কলেজের অনুষ্ঠানে হামলা, চেয়ার-বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর
Published: 8th, February 2025 GMT
রাজশাহীর গোদাগাড়ী মহিলা ডিগ্রি কলেজের বর্ষপূর্তির আয়োজনে নামাজের সময় গানবাজনা করার অভিযোগে হামলা চালানো হয়েছে। ১৫-২০ জন শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে হামলা চালায়। এ সময় ৬০-৭০টি চেয়ার ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করা হয়।
এছাড়া কলেজের ছাত্রীদের পিঠা মেলার স্টলেও হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। লুট করা হয়েছে পিঠাও। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তসলিম উদ্দিন বলছেন, যখন হামলা চালানো হয়, তখন নামাজ চলছিল না। হামলার আগে জোহর ও আসরের সময় নামাজের জন্য দুই দফা অনুষ্ঠানের বিরতি দেওয়া হয়।
কারা হামলা চালিয়েছেন, এ প্রশ্নে ‘আমি কাউকে চিনি না’ জবাব দেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি জানান, শনিবার তাদের কলেজের ৩০ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ছিল। সকাল থেকে অনুষ্ঠান চলছিল। মহিলা কলেজ বলে অনুষ্ঠানে শিক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের বাইরে কোনো পুরুষ ছিল না। প্রথম অধিবেশনের পরই আমন্ত্রিত অতিথিরা চলে যান। এরপর পিঠা মেলা চলছিল। রাজশাহী শহর থেকে কয়েকজন নারী কণ্ঠশিল্পী আনা হয়েছিল। তারা মঞ্চে গান পরিবেশন করছিলেন। কিছুক্ষণ আগে আসরের নামাজের বিরতির পর ৪টা ২১ মিনিটে মঞ্চে শেষ গানটি চলছিল।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে শরীরে পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাতিজার বাড়ি ও রিসোর্টে অগ্নিসংযোগ
তিনি আরো জানান, তখনই ১৫-২০ জন ব্যক্তি রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অনুষ্ঠানে হামলা চালান। তারা কারো সঙ্গে কথা না বলেই ভাঙচুর শুরু করে। প্রায় ৬০-৭০টি চেয়ার, বাদ্যযন্ত্র ও সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করা হয়। প্রায় ২০ মিনিট এভাবে ভাঙচুরের পর হামলাকারীরা কলেজ থেকে চলে যায়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘হামলার সময় মেয়েরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। তারা নিজেদের ভ্যানেটি ব্যাগ, জুতা-স্যান্ডেল ফেলে দিগ্বিদিক দৌড়াতে শুরু করে। এ সময় পড়ে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘হামলার সময় অভিযোগ তোলা হয় যে নামাজের সময় নাকি গানবাজনা চলছিল। আসলে নামাজের সময় গানবাজনা হয়নি। জোহর ও আসরের সময় নামাজের জন্য অনুষ্ঠানে বিরতি দেওয়া হয়।’’
হামলা ও ভাঙচুরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি জানান, ঘটনা থানায় জানানো হয়েছে। এরপর থানা থেকে একজন উপপরিদর্শক (এসআই) এসে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখছেন। অভিযোগ করবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ করতে পারে। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র র সময় চলছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, অভিযুক্ত তরুণ আটক
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য নিজের স্মার্টফোনে ধারণ করেন এক তরুণ। পরে মো. আরমান মিয়া (২৭) নামের ওই তরুণকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় জনতা।
অভিযুক্ত আরমান মিয়া ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের মো. শামসুল হকের ছেলে। আর নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর (৮) বাড়ি উপজেলার বরমী ইউনিয়নে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের শালবনের ভেতর থেকে আরমান মিয়াসহ ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে ওই তরুণকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা। ওই তরুণ ইয়াবা সেবন করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
কয়েক বছর ধরে ঘটনাস্থলের পাশে মাঝেরটেক এলাকায় বন বিভাগের জমিতে কুঁড়েঘর বানিয়ে বসবাস করছেন আরমান। সেখানে থেকে বিভিন্ন জায়গায় দৈনিক মজুরিভিত্তিক কাজ করেন তিনি।
নির্যাতনের শিকার শিশুর বাবা বলেন, দুপুর থেকেই তাঁর মেয়েকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে সন্ধ্যায় বনের ভেতর চিৎকারের শব্দ শুনে সেদিকে এগিয়ে যান স্থানীয় পথচারীরা। পরে বনের ভেতর নির্জন স্থানে হাতেনাতে আটক করা হয় আরমানকে। আটকের পর শিশুটি জানায়, তাকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেছে আরমান। পরে আরমানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ধারণ করে তাঁর তিন বন্ধুর মুঠোফোনে পাঠিয়েছেন। এরপর তাঁকে গণধোলাই দেওয়া হয়। পরে পুলিশে খবর দিয়ে আরমানকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামীম আখতার বলেন, আরমানকে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।