অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শুরু হতে যাচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম। প্রায় অর্ধযুগ পর আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হবে।

তবে এবারের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় থাকছে না পরিবর্তন। ২০২২ সালের নিয়োগ নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

সালেহ্ হাসান নকীব।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে সব বিভাগেই শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপরেই শুরু হবে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ। তবে শিক্ষক নিয়োগ আগে শেষ করতে চান রাবি প্রশাসন। তবে বর্তমান প্রশাসনের নিয়োগ নীতিমালা কেমন হবে এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কমতি নেই।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ ডিসেম্বর পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সব নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।

জানা যায়, বিগত সময়গুলোতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের মতো করে যোগ্যতা নির্ধারণ করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। এমনকি নিজেদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে নিয়োগের যোগ্যতা শিথিল করেছে বলে ইউজিসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা-২২ অনুসারে শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য একজন প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্স ফলাফল ন্যূনতম সিজিপিএ-৩.৫ এবং মেধাক্রমে ১-৭ এর মধ্যে থাকতে হবে। তবে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে কোনো প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্সের ফলাফল সিজিপিএ-৩.৫ এর নিচে হলে তা শিথিলযোগ্য হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রদত্ত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুসারে গণ্য করা হবে।

২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে-জামাইকে চাকরি দিতে নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান। এতে অনার্স-মাস্টার্সে সিজিপিএ কমিয়ে ৩.২৫ এবং মেধাক্রমের শর্ত তুলে দেয়া হয়, যা ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের বহির্ভূত ছিল। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত সাপেক্ষে ওই নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করা হয় এবং নতুন নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের ১০ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৬তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাবিতে বর্তমানে ১ হাজার ৪৯০টি শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৪০টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় এক হাজার ৫০জন। তাদের মধ্যে আবার ৫৮জন সম্প্রতি অবসরে গেছেন। মারা গেছেন কিছু সংখ্যক শিক্ষক। অন্যদিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর ১ হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি। এছাড়া সাধারণ কর্মচারীর ১ হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে ৯০৯টি পদ শূন্য রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রতি ৩৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক। নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় এ অনুপাত কমতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিয়োগ নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “বিজ্ঞপ্তির মধ্যে যে শর্ত দেওয়া ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছিলেন। আপাতত সেই অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করব।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের বিষয়ে আজ রাতে জরুরি বৈঠকে বসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা গতকাল মঙ্গলবার বাতিল করেছে ভারত। এ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় বৈঠকে বসছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

ঢাকার কারওয়ান বাজারের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) কার্যালয়ে এ বৈঠক হবে। এতে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। আর অনলাইনে যুক্ত হবেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার।

ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে যাওয়ার জন্য ২০২০ সালের ২৯ জুন একটি আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গতকাল মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করেছে।

২০২০ সালের ২৯ জুনের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের একটি শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে অন্য কোনো বন্দর বা বিমানবন্দর ব্যবহার করার সুযোগ ছিল। গতকাল ভারত বলেছে, যেসব পণ্যবোঝাই যানবাহন ইতিমধ্যে ভারতের ভূখণ্ডে আছে সেগুলোকে দ্রুত ভারতের ভূখণ্ড ত্যাগ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে কোনো প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে দেশে কোনো প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে দেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল ইস্যুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক
  • ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল ইস্যুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি বৈঠক
  • ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের বিষয়ে আজ রাতে জরুরি বৈঠকে বসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
  • নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করবে বিএসইসি
  • ব্যাংক-সম্পর্কিত তিন অধ্যাদেশের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে আইএমএফ
  • ‘পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপ’ পুনর্গঠন
  • বাংলাদেশের নদীতে চীনের সহায়তা: ভালো হবে না মন্দ হবে?