আট বাংলাদেশিকে আটকের পর ১ জনকে ফেরত দিল বিএসএফ
Published: 8th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় আট বাংলাদেশিকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে রুপচাঁদ মণ্ডল নামের এক জনকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। অন্যদের ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে সীমান্ত থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ভারতের নদীয়া জেলার করিমপুর থেকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি গ্রামের মহসিন মণ্ডলের ছেলে রুপচাদ মণ্ডলকে আটক করে বিএসএফ। খবর পেয়ে বিজিবির কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) পক্ষ থেকে বিএসএফের ১৪৬ ব্যাটালিয়নকে চিঠি দেওয়াসহ কমান্ড্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রুপচাদ মণ্ডলকে শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে দৌলতপুর সীমান্তের রামকৃষ্ণপুর বিওপির ১৫৫ এমপি এলাকা দিয়ে ফেরত পাঠায় বিএসএফ।
জিজ্ঞাসাবাদে রুপচাঁদ মণ্ডল বিজিবিকে জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে অবৈধভাবে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের কেরালা রাজ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন রুপচাঁদ। বৃহস্পতিবার ভারত থেকে ফেরার পথে ১৪৬ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের বাউসমারী ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করেন। এ সময় আরো সাত বাংলাদেশি ও তিন ভারতীয় দালালকেও আটক করে বিএসএফ।
আটককৃত বাংলাদেশিরা হলেন—কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভাগজোত গ্রামের মুনি ইসলামের ছেলে রনি আহমেদ, সোনাতলা গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মহাবুল ইসলাম, একই গ্রামের ছাতার মণ্ডলের ছেলে স্বপন মণ্ডল, শমসের বিশ্বাসের ছেলে হামিদুল বিশ্বাস, জমসেদ বিশ্বাসের ছেলে জালাল বিশ্বাস, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের জুলফিকারের ছেলে লিটন হোসেন ফকির ও জয়পুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে রতন আলী। তারা ভারতের জলঙ্গি থানায় পুলিশ হেফাজতে আছেন। আটকের পর বিএসএফ সদস্যরা শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে রুপচাঁদ মণ্ডল জানিয়েছেন।
বিজিবির কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব মুর্শেদ রহমান বলেছেন, “আটকের পর বিজিবির অনুরোধে রুপচাঁদ মণ্ডলকে ছেড়ে দিয়েছে বিএসএফ। রুপচাঁদ জানিয়েছেন, আরো ৭ বাংলাদেশি ও ৩ ভারতীয় দালালকে আটক করেছে বিএসএফ। তাদের বিষয়ে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ লতপ র ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।