ঘুমধুমে স্থলবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
Published: 8th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে স্থলবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ঘুমধুমসীমান্ত সড়ক ও স্থল বন্দরের সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সীমান্ত সড়ক এবং সম্ভাব্য স্থল বন্দর নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন করেছি। এটি নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে সেখানে একটি স্থল বন্দর করা যায় কিনা তা বিবেচনায় রাখা হবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগে ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তাই রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বিবেচনায় একটি স্থল বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করতে হবে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে নৌপথের চেয়ে স্থলপথ সুবিধাজনক জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ঘুমধুমের এশিয়ান ট্রান্সরোডটি দুই দেশের জন্য সহজ যোগাযোগের পথ।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফে আমাদের একটি বন্দর রয়েছে। সেখানে কিছু পণ্য আমদানি হলেও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে বাণিজ্যে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তা সমাধান হবে।
টেকনাফ বন্দরকে স্থলবন্দর বলা হলেও এটি মূলত নৌবন্দরের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন সাখাওয়াত হোসেন।
উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যতে এটি আন্তর্জাতিক নৌবন্দর বা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে উন্নত হতে পারে। তবে ঘুমধুম এলাকায় একটি স্থলবন্দর নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মানজারুল মান্নান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.
বিএইচ
উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিন ফল আমদানি বন্ধ, সীমান্তে আটকা ৭৫ ট্রাক
দুই দিন ধরে বিদেশ থেকে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। আমদানিকারকেরা খালাস না নেওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে ফলবোঝাই দুই শতাধিক কনটেইনার ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন স্থলবন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ৭৫ ট্রাক ফল আটকে রয়েছে। এর মধ্যে যশোরের বেনাপোলের বিপরীতে ভারতে পেট্রাপোল সীমান্তে আটকে আছে ফলবোঝাই ২৫টি ট্রাক।
ফল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন দুই দিন ধরে ফল আমদানি বন্ধ ঘোষণা করায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফল আমদানিতে বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এ কারণে গত মঙ্গলবার ও আজ বুধবার দেশে সব স্থল ও নৌবন্দরে দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ ছিল।
গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। তাতে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে আমদানিকারকদের। তাই বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ফল আমদানিকারকেরা।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নূরউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক কনটেইনার ফল আমদানি হয়। শুল্কায়নসহ যার আমদানি মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ৮০ ট্রাক ফল আমদানি করা হয়। শুল্কায়নসহ যার মূল্য প্রায় শতকোটি টাকা। সেই হিসাবে বিভিন্ন বন্দর দিয়ে দিনে গড়ে ১৮০ কোটি টাকার ফল আমদানি হয়। আমদানি বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকার ফল আমদানি ব্যাহত হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৬৫০ মেট্রিক টন আপেল, কমলা, আঙুর, মাল্টা ও আনার আমদানি হয়েছে। এই ফল আমদানি থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে সাত কোটি টাকা। গত দুই দিন ফল আমদানি বন্ধ থাকায় সরকারেরও রাজস্ব আদায় ব্যাহত হয়েছে।
বেনাপোল বন্দর ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে যেসব খাদ্য আমদানি হয়, তার বড় অংশ রয়েছে আপেল, আঙুর, কমলা, মাল্টা ও আনার। সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর আগে এসব ফল আমদানির ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আদায় করত কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতি কেজি ফলে সরকারকে রাজস্ব দিতে হতো ১০১ থেকে ১১৫ টাকা। গত ৯ জানুয়ারি সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়। তাতে প্রতি কেজি ফল আমদানিতে শুল্ককর ১৫ থেকে ১৮ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬ থেকে ১৩৮ টাকা।
এদিকে আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করা সব ধরনের ফলের দামও বেড়েছে খুচরা বাজারে। মানভেদে বিভিন্ন ধরনের ফলের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যশোর শহরের সোনাপট্টি এলাকার খুচরা ফল ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানান, আপেল, আঙুর, কমলা, আনারসহ আমদানি করা সব ধরনের ফলের দাম বেড়েছে। আর দাম বাড়ায় ফলের ক্রেতাও কমে গেছে। এতে বেচাবিক্রি একদমই কম।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরউদ্দীন আহমেদ বলেন, বিলাসী পণ্য হিসেবে আমদানি করা ফলের ওপর গত এক বছরে তিন দফায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে এনবিআর। আপেল-আঙুর-কমলা হচ্ছে শিশুখাদ্য ও রোগীর পথ্য। এটা কীভাবে বিলাসী পণ্য হয়, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিলাসী পণ্যের কোনো তালিকা নেই। তবে যেসব পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়, সাধারণত সেসব পণ্যকে বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেনাপোল স্থলবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০ ট্রাক ফল আমদানি হয়।
পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল বন্দরে বিভিন্ন ধরনের ফলবোঝাই অন্তত ২৫টি ট্রাক আটকে আছে বলে নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান। তিনি জানান, বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার না হলে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফল আমদানি বন্ধ থাকবে।