বইমেলায় মেসবাহ য়াযাদের ‘চব্বিশের বাংলাদেশ’
Published: 8th, February 2025 GMT
এবারের অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে সাংবাদিক ও লেখক মেসবাহ য়াযাদের বই ‘চব্বিশের বাংলাদেশ’। ২০২৪ সালের জুলাই ১৪ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী নিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি। বইটিতে পাঠকরা সেসময়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার বিষদ জানতে পারবেন।
‘চব্বিশের বাংলাদেশ’ নিয়ে সাংবাদিক মেসবাহ য়াযাদ বলেন, ‘‘পাঁচ, দশ বা পনের বছর পর আজকের ইতিহাস আর এমন নির্ভেজাল থাকবে না। সেসময়ে পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক তথ্য জানাতে এই বইটি সংগ্রহে রাখা উচিৎ। সেই সাথে আন্দোলন চলাকালে নেটওয়ার্ক পরিষেবা বন্ধ থাকায় সব তথ্য সাধারণের জানার কথা নয়। রাজধানী ঢাকা থেকে অনেক দূরের জেলা বা মফস্বল শহরের মানুষের পক্ষে তাই সঠিক সংবাদ জানা সম্ভবও হয়নি। প্রকৃত অর্থে কী ঘটেছিল তখন ঢাকায়, জানতে হলে পড়া দরকার ‘চব্বিশের বাংলাদেশ’।’
তিনি বলেন, ‘‘এ সময়ের গল্পের পেছনের গল্প, মানুষের গল্প, অমানুষের গল্প, ক্ষমতার গল্প, অক্ষমতার গল্প, সাধারণের গল্প, অসাধারণের গল্প— একজন মাঠের সংবাদকর্মী হিসেবে অভিজ্ঞতার গল্পকে সময়ের একটি প্রামাণ্য দলিল মলাটবন্দি করার প্রয়াসই এই গ্রন্থ। এটি সময়ের একটি প্রামাণ্য দলিল।’’
আরো পড়ুন:
বৃত্তের বাইরের ভাবনায় বইমেলা
বইমেলায় ইমরুল ইউসুফের ‘ক্যাম্পাসাণুকাব্য’
‘চব্বিশের বাংলাদেশ’-এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী বিপুল শাহ। মেলার সাহিত্যদেশ-এর ৫৯৪-৫৯৫ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে বইটি।
অন্যান্য আরো প্লাটফর্ম: পিবিএস বুকশপ, শান্তিনগর, ঢাকা, পলল প্রকাশনী, আজিজ মার্কেট, ঢাকা, বিশ্বরঙ, যমুনা ফিউচার পার্ক, ঢাকা।
অনলাইন: রকমারি ডটকম, বইবাজার ডটকম, বইফেরী ডটকম, পিবিএস বুকশপ, রিডচেইন ডটকম, দূরবীন, বুক এক্সপ্রেস, বইপোকা, প্রথমা ডট কম, বইয়ের দুনিয়া ডটকম, বইসদাই ডটকম, বইপ্রহর, বাতিঘর ডটকম-এ।
ঢাকা/নাজমুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংঘর্ষের দু’দিন পর মিলল ৩ লাশ
নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে হাওরের বিলে মাছ শিকার করা নিয়ে সংঘর্ষের দু’দিন পর ধনু নদী থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার উপজেলার নাওটানা এলাকায় নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশ তিনটি পাওয়া যায়। গত শনিবার মাছ শিকার করতে যাওয়া লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের এ সংঘর্ষ হয়।
নিহত তিনজন হলেন– নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (২৯), আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে শহীদ মিয়া (৫৫) এবং মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের আবদুল কদ্দুছের ছেলে রোকন মিয়া (৫২)। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মকবুল হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত শনিবার খালিয়াজুরীর ইজারাকৃত কাঁঠালজান ও মরাগাঙ্গের মাছ লুট করার জন্য ধনু নদীর পাড়ে জড়ো হন হাজারো মানুষ। তাদের সঙ্গে মাছ ধরার সামগ্রীর পাশাপাশি লাঠি ছিল। ময়মনসিংহের নান্দাইল, গৌরিপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, নেত্রকোনা সদর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, মদন ও খালিয়াজুরীর মানুষ এদিন মাছ শিকারে এলে এলাকার লোকজন প্রতিরোধের চেষ্টা করেন।
এর আগে এক সপ্তাহে মদনের নূরেশ্বর, খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনকলা, কারি, উচাবাইদা, হাইলা বিলসহ হাওরের কয়েকটি ইজারাকৃত বিলের মাছ লুট করেন শিকারিরা। প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করেই এমন ঘটনা ঘটছে। বিলগুলোর ইজারা মূল্য অন্তত ৪ কোটি টাকা।
গত শনিবার সংঘর্ষের সময় মাছ শিকারিরা রসুলপুর ফেরিঘাটে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে কেউ কেউ সাঁতরে ধনু নদী পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন থেকে কয়েকজন নিখোঁজ থাকার কথা পরিবারের সদস্যরা জানান। এরপর থেকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ডুবুরিদল নিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
সোমবার বিকেলে তিনজন মাছ শিকারির লাশ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার দিন সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছিলেন। শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
লাশ উদ্ধারের পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এ সময় সেখানে শত শত মানুষ ভিড় করেন। নিহত তিনজনের বাড়িতে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহত রোকন মিয়ার ছেলে সুমন (২৮) বলেন, তাঁর বাবা শখ করে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সেখানে এলাকাবাসী ও ইজারাদাররা তাঁকে মেরে নদীতে ফেলে দেয়। তিনি তাঁর বাবার হত্যার বিচার চান।
আটপাড়ার স্বরমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য সুফিয়া আক্তারের ভাষ্য, শহীদ মিয়া দিনমজুর ছিলেন। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি। তিনি মারা যাওয়ায় পরিবারটি অসুবিধায় পড়ে গেছে। সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার বলেন, ‘শুনেছি মাছ ধরতে গিয়ে শহীদ মিয়া মারা গেছেন। তাঁর সংসারে এখন উপার্জনশীল কেউ নেই।’
খালিয়াজুরীর লেপসিয়া ফাঁড়ির নৌপুলিশের আইসি জাহাঙ্গীর হোসেন খান মদনের বাগজান গ্রামের রোকনের লাশটি রসুলপুরঘাট থেকে উদ্ধার করেন। তবে কতজন নিখোঁজ, তা তিনি জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তিনজনের লাশ হস্তান্তর করা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মকবুল হোসেন বলেন, শনিবার সংঘর্ষের সময় তিনজন নদী সাঁতরে পার হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পার হতে না পেরে তারা ডুবে মারা যান। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন।