খাবারের স্বাদের পাশাপাশি এর পরিবেশনও সমান গুরুত্বপূর্ণ। দৃষ্টিনন্দন পরিবেশন খাবারের স্বাদকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে গেলেই দেখবেন, খাবারের চেয়ে বেশি মন কাড়ে এর অসাধারণ প্লেটিং। অনেকেই মনে করেন এগুলো শুধু রেস্টুরেন্টেই সম্ভব, মোটেও তা নয়। আজকাল ঘরে বসেই সহজ কিছু টিপস ও টেকনিক অনুসরণ করে যে কেউ করতে পারেন দৃষ্টিনন্দন প্লেটিং।

রঙের সমন্বয়, লেয়ারের বিন্যাস আর বাহারি প্লেট, এ সবকিছু মিলিয়ে ঘরোয়া পরিবেশেই সাধারণ খাবারকেও দিতে পারেন রেস্টুরেন্টের মতো লুক। চলুন জানা যাক, কীভাবে সহজ কিছু টিপস ব্যবহার করে বাড়িতেই করা যায় খাবারের নান্দনিক পরিবেশন।

১.

রঙের খেলা

খাবার প্লেটিংয়ে রঙের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জানতে হবে কোন রঙের প্লেটে কোন রঙের খাবার পরিবেশন করলে তা দেখতে আরও আকর্ষণীয় লাগবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন বহুল পরিচিত কিছু থিম। উদাহরণস্বরূপ ব্যবহার করতে পারেন ‘মনোক্রোমাটিক থিম’। এই থিমে শুধু একটি রঙের বিভিন্ন শেড ব্যবহার করে করতে পারেন অসাধারণ প্লেটিং। যেমন সবুজের ভিন্ন ভিন্ন শেড ব্যবহার করে সালাদ পরিবেশন করতে পারেন এই থিমে। এ ছাড়া তৈরি করতে পারেন ‘কালার কনট্রাস্ট’। এ ক্ষেত্রে করতে হবে গাঢ় ও হালকা রঙের সমন্বয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ফল ও সবজির নিজেরই রয়েছে অসাধারণ রং। প্লেটিংয়ে এগুলো কাজে লাগাতে একেবারেই ভুলবেন না। এগুলো প্লেটিংয়ে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে, যেমন বেরি, ড্রাগন ফ্রুট, পেঁপে ইত্যাদি।

২. লেয়ারিংয়ে জাদু

খাবারকে একেবারে সাদামাটাভাবে পরিবেশন না করে লেয়ার তৈরি করলে তা দেখতে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। শেফরা প্রায়ই খাবার পরিবেশনের সময় লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে একটি ‘থ্রিডি’ ইফেক্ট তৈরি করেন। এ জন্য প্রথমেই একটি বেজ তৈরি করতে হবে। বেজ হিসেবে ম্যাশ করা আলু কিংবা রাইসের মতো আইটেমগুলো রাখতে পারেন। এরপরে আনুষঙ্গিক পদগুলো দিয়ে আরেকটি লেয়ার তৈরি করুন। গার্নিশের মাধ্যমেও লেয়ারিং করতে পারেন। পুদিনাপাতা, লেমন স্লাইস কিংবা সামান্য কিছু মাইক্রোগ্রিনস দিয়ে ওপরে একটি হালকা লেয়ার তৈরি করে নিতে পারেন।

৩. আকর্ষণীয় টেবিলওয়্যার

প্লেটিংয়ের জন্য সঠিক টেবিলওয়্যার নির্বাচন খুবই জরুরি। দেশীয় ব্র্যান্ড আকিজ টেবিলওয়্যারের নান্দনিক প্লেটগুলো কিন্তু খাবারের সৌন্দর্য অনেকখানিই বাড়িয়ে দেয়। এখানে পাবেন নিজের পছন্দ ও রুচির সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন রকমের প্লেট ও বোল। অনেক ধরনের প্লেট একবারে কেনা সম্ভব না হলে এমন কিছু রং নিজের সংরক্ষণে রাখুন, যেগুলো সব সময় নানাভাবে কাজে লাগাতে পারেন। এমনই একটি রং হলো সাদা। সাদা রঙের প্লেট যেকোনো খাবারকে একটি আকর্ষণীয় লুক দেয়। এ ছাড়া প্লেটের আকারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ছোট প্লেটে অতিরিক্ত খাবার পরিবেশন না করাই ভালো। সেই সঙ্গে কোন বোলে কোন খাবার পরিবেশন করবেন, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন স্যুপ বা পাস্তা পরিবেশনের জন্য গভীরতাবিশিষ্ট বোল ব্যবহার করুন। আকিজ টেবিলওয়্যারে পাবেন বিভিন্ন ধরনের বোল। যেমন পিনাট শেপড বোল, এমনকি পাস্তার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট ধাঁচের প্লেট। সেই সঙ্গে যাঁরা মাটির তৈজস পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য রয়েছে পোড়ামাটির ধাঁচের সিরামিকসের বাসন। ট্র্যাডিশনাল প্লেটিং করতে চাইলে এগুলো নিঃসন্দেহে ব্যবহার করতে পারেন।

৪. গার্নিশিংয়ের নান্দনিকতা

গার্নিশিং মানেই শুধু খাবারের ওপর পুদিনাপাতা ছড়িয়ে দেওয়া নয়। এটি হলো রঙের টুইস্ট ও স্বাদের ভারসাম্য তৈরি করা। এতে পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, পার্সলে, রোজমেরিসহ বিভিন্ন তাজা হার্বস ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া খাবারের ঘ্রাণ ও সতেজতা বাড়াতে লেবুর পাতলা স্লাইস যোগ করতে পারেন। বিভিন্ন এডিবল ফ্লাওয়ার দিয়েও গার্নিশ করতে পারেন। তবে যেসব ফুল খাওয়া যায় না, গার্নিশিংয়ে এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো।

প্লেটিংয়ের জন্য সঠিক টেবিলওয়্যার নির্বাচন খুবই জরুরি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র করত ট ব লওয র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে ছড়া ও কবিতার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

প্রয়াত শিশুসংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী পারভীন আক্তার খান মেরীর লেখা দুটি বই প্রকাশ করেছে খেলাঘর ফরিদপুর আসর।

শনিবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘জীবনের বাঁকে বাঁকে’ ও ‘ব্যাঙের মেয়ের বিয়ে’ নামের বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

বই দুটির প্রকাশনা উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন অধ্যাপক এম এ সামাদ, অধ্যাপক ম. হালিম, শিক্ষাবিদ রবীন্দ্রনাথ রায় কর্মকার, অধ্যাপক রেজভী জামান, অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী রতন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার সাইফুল হাসান মিলন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইরা আহম্মেদ ও ফরিদপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম। খেলাঘরের পক্ষে ছিলেন আলতাফ হোসেন ও ববি হক।

লেখক পারভীন আক্তার খান মেরীর লেখা ছাড়াও অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন স্থানীয় শিল্পী ও খেলাঘরের সদস্যরা।

সভায় বক্তারা বলেন, লেখিকা তার জীবদ্দশায় বই দুটি প্রকাশ করে যেতে না পারলেও বইগুলো পাঠকের হাতে পৌঁছে দিয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। তার লেখা ছড়া ও কবিতার বইয়ের পাশাপাশি আমাদের এই ভাষার মাসে সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার সমৃদ্ধ গ্রন্থ পাঠ করার দিকে মনোযোগী হতে হবে। একজন লেখকের জীবনদর্শন ও উপলব্ধি ফুটে ওঠে তার সৃষ্টি লেখনীতে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে তাদের সমৃদ্ধ মনন ও উন্নত বোধ তৈরিতে বেশি করে বই পড়ার দিকে ঝুঁকতে হবে। এ প্রজন্মকে বইমুখী করার দায়িত্ব শিক্ষক ও অভিভাবকদের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ