কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ময়লা ফেলতে গিয়ে বাড়ির সামনে থেকে মো. মোফাজ্জেল নামের একজন কেয়ারটেকার অপহৃত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। 

মোফাজ্জেল (৫৪) পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকার গিয়াস শেখের দুই তলাবিশিষ্ট পাকা বাড়ির কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) ও ভাড়াটিয়া। তিনি উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রাম এলাকার মনির উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁর স্ত্রী রমেছা খাতুন (৪৫)।

দুপুরে দুর্গাপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে। তাদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন স্বজনরা। তাদের ভাষ্য, ৫ থেকে ৬ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি একটি মাইক্রোবাসে করে এসে মোফাজ্জেলকে তুলে নিয়ে গেছেন।

ঘটনা সম্পর্কে মোফাজ্জেলের নাতি নুর ইসলাম জানায়, তাদের নানা সকালে সড়কের ধারে ময়লা ফেলছিলেন। এ সময় একটি হাইস গাড়িতে এসে তাঁকে তুলে নিয়ে গেছেন ৫/৬ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। এ সময় সে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে তার নানাকে নিয়ে দ্রুত কুমারখালীর শহরের দিকে চলে যায় গাড়িটি।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোফাজ্জেল প্রায় ১৫ বছর ঢাকায় ইজিবাইক চালাতেন। ৯ মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। এরপর থেকে স্ত্রী ও তিন সন্তান জায়িন, নাইম ও ইয়াকুবকে নিয়ে দুর্গাপুর এলাকার গিয়াস শেখের বাড়ির দোতলায় ভাড়া থাকছেন। বাড়ির মালিক গিয়াস ঢাকায় থাকেন। সেই কারণে মোফাজ্জেল বাড়িটির দেখভালও করেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রমেছা খাতুন বলেন, ‘আমি কিছুই জানিনে। বাসার ভিতরে ছিলাম। নাতি কলো (বলল) নানাকে ৫/৬ জন তুলে নিয়ে গেছে। তাঁর (স্বামীর) কোনো শত্রু নেই, মামলাও নেই। কারা নিয়ে গেল কিছুই জানিনে। আপনারা আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেন।’

লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুমারখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, গাড়ির নাম্বার পাওয়া গেছে। মোফাজ্জেলকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র গ প র এল ক এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে ঢোকার অনুমতি পায়নি চার ট্রাক তৈরি পোশাক, গন্তব্য ছিল স্পেন

ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করায় পেট্রাপোল কাস্টমস তৈরি পোশাকবোঝাই চারটি ট্রাককে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি (কারপাস) দেয়নি। এতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে গতকাল বুধবার ট্রাকগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা দিতে ২০২০ সালের ২৯ জুন আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গত মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করে।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক তিনটি প্রতিষ্ঠান চারটি ট্রাকে পণ্য বোঝাই করে বেনাপোল বন্দরে নিয়ে আসে। ট্রানজিট নিয়ে ওই পণ্য কলকাতার দমদম বিমানবন্দর হয়ে স্পেনে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে ট্রাকগুলো প্রবেশের অনুমতি পায়নি। এতে পণ্যগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে নিয়েছে।

বেনাপোলে এই পণ্যের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট ছিল পদ্মা ট্রেডিং। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক অনিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এর আগেই ট্রাকবোঝাই এসব পণ্য বেনাপোল বন্দরে চলে আসে। পণ্য ঢুকতে না দেওয়ায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি।’ তিনি জানান, এই সুবিধা বাতিলের এক দিন আগেও ২০ ট্রাক তৈরি পোশাক তাঁদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত তৈরি পোশাকের রপ্তানি গ্রীষ্মে বাড়ে। এখন রপ্তানির ভরা মৌসুম। এই মুহূর্তে ভারতের এই সিদ্ধান্তে তাঁরা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, ‘যে রপ্তানিকারকের পণ্য ফিরে গেছে, তাদের কোনো প্রতিনিধি আমাদের কিছু জানাননি। তবে আমরা জেনেছি, ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস থেকে কারপাস দেওয়া হয়নি। যে কারণে পণ্য ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

২০২০ সালের ২৯ জুন এক আদেশে ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল সিবিআইসি। এখন সে সুবিধা প্রত্যাহার করল ভারত।

বিবৃতিতে ভারত দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপে ভারতের সীমান্ত দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়বে না।

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বেনাপোল দিয়ে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হয়, তার বেশির ভাগ যায় ইউরোপের দেশগুলোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে বেশি যায়। এই বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানি কম হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ