কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাকপ্রতিবন্ধী এক নারীর বিবস্ত্র মরদেহ গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের ধারণা, ধর্ষণের পর হত্যা করে জাহানারা বেগমের (৪০) মরদেহ কে বা কারা গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার দৌলতখালী ইউনিয়নের দাঁড়ের পাড়া গবড়গাড়া গ্রামের গইড়ির মাঠ এলাকার জিনা মেম্বারের পুকুর পাড়ের একটি গাছ থেকে মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়।  

মারা যাওয়া জাহানারা বেগম একই ইউনিয়নের দৌলতখালী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে। 

আরো পড়ুন:

রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে বখাটের হেনস্তা, বাউফলে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

দু’ শিশু সন্তানকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

এলাকাবাসী জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর দাড়ের পাড়ার মোড়ের একটি দোকানে বসে থাকতে দেখা যায় জাহানারাকে। 

নিহতের ভাই রাহাতুল ইসলাম বলেন, “জাহানারা বাক প্রতিবন্ধী। তিনি প্রতিদিনের মতো সংসারের কাজকর্ম শেষে গতকাল সন্ধ্যার পরে হাঁটা-হাঁটির জন্য বাইরে যান। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। জাহানারা বাক প্রতিবন্ধী হলেও সংসারের সব কাজ করতে পারেন। তিনি মানুষের বাসা-বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন।” 

তিনি আরো বলেন, “আজ সকালে আমরা জানতে পারি, বিবস্ত্র অবস্থায় তার মরদেহ একটি গাছে ঝুলছে। আমরা এসে দেখি, তার জামা কাপড় বিভিন্ন জায়গায় পড়ে আছে এবং তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমাদের ধারণা, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিচার চাই আমরা।”  

দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, “পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করেছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের ভিন্ন ভাষ্য

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার একটি মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থীর (১৩) মৃত্যু হয়েছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাড়ি যেতে না পারায় মেয়েটি লাফ দেয়। তবে স্বজনেরা দাবি করেছেন, এখানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকতে পারে।

গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই জানাজানি হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাদ্রাসার পাঁচতলার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় সে।

মাদ্রাসার মুহতামিমের ভাষ্য, ঈদের ছুটির পর সপ্তাহখানেক আগে ওই শিক্ষার্থীর নিয়মিত ক্লাস শুরু হয়। তবে মাদ্রাসার আবাসিকে থাকতে সে অনাগ্রহী ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সে তার মাকে ফোন করে বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। পরে রাতে মাদ্রাসার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়ে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তাঁরা কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়েটিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওই শিক্ষার্থীর মামা বলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করতে, তবে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তাঁরা থানায় অভিযোগ করবেন। পুরো ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবি জানান।

মেয়েটির এক স্বজন দাবি করেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। জানালার একটি বড় ফাঁক দিয়ে মেয়েটি নিচে পড়ে যায়। যদি গ্রিল সঠিকভাবে থাকত, এমনটা না–ও হতে পারত।

মাদ্রাসার মুহতামিম বলেন, ‘দিবাগত রাত তিনটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাস্তায় মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে আমাকে ফোন করেন। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। জানালার ওই অংশে ফাঁক ছিল, তবে সেটি আগে তেমনভাবে আমাদের নজরে আসেনি।’

এ বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানালার একটি অংশে রডের ফাঁক আছে, সেটি বেশ বড়। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান দিয়েই মেয়েটি পড়েছে। তবে তদন্ত চলছে। মেয়েটির লাশের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে। যৌন নিপীড়নের কোনো অভিযোগ থাকলে, সেটিও পরীক্ষা করা হবে। এখন পর্যন্ত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা পরিবারের কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ