রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে গোসলে নে‌মে মো. আসিফ মুস্তাহিদ (১৪) নামে এক শিক্ষার্থী নি‌খোঁজ হয়ে‌ছেন। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজবাড়ীর গোদার বাজার এলাকার পদ্মা নদীতে নি‌খোঁজ হয় সে।

‌নি‌খোঁজ আসিফ রাজবাড়ী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ধুঞ্চি গোদার বাজার গ্রামের মো. আবুল পালাম আজাদের ছেলে। সে শহরের ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আসিফের স্বজন ও স্থানীয়‌দের বরা‌তে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো.

নেছার আলী বলেন, “আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গোদার বাজার পদ্মা নদীতে তিন বন্ধুসহ আসিফ গোসল করতে নামেন। নদীর মা‌ঝে একটি চর রয়েছে। তারা সাঁত‌রে চ‌রে যান। সেখান থে‌কে নদীর পা‌ড়ে এ‌সে আসিফের খোঁজ না পে‌য়ে স্বজন‌দের খবর দেন তার বন্ধুরা। দুপুর পৌনে ২টার দিকে ফায়ার সার্ভিস নিখোঁজ কিশোরকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।”

আরো পড়ুন:

রুয়েটে প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ১৬ শিক্ষার্থী

রাজশাহী কলেজে ‘বিন্দু থেকে সিন্ধু’

তিনি আরো বলেন, “ফায়ার সার্ভিসের ৬ সদস্যের ডুবুরি দল আসিফকে উদ্ধারে নদীতে অভিযান চালিয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত নদী‌তে উদ্ধার তৎপরতা চা‌লানো হলেও নি‌খোঁজ আ‌সি‌ফের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজ‌কের মতো উদ্ধার তৎপরতা শেষ হ‌য়ে‌ছে। রবিবার(৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থে‌কে আবারো উদ্ধার কাজ শুরু করবে ফায়ার সার্ভিস।”

ঢাকা/রবিউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ মাসে দেড় শ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে জেলেদের নতুন আতঙ্কের নাম আরাকান আর্মি। গত পাঁচ মাসে মাছ ধরতে যাওয়া দেড় শ জেলেকে অপহরণ করেছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর তৎপরতার কারণে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন টেকনাফের ৪০০ জেলে।

গতকাল সোমবার মধ্যরাত থেকে মাছ ধরায় সরকার ঘোষিত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। তবে তার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই টেকনাফের জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এতে জেলে পরিবারগুলো সীমাহীন অর্থকষ্ট ও ভোগান্তিতে পড়েছে।

বাংলাদেশ–মিয়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে নাফ নদীর জলসীমা পড়েছে ৮৪ কিলোমিটার। কিন্তু তিন মাস ধরে নাফ নদীর জলসীমায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) টহল তৎপরতা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে নাফ নদী থেকে জেলেদের ট্রলারসহ অপহরণের ঘটনাও বেড়েছে। জেলেরা এসব ঘটনার জন্য আরাকান আর্মিকে দায়ী করেছেন।

সর্বশেষ ৮ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমার মৌলভীরশীল নামের এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে চারটি ফিশিং বোটসহ ২৩ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এ ঘটনায় আতঙ্কিত টেকনাফের অন্তত ৪০০ ট্রলারের তিন হাজার জেলে পাঁচ দিন ধরে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্য মংডু টাউন দখলের পর নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মির (এএ) তৎপরতা বেড়েছে। এ সময় এই বাহিনীর সদস্যরা ১৫১ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছেন। এর মধ্যে বিজিবির একক প্রচেষ্টায় ১৩৪ জনকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অন্য জেলেদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান আরও বলেন, ট্রলারসহ ২৩ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। আজকালের মধ্যে ভালো একটি সংবাদ পাওয়া যেতে পারে। এর আগেও আরাকান আর্মির সঙ্গে বিজিবি যোগাযোগ করে কয়েক দফায় দেড় শতাধিক অপহৃত বাংলাদেশি জেলেকে ফিরিয়ে এনেছে।

ট্রলারমালিকদের দাবি, আরাকান আর্মির সদস্যরা দ্রুতগতির স্পিডবোট নিয়ে নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ছেন। তাঁরা অস্ত্রের মুখে টেকনাফের জেলেসহ মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। বিজিবির তৎপরতায় সম্প্রতি কিছু জেলেকে ফেরত আনা গেলেও অপহরণের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না।

সম্প্রতি বন্দিদশা থেকে ফিরে আসা টেকনাফের কয়েকজন জেলে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়া ও নিয়মিত যোগাযোগের পথ সৃষ্টি করতেই আরাকান আর্মি নাফ নদী থেকে বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণ করছে। রাখাইনে বন্দী থাকার সময় আরাকান আর্মির সদস্যরা তাঁদের কাছে এমন ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, রাখাইন রাজ্য দখলের পর (গত ডিসেম্বর মাসে) আরাকান আর্মি নাফ নদীতে মাছ আহরণসহ নৌকা চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে। এ বিষয়ে টেকনাফের জেলেদের সতর্ক করা হয়েছে, যাতে বাংলাদেশি জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে না পড়েন। তারপরও বাংলাদেশি জেলেদের অপহরণের ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার খায়ুকখালী খালে নোঙর করা মাছ ধরার ট্রলার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাঁচ মাসে দেড় শ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি