গোপালগঞ্জ সভা চলার সময় বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার সদস্যদের ওপর হামলা ও শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এসময়  সংস্থাটির কোষাধ্যক্ষ শ্যামল মন্ডল (৪৯) দগ্ধ হন।

তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থায় (ডগলাস) ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪

সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় স্বামী-স্ত্রীসহ নিহত ৩

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, “জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার সভা চলাকালীন হামলা চালানো হয়েছে। একইসাথে একজনকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

দগ্ধ শ্যামল মন্ডল গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা করপাড়া ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া গ্রামের নকুল বিশ্বাসের ছেলে। তিনি ঢাকায় কৈননিয়া নামের একটি সংস্থায় চাকরি করেন। তিনি গোপালগঞ্জের খ্রিস্টানদের সেচ্ছাসেবী সংগঠন বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার কার্যকরী কমিটির কোষাধ্যক্ষ।

বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার নির্বাহী পরিচাক শলোমন অপূর্ব বাড়ৈ বলেন, “গোপালগঞ্জের বেদগ্রামে বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার সামনে ও ভেতরের জায়গা দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পাঁয়তারা করছেন এন্ড্রু বিশ্বাস। আজ আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্ধারিত সভা ছিল। এন্ড্রু সংস্থার বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এন্ড্রু বিশ্বাস আজ সভায় উপস্থিত ছিলেন না। সভা শুরু হওয়ার কিছু সময় পর এন্ড্রু বিশ্বাস সভা বানচাল করার জন্য ৪০-৫০ লোকজন নিয়ে সভাকক্ষে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে তিনি উপস্থিত সদস্যদের মারধর করতে শুরু করেন। এসময় সংস্থার ট্রেজারার শ্যামল মন্ডলকে কক্ষে আটকে প্রথমে মারধর ও পরে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সংস্থার সদস্যরা শ্যামল মন্ডলকে উদ্ধার করে প্রথম গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়।”

সংস্থা সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্য বলেন, “আমি খুলনার ট্রাবোনাকাল গ্রেস এজি চার্জের পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছি। গত বৃহস্পতিবার এন্ড্রু বিশ্বাস তার ভাগ্নে মজুমদার ও আকাশ মজুমদার খুলনায় গিয়ে আমাকে আজকের সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য হুমকি এবং আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। আমি গোপালগঞ্জে গেলে আমাকে দেখে নেবেন বলেও হুমকি দিয়ে আসে। তার উদ্দেশ্য গোপালগঞ্জে বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার জায়গা দখল করে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। আজ এন্ড্রু বিশ্বাসের নেতৃত্ব প্রভাস বাড়ৈ, দীলিপ বাড়ৈ, আইজ্যাক বাড়ৈ, জুয়েল বাড়ৈ, মিকাইল বাড়ৈ, লিটন বল্বব, সুকলাল মজুমদারসহ ৪০-৫০ জন লোক হামলা করে।”

এ বিষয়ে এন্ড্রু বিশ্বাস বলেন, “আমার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।” 

সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি বড় ভাই হিসেবে তাকে একটা থাপ্পড় মেরেছি। তবে আজ আমার কোনো লোক হামলা করেনি। কারা তাদের ওপর হামলা করেছে বা আগুনে পুড়িয়েছে তা আমার জানা নেই।”

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো.

আব্দুলাহ রাজিব বলেন, “আজ দুপুরে শ্যামল মন্ডল নামে এক দগ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালর জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তার বুক, পেট ও দুই হাতের বেশ কিছু স্থানে আগুনে পুড়ে গেছে। আমরা তাত্ক্ষণিকভাবে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ র জন য কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় জামায়াত: সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। এ সময়ের মধ্যে যৌক্তিক সংস্কার শেষ করে সরকার নির্বাচন দেবে বলে আমাদের আশা।’

আজ শনিবার শরীয়তপুর পৌরসভা মিলনায়তন চত্বরে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে যোগদানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে কর্মী সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ৩০০ আসনে নির্বাচনের ডাক দিয়েছে। ডাইরেক্টলি অথবা ইনডাইরেক্টলি নির্বাচনে ৩০০ আসনেই অংশ নেবে। সরাসরি আমাদের দলের ব্যানারে হতে পারে, অন্য দলের সঙ্গে সমন্বয় করে হতে পারে। সবার সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে হতে পারে। আর এ জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় ঐক্য। যার যার দল থাকবে, মত থাকবে। সেটা প্রকাশের সুন্দর রাস্তা থাকতে হবে।’

জামায়াতের নায়েবে আমির আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে নতুন রাজনীতি করবে। অধিকারের রাজনীতি, সম্মানের রাজনীতি ও ভালোবাসার রাজনীতি করবে। আমাদের ভোট দিয়ে একবার পরীক্ষা করুন, দেখেন। আমাদের প্রশ্ন করুন। ১৯৭৩ সালে যাঁরা সংবিধান রচনা করেছিলেন, তাঁরা পাকিস্তানের গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য। সেই সংবিধান অবৈধ, আমরা তা মানি না। ’৭২–এর সংবিধান বাতিল করে তা নতুন করে লিখতে হবে।’

জেলা জামায়াতের আমির আবদুর রব হাসেমীর সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান, জেলার সাবেক আমির খলিলুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য কে এম মকবুল হোসাইন, ফরিদপুর জেলার আমির মুহাম্মদ বদরুদ্দীন, গোপালগঞ্জের আমির রেজাউল করিম, মাদারীপুরের আমির মোখলেসুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ