শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচারসহ দুই দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ছাত্রদলের মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করেন। পরে তারা এসব দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড.

নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ছাত্রদলের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে তা বাস্তবায়নে চলতি মাস সময় নিয়েছেন।

তাদের দাবিগুলো হলো- ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক সংগঠিত সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে সাজা নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রকল্প পরিচালক ও ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে। তাদের বিষয়ে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে এখনো বিভিন্ন জায়গায় পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা এখনো কমেন্টে জয় বাংলা বলে বেড়ায়। কিন্তু তাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছুই করছে না। আমরা সেসব দোসরদের বিচার নিশ্চিতের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা চাই প্রশাসন তাদের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ছাত্রদলের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বলেন, “ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে যারা আছে, তাদের ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িতরা এখনো যারা ক্যাম্পাসে আছে তাদের একটা তালিকা প্রদান করো। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।  তবে এ বিষয়ে জাতীয়ভাবে বিচারের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা এ দাবি বাস্তবায়নে চলতি মাস সময় নিচ্ছি।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র উপ চ র য ব যবস থ রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

নোবিপ্রবিতে ২ শিক্ষার্থীর অভিযোগে শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিস

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আইন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর করা আট অভিযোগে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাদশা মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন, আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিপা আক্তার।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পাঠানো এক নোটিস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নোবিপ্রবির আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ ও নিপা আক্তার বিশ্ববিদ্যাালয় প্রশাসন বরাবর বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব কমিটি আনা অভিযোগগুলোর সত্যতা খুঁজে পায়।

অভিযোগগুলো সরকারী কর্মচারী বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ২(খ) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১ এর ধারা ৪৭ (৮) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এজন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী চাকরি থেকে অপসারণ/বরখাস্ত করা হবে না, তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার  বরাবর প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করা হলো। একইসঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থনে যদি কোন বক্তব্য থাকে, তাও নোটিসের জবাবে লিখিত আকারে উপস্থাপনের বিষয়ে বলা হলো। 

নোটিশে অভিযোগের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক বাদশা মিয়ার কাছে ২০২০ সালে ১৯ অক্টোবর ফয়েজ আহমেদের বড়ভাই রাজু আহমেদ কারণ দর্শানো নোটিসের জবাব এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন অগ্রায়ণের জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু তিনি তা অগ্রায়ণ না করে দায়িত্ব অবহেলা করেছিলেন। এছাড়াও বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদকে শিবির আখ্যায়িত করে নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক বাদশা মিয়ার কাছে ফয়েজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যগণ ১১ বার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে একাধিকবার আসলেও তাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করে অসদাচরণ করেন। অভিযুক্ত বাদশা মিয়া ফয়েজ আহমেদের আবেদন অগ্রায়ণ না করায় তার শিক্ষা জীবনের মূল্যবান চারটি বছর নষ্ট করার ক্ষেত্রে সরাসরি জড়িত থেকে অসদাচরণ করেছেন।

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, বাদশা মিয়ার কাছে ফয়েজ আহমেদের পরিবারের সদস্যরা ও ফয়েজ আহমেদ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদনপত্র অগ্রায়ণের জন্য গেলে তিনি তাদেরকে মানসিকভাবে হেনস্থা করে দায়িত্ব অবহেলা এবং অসদাচরণ করেছেন। ফয়েজ আহমেদের একটি আবেদনপত্র অগ্রায়ণ করতে ২ বছর সময় নিয়ে দায়িত্বে অবহেলা এবং অসদাচারণ করেছেন।

বিভাগের শিক্ষার্থী নিপা আক্তারকে নিকাব পরিধান করে ধর্মীয় বিধান পালনের ক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার করে নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থী নিপা আক্তারকে ব্যক্তিগতভাবে চেনার পরেও অযথাভাবে শ্রেণিকক্ষে বারবার পরিচয় জানতে চেয়ে অসদাচরণ করেছেন।

এর আগে, অভিযুক্ত শিক্ষক বাদশা মিয়াকে রিজেন্ট বোর্ডের ৬৪তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদের শিক্ষাজীবন নষ্ট করার অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশক্রমে ২ বছরের জন্য একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ