চব্বিশের গণহত্যার বিচার আগে করতে হবে, তারপর অন্য কাজ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতিশোধের নীতিতে বিশ্বাস করি না। তবে অপরাধের বিচার চাই। প্রতিটি হত্যার বিচার হতে হবে, বিশেষ করে ২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই করতে হবে। আগে ন্যায়বিচার, তারপর অন্য কিছু। তা না হলে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে।’’

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন:

হবিগঞ্জের চারটি আসনে জামায়াত প্রার্থীর নাম ঘোষণা

আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ম‌ধ্যে কল্যাণ নেই: জামায়াত আমির

বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বিভেদ তৈরি করে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা সবাই গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারো ওপর জোর খাটানোর অধিকার দেয় না। তেমনি অন্য ধর্মও ইসলাম বা কোনো ধর্মের ওপর জোর খাটাতে পারে না।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময় ধর্মীয় বিভেদের মাধ্যমে সম্পদ দখল, জায়গা-জমি গ্রাস, এমনকি নারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িও। অথচ এইসব কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াতকে দোষারোপ করা হয়েছে।’’

ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় জামায়াতের কর্মীরা অন্যায় করেছে, তার সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ দিন। আমরা ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দেব। আমরা বিশ্বাস করি, এসব অপকর্মের সঙ্গে আমাদের কোনো সহকর্মী জড়িত নয়।’’

চব্বিশের আন্দোলনকারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘‘সাড়ে ১৫ বছর আমরা আন্দোলন করেছি, কিন্তু স্বৈরাচারকে পরাজিত করতে পারিনি। ধারাবাহিক সংগ্রামের ফলে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে।’’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থা স্বাধীন হলে দেশের মানুষ আরো ভালো অবস্থায় থাকত। এখনো আমরা সত্যিকারের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা পাইনি। যারা বেআইনি কাজ করেছে, প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছে, তাদেরই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বানানো হয়েছে। এদের কাছ থেকে সঠিক বিচার আশা করা যায় না।’’

জামায়েতর শীর্ষ এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের ১১ জন শীর্ষ নেতা বিচারিক হত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।"

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারির সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মুহাম্মদ শাহজাহান এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী।

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন র আম র

এছাড়াও পড়ুন:

শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ–সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ

রাজধানীর শাহবাগে ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের বিচার এবং মঞ্চটির সংগঠক লাকী আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপর হামলার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) ৮ নম্বর গেটের সামনে একদল শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভ করেন। এতে এনএসইউর পাশাপাশি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কিছু শিক্ষার্থীও অংশ নেন। আয়োজকদের কোনো ব্যানার ছিল না। তাঁরা নিজেদের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন।

বিক্ষোভকারীরা প্রথমে এনএসইউর ৮ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হন। সেখানে কয়েকজন বক্তৃতা করেন। বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে স্লোগান চলে। তাঁরা ‘শাহবাগীরা বাংলা ছাড়’, ‘শাহবাগ না বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। এরপর এনএসইউ গেট থেকে একটি মিছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দু-একটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে এসে শেষ হয়।

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন ওমর সাম্য বলেন, ‘২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিভাজন শুরু হয় এই শাহবাগ থেকে, শাপলা চত্বরে গণহত্যার মাধ্যমে। এখন তারা আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্র বানাতে চক্রান্ত করছে। তারা আবারও ফিরে আসুক আমরা তা চাই না। আমরা তাদের বিচার চাই।’

এদিকে একই ধরনের দাবিতে বুধবার বিকেল শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে একটি মানববন্ধন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। সেখানে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেন, লাকী আক্তার ও গণজাগরণ মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে মবতন্ত্রের সূচনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দিয়েছিলেন তাঁরা।

ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সদস্যসচিব ফাতিমা আক্তার বলেন, সরকার ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করেছে। তারপরও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করা অযৌক্তিক।

আরও পড়ুনপুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা৫ ঘণ্টা আগে

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চ থেকে সরকারের উদ্দেশে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা চত্বর ও পিলখানা গণহত্যার স্বাধীন বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে হরে-দরে সবাইকে ‘শাহবাগী’ বলা বন্ধ করতে হবে: মাহফুজ আলম
  • শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ–সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ
  • শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের সঙ্গে থাকবে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ
  • ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে গ্রেপ্তার
  • বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে