আলু কিংবা রাইসের মতো আইটেমগুলো রাখতে পারেন। এরপরে আনুষঙ্গিক পদগুলো দিয়ে আরেকটি লেয়ার তৈরি করুন। গার্নিশের মাধ্যমেও লেয়ারিং করতে পারেন। পুদিনাপাতা, লেমন স্লাইস কিংবা সামান্য কিছু মাইক্রোগ্রিনস দিয়ে ওপরে একটি হালকা লেয়ার তৈরি করে নিতে পারেন।
৩. আকর্ষণীয় টেবিলওয়্যার
প্লেটিংয়ের জন্য সঠিক টেবিলওয়্যার নির্বাচন খুবই জরুরি। দেশীয় ব্র্যান্ড আকিজ টেবিলওয়্যারের নান্দনিক প্লেটগুলো কিন্তু খাবারের সৌন্দর্য অনেকখানিই বাড়িয়ে দেয়। এখানে পাবেন নিজের পছন্দ ও রুচির সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন রকমের প্লেট ও বোল। অনেক ধরনের প্লেট একবারে কেনা সম্ভব না হলে এমন কিছু রং নিজের সংরক্ষণে রাখুন, যেগুলো সব সময় নানাভাবে কাজে লাগাতে পারেন। এমনই একটি রং হলো সাদা। সাদা রঙের প্লেট যেকোনো খাবারকে একটি আকর্ষণীয় লুক দেয়। এ ছাড়া প্লেটের আকারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ছোট প্লেটে অতিরিক্ত খাবার পরিবেশন না করাই ভালো। সেই সঙ্গে কোন বোলে কোন খাবার পরিবেশন করবেন, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন স্যুপ বা পাস্তা পরিবেশনের জন্য গভীরতাবিশিষ্ট বোল ব্যবহার করুন। আকিজ টেবিলওয়্যারে পাবেন বিভিন্ন ধরনের বোল। যেমন পিনাট শেপড বোল, এমনকি পাস্তার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট ধাঁচের প্লেট। সেই সঙ্গে যাঁরা মাটির তৈজস পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য রয়েছে পোড়ামাটির ধাঁচের সিরামিকসের বাসন। ট্র্যাডিশনাল প্লেটিং করতে চাইলে এগুলো নিঃসন্দেহে ব্যবহার করতে পারেন।
৪. গার্নিশিংয়ের নান্দনিকতা
গার্নিশিং মানেই শুধু খাবারের ওপর পুদিনাপাতা ছড়িয়ে দেওয়া নয়। এটি হলো রঙের টুইস্ট ও স্বাদের ভারসাম্য তৈরি করা। এতে পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, পার্সলে, রোজমেরিসহ বিভিন্ন তাজা হার্বস ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া খাবারের ঘ্রাণ ও সতেজতা বাড়াতে লেবুর পাতলা স্লাইস যোগ করতে পারেন। বিভিন্ন এডিবল ফ্লাওয়ার দিয়েও গার্নিশ করতে পারেন। তবে যেসব ফুল খাওয়া যায় না, গার্নিশিংয়ে এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো।
প্লেটিংয়ের জন্য সঠিক টেবিলওয়্যার নির্বাচন খুবই জরুরিউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র করত ট ব লওয র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সবজির দাম বাড়তি, বাজারে সংকট সয়াবিনের
ঈদের আগে নিত্যপণ্যের দাম অনেকটা কম ছিল। ঈদের পর থেকে বাজারের প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কমবেশি বেড়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে, যা আগের তুলনায় প্রায় ২০ টাকা বেশি। আগে ছিল ৪০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। তবে চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়াও বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। আগের চেয়ে নির্ধারিত দাম না বাড়লেও অনেক দোকানে সয়াবিন তেল নেই। যে কারণে অনেকে বোতলের গায়ের দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন দোকানিরা। আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। শীতের অধিকাংশ সবজি শেষ হয়ে গেছে আর গ্রীষ্মের অনেক সবজি এখনো বাজারে কম। এ কারণে দাম বেড়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেটে গিয়েও সবজির বাজার বেশি দেখতে পাওয়া যায়। বেসরকারি চাকরি করা মো. বুলবুল সমকালকে জানান, ১০০ টাকা দরে আধা কেজি বরবটি ও করলা কিনেছেন তিনি। বলেন, ঈদের আগে সব সবজি ৬০ টাকার আশপাশে ছিল। ঈদের পরে দাম প্রায় ২০ টাকার মতো বেড়ে গেছে।
এছাড়া খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া আলু, আদা, রসুন, চাল ও আলুর দাম আগের মতোই রয়েছে।
এদিকে বাজারে আবারও সয়াবিন তেলের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক দোকানেই তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে। অর্থাৎ কোনো দোকানে ৫ লিটারের বোতলজাত তেল থাকলেও এক-দুই লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোনো কোনো দোকানে প্রতি লিটারে নির্ধারিত দাম ১৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা রাজীব আহসান বলেন, কোম্পানি তেল দেয় না। ঈদের পর থেকে অর্ডার নিচ্ছে না। যে কারণে ৫ টাকা বেশি দিয়ে বাইরে থেকে কিনে আনি।
আরেক বিক্রেতা বলেন, আজ ঈদের পর প্রথম একটা কোম্পানি তেল দিয়ে গেছে। দুই লিটারের মাত্র তিন কাটন তেল। আর বলেছে, দাম বাড়ানোর আগে মাল দেবে না। নতুন রেট এলে তেল পাবেন।
প্রসঙ্গত, সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে একলাফে ১৮ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার মালিকরা। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দুই দফা বৈঠকের পরও দাম বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস ২৭ মার্চ ট্যারিফ কমিশনে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে ১ এপ্রিল থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৩ টাকা হবে বলে জানায় পরিশোধন কারখানার মালিকদের ওই সংগঠন। সেই হিসাবে লিটারে দাম বাড়ছে ১৮ টাকা। তবে দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের অনুমতি এখনো মেলেনি। যে কারণে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে।