বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ভারতের বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা ভারত থেকে উসকানি দিচ্ছেন। উনি দেশে আসবেন বলছেন। এখানকার আওয়ামী লীগের দোসরেরা বলছে, আপা আসেন। কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে আসবেন বলছেন।’ আজ শনিবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের মুক্তারপাড়া মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মিসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের মাস্টারমাইন্ড হাসিনার বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা আছে। তার বিরুদ্ধে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট রয়েছে। এই খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের জন্য ভারত দায়ী নয়, এ কথা অসত্য। আমরা এই কথার নিন্দা জানাই। আমরা বলছি, ভারত তুমিই দায়ী। কেন তুমি খুনের মাস্টারমাইন্ড মানবতাবিরোধী অপরাধী হাসিনাকে আশ্রয় দিলে? হাসিনা এসব উসকানিমূলক বক্তব্যে আমাদের দেশের অখণ্ডতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘১৭ বছর ধরে দেশে আইনের কোনো শাসন ছিল না। এখনো আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রয়েছে—কিছু ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি ও এসআইয়ের মুখের কথা শুনলেই বোঝা যায়। অনেকেই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছেন; কিন্তু আমরা চাই, আগে সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দেওয়া হোক। সংস্কার করতে যত সময় লাগে, জামায়াতে ইসলামী সেই যৌক্তিক সময় দিতে প্রস্তুত। এ ছাড়া গণহত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তারপর নির্বাচন হোক। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা হোক।’

শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের মানুষের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, সেই নির্যাতনের ক্ষোভের কারণেই দেশে এখনো বিভিন্ন জায়গায় হামলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিনে ৩৫টি জেলার মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসবের দায় শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে।’

দলীয় নেতা-কর্মী ও ছাত্র-জনতাকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শান্ত থাকার আহ্বান জানান মিয়া গোলাম পরওয়ার। কর্মী সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জামায়েতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি মতিউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চল পরিচালক ছামিউল হক ফারুকী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নেত্রকোনার সাবেক আমির এনামুল হক।

এর আগে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে যোগ দেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র আওয় ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতিমুক্ত বিনিয়োগ পরিবেশ গড়ার অঙ্গীকার: জামায়াত

দুর্নীতি, বৈষম্যমুক্ত এবং বিনিয়োগবান্ধব দেশ গড়তে চায় জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫-এ অংশ নিয়ে দলটি এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সম্মেলনের আয়োজন করে। পরে জামায়াতের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার কথা বলেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন যাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আনতে পারলে এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে, সবার ত্যাগ এবং স্বপ্ন স্বার্থক হবে। 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সুশাসন, সততা, নিষ্ঠা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অর্থনীতি ও ব্যবসায়িক নীতি প্রণয়ন করে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। প্রকৃতি, নদী ও বন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এ সময় বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, এগুলোর আধুনিকায়ন করা হলে এবং সময়ক্ষেপণ না হলে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো উন্নয়ন, টেক্সটাইল, কৃষি, কেমিক্যাল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। চায়না চেম্বার অব কমার্সের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জামায়াতে ইসলামীর স্টল পরিদর্শন করেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের নকশিকাঁথাসহ অন্যান্য সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। বৈঠকে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশসহ বিভিন্ন সমস্যা ও এর সমাধান নিয়ে খোলামেলা আলোচনা ও মতবিনিময় হয়। এদিন চীন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা জামায়াত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করেন। তারা বিভিন্ন উদ্বেগের কথা জানান।

মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন– বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিজনেস বিভাগের সহসভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম রাজু, সেক্রেটারি ড. আনোয়ারুল আজিম ও সদস্য মাসুদ কবির।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্নীতিমুক্ত বিনিয়োগ পরিবেশ গড়ার অঙ্গীকার: জামায়াত