শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায় : টিপু
Published: 8th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, আমরা বিগত ১৬ টি বছর রাজপথ আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। গত ৫ই আগস্ট খুনি হাসিনা পতনের পর আমরা মনে করেছি দেশের শান্তিতে বসবাস করবো, আর রাজপথে থাকতে হবে না।
কিন্তু খুনি ফ্যাসিস শেখ হাসিনার নতুন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদেরকে আবারও রাজপথে নামতে হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়।
বাংলাদেশের বিশ কোটি মানুষকে জিম্মি করে আবার শেখ হাসিনা ক্ষমতা দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমি শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করতে চাই আপনার হাত কত রক্ত রঞ্জিত করতে চান। গত ১৬টি বছর আপনার হাতে হাজার হাজার নেতাকর্মীসহ সর্বশেষ পাশে আগস্ট এর আগে সাঈদ-মুগ্ধ - স্বজনসহ কয়েক হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে কিন্তু আপনি ক্ষান্ত হননি।
আমরা মনে করছিলাম ১৬ বছর আপনি যা অপকর্ম ও করেছেন তার জন্য আপনি অনুতপ্ত হবেন কিন্তু তা না করে আপনি নতুন করে আবার দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ শ্রমিকলীগ সহ অঙ্গ সংগঠন দিয়ে আপনি এক মাসের কর্মসূচি দিয়েছেন।
আপনাকে একটি কথা বলতে চাই আমরা যারা শহীদ জিয়ার আদর্শের কর্মীরা রয়েছি আমরা কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা রাজপথে আছি।
বন্দর থানা বিএনপির উদ্যোগে আওয়ামীলীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি একথা গুলো বলেন।
শনিবার ( ৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল এগারোটায় বন্দর ২৩নং ওয়ার্ডের একরামপুর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে বন্দর থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পৌরসভা হয়ে কবিলের মোড় দিয়ে ২৪নং ওয়ার্ডের নবীগঞ্জ রেললাইন হয়ে নবীগঞ্জ বাজার দিয়ে কাইতাখালী হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দেউলী চৌরাপাড়া এসিআই গেইটের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
তিনি বলেন, আমরা যতদিন না পর্যন্ত এদেশের ২০ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারবো ততদিন পর্যন্ত এদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হবে আমরা রাজপথে আছি রাজপথ ছাড়বে ঘরে ফিরে যাবো না। আমরা দেখেছি বিগত সময় আওয়ামী লীগ যুবলীগ, ছাত্রলী, স্বেচ্ছাসেবক শ্রমিকলী কিভাবে এদেশের মানুষের উপর জুলুম নির্যাতন ও হত্যা গুম করেছিল।
আমরা আর আমাদের কোন ভাই-বোনকে হত্যা গুম খুন ও নির্যাতনের শিকার হতে দেবো না। আমরা কোন মায়ের সন্তানকে আর বুক থেকে খালি হতে দেব না কোন বোনকে আর বিধবা হতে দেব না। আমরা চাই এদেশের ২০ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এবং মানুষের বিপদে আপদে তাদের পাশে থাকার জন্য।
টিপু নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা কেউ রাগে অভিমানে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করে কারো বাড়িঘর ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাবেন না। শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা তারা স্বৈরাশাসক ছিল। তাই এ দেশের জনগণ তাদের ছবি ও স্থাপনা ভাঙচুর করে গুড়িয়ে দিয়েছে। সেগুলা সাথে বিএনপি'র কোন সম্পর্ক নাই।
বাংলাদেশের কোথাও শেখ হাসিনা শেখ মুজিবর এর কোন ছবি ও স্থাপনা এদেশের মানুষ দেখতে চায় না কারণ এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের উপর ক্ষোভ কারণ তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের উপর যে জুলুম নির্যাতন করেছে তা মানুষ ভুলে যায়নি। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক শ্রমিকলীগকে নতুন কোন করে কোন অরাজগতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে দিবো না।
প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আপনারা নিজ নিজ এলাকায় পাহারা দিবেন। আর আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের তালিকা করে প্রশাসনের কাছে কিংবা আমাদের কাছে দিবেন। আপনারা তাদেরকে ধরে পুলিশের হাতে দিবেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।
বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহ্ আহম্মদের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেজ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আহমদ আলী, ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক কাজল আহম্মেদ কালুন, ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হোসেন, ২৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. কাজী নজরুল ইসলাম, ২৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিনহাজ মিঠু, হাবিবুর রহমান মাসুদ, সম্রাট হাসান সুজনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ গণতন ত র র ন ত কর ম আম দ র য বল গ আপন র আওয় ম র জপথ
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন নীতিতে হতভম্ব ইউরোপে নতুন যুগ, উদার গণতন্ত্র অবদমনের শঙ্কা
যুগ যুগ ধরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে বিভক্ত করা। তাদের ভাবনা ছিল, এ বিভক্তির কারণে ভেঙে পড়বে পশ্চিমা জোট, যারা ইউরোপের প্রুশিয়া অঞ্চলে সোভিয়েত ইউনিয়নের ট্যাঙ্ক প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছিল। কিন্তু এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন এক উপহার মস্কোর হাতে তুলে দিয়েছেন, যার জন্য তারা ‘শীতল যুদ্ধ’ বা তারও আগে থেকে অপেক্ষা করছিল।
শনিবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ট্রাম্পের সামগ্রিক আচরণে ইউরোপ কার্যত হতভম্ব। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভিত্তি স্বাধীনতা। তারা গণতন্ত্রের পক্ষে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে এলেও এখন মিত্রতে পরিণত হয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের। এতে ইউরোপ নিজেদের উপেক্ষিত ভাবছে। তারা আবারও নিজেদের শক্তি-সক্ষমতা (সামরিক) বাড়ানোয় নজর দিচ্ছে। তারা মার্কিন নীতিতে বিস্মিত ও ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।
ইউরোপের বিভিন্ন নেতার মুখে উঠে আসছে বিষয়টি। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মধ্যপন্থি রিনিউ ইউরোপ গ্রুপের সভাপতি ভ্যালেরি হায়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে সেই স্তম্ভ, যাকে কেন্দ্র করে শান্তির ব্যবস্থাপনা হয়। কিন্তু তারাই এখন অবস্থান পরিবর্তন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘পুতিন যে অপপ্রচার চালান, সেটাই এখন ট্রাম্পের মুখে। আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করেছি।’
ইউরোপের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানা পদক্ষেপ ও আচরণের আবেগি প্রভাব অনেক গভীর। ১৯৪৫ সালে শেষ হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে যে সমৃদ্ধ ও মুক্ত মহাদেশের দীর্ঘ যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার মূলে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ‘পশ্চিম’ বলতে যা বোঝায় তা ক্রমেই পাল্টাচ্ছে। বহু বছর ধরে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নানা উত্তেজনার মধ্যেও একটি বিষয়ে ছিল মতৈক্য, তা হলো– উদার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। বর্তমানে এ প্রশ্নে ইউরোপ, রাশিয়া, চীন আর যুক্তরাষ্ট্র– প্রত্যেকেই আলাদা। ‘পশ্চিম’ এখন কেবল এক ধারণা। কীভাবে শূন্যতা পূরণ হবে, তা পরিষ্কার নয়। তবে সহিংসতার বিষয়টি নিশ্চিত। কারণ, পরাশক্তিগুলো এটা চাচ্ছে।
প্যারিসের পো ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নিকোল বাচারন বলেন, ‘ট্রাম্প যেটা করছেন এর সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে, উদার গণতন্ত্রের অবদমন।’
ইউরোপের পপুলিস্টরা বিপাকে
ট্রাম্পের নানা পদক্ষেপের কারণে ইউরোপের জনপ্রিয় রাজনীতিকরা (পপুলিস্ট) পড়েছেন বিপাকে। শনিবার দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই রাজনীতিকরা ইউক্রেন প্রশ্নে কতটা ট্রাম্পের সঙ্গে থাকবেন, বা কতটা দূরত্বে– তা নির্ণয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ কেউ মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবস্থান থেকে একেবারেই দূরে থাকার কথা ভাবছেন। যেভাবে ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আচরণ করা হয়েছে, তা নিয়ে ইউরোপের নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি রয়েছে। নরডিক দেশসহ পশ্চিম ইউরোপে রাশিয়ার প্রতি বিদ্বেষ রয়েছে ব্যাপক। এর বিপরীতে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোয় রুশ সহমর্মীদের পাওয়া যায়।
এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ন্যাটো জোটকে আক্রমণ করেন। তিনি ইউরোপের মিত্রদের সতর্ক করে বলেন, যদি তারা নিজেদের প্রতিরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যয় না করে, তাহলে ওয়াশিংটন তাদের সুরক্ষা দিতে পারবে না। গত বৃহস্পতিবার তিনি ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা তো কমন সেন্স, তাই না। যদি তারা খরচ না করে, আমি তাদের সুরক্ষা দিতে যাব না। না, আমি সুরক্ষা দেব না।’ ট্রাম্প জানান, ন্যাটো নিয়ে তাঁর এমন দৃষ্টিভঙ্গি অনেক বছরের। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের প্রথম মেয়াদে তাঁর এ দৃষ্টিভঙ্গি ন্যাটো মিত্রদের কাছে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, এ জন্য ৭৫ বছর পুরোনো ট্রান্সআটলান্টিক জোটের অন্য সদস্যরা প্রতিরক্ষায় ব্যয় বাড়িয়েছে, যদিও এখনও তা পর্যাপ্ত নয়। তাদের আরও খরচ করা উচিত।