ভারতের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে নিজ আসন নিউ দিল্লিতে হেরে গেছেন আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এ আসনে জয়ী হয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থী প্রভেশ ভার্মা। নির্বাচনের ফলাফলে বেশ ভালো ব্যবধানেই এগিয়ে গেছে বিজেপি।

পরাজয় মেনে বিজেপিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে জনগণের রায় মেনে নিলাম। আমি বিজেপিকে এই বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাই। জনগণ তাদের যে কারণে ভোট দিয়েছেন, সে প্রত্যাশা তারা পূরণ করবে বলে আশা করছি।’

কেজরিওয়াল আরও বলেন, ‘গত ১০ বছরে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অবকাঠামো খাতে আমরা অনেক কাজ করেছি। আমরা শুধু একটি গঠনমূলক বিরোধী দল হিসেবেই ভূমিকা পালন করব না, বরং মানুষের মধ্যে থাকব এবং তাঁদের সেবা করে যাব।’

১৪ রাউন্ডের ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ৪ হাজার ৮৯ ভোটের ব্যবধানে প্রভেশ ভার্মার কাছে হেরে যান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কংগ্রেসের প্রার্থী সন্দীপ দীক্ষিত ৪ হাজার ৫৬৮ ভোট পেয়েছেন।

এরই মধ্যে বিধানসভার ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৮টিতে জিতেছে এবং ৪০টিতে এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে আম আদমি পার্টি ৯টি আসনে জিতেছে এবং ১৩টিতে এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস কোনো আসনেই এগিয়ে থাকতে পারেনি। দিল্লিতে সরকার গঠনের জন্য ৩৬টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে।

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আজ শনিবার সকাল আটটা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়ে এখনো চলছে। ভারতের নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নয়াদিল্লি আসনে ৫৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ভোট পড়েছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোট গণনার গতি-প্রকৃতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, দীর্ঘ ২৭ বছর পর দিল্লি দখল করতে চলেছে বিজেপি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ধ নসভ

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র: কাদের গনি চৌধুরী

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। গণমাধ্যমের জন্য দরকার সৎ, সত্যনিষ্ঠ, পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা। বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশে এসবের বড্ড অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব বলেন।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের পরাজয় মানে জনগণের পরাজয়। আর জনগণের পরাজয় মানে রাষ্ট্রের পরাজয়। তাই গণমাধ্যমকে পরাজিত হতে দেওয়া যাবে না।

নিরাপদ নিউজের প্রধান সম্পাদক চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, লিটন এরশাদ, গনি মিয়া বাবুল প্রমুখ।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। সৎ সাংবাদিকতা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে। সৎ সাংবাদিকতা সত্যের আরাধনা করে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা সমাজকে এগিয়ে নেয়, গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। তাই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতা করতে হবে। সততা না থাকলে সাংবাদিকতা থাকে না। সাংবাদিকের কলমের শক্তিকে ইতিবাচক কাজে ব্যবহার না করলে জাতির সর্বনাশ ঘটে। তাই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে কোনো অজুহাত নয়। গণমানুষের মনের কথা পত্রিকার পাতায় পাতায় তুলে ধরতে হবে।

তিনি বলেন, জনগণ দাস সাংবাদিকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। তাদের আত্মসমর্পণকে ঘৃণা করে। তাই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সম্পাদক-সাংবাদিকদের নির্ভীক, নির্লোভ ভূমিকা পালন করতে হবে। একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সেজন্য গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। এই দর্পণে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের প্রতিচিত্র।

বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, কারও চোখ রাঙানোকে তোয়াক্কা না করে নির্ভীক ও নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে হয়। মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে সাংবাদিকদের দিন যায়। ক্ষমতাধরদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়।

শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা ও মানবিক চেতনা বিকাশের কেন্দ্র এবং নীতি-নৈতিকতা, দায়দায়িত্ব ও বুদ্ধি-বিবেকের আধার। তাই সৃজনশীল গণমাধ্যম ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে সংবাদপত্র অগ্রগণ্য। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাহসী, সংবেদনশীল ও নির্মোহ, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ ও গণসম্পৃক্ত সার্বক্ষণিক পেশা সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল দল নিরপেক্ষ সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। সংবাদপত্র যতবেশি নিরপেক্ষ হবে এবং সাংবাদিকরা যত বেশি নির্ভীক ও সৎ হবে দেশ ও জাতির তত বেশি মঙ্গল হবে। আর সেজন্যই তো সাংবাদিকদের সমাজের অতন্দ্র প্রহরী বা ‘গেট কিপারস’ বলা হয়।

আবু সালেহ আকন বলেন, সংবাদমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সৎ, সত্যনিষ্ঠ, পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রকে প্রমাণ করতে হবে কারও প্রতি পক্ষপাত নেই, কারও বিরুদ্ধে বা কারও পক্ষে কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। সেটা সম্ভব হলেই সর্বস্তরের পাঠক সেই পত্রিকাকে গ্রহণ করবেন। গণমাধ্যমকে সব সময় মনে রাখতে হবে, সেই অন্যকে সুন্দর ও সঠিক পথে প্রভাবিত করবে। কিন্তু নিজে কখনো ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হবে না। অন্যায়-অসত্যের কাছে নতি স্বীকার করবে না।

খুরশীদ আলম বলেন, অধিকাংশ গণমাধ্যম গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের তাঁবেদারি করেছে। যাচাই না করে মনগড়া রিপোর্ট এখনো লিখা হচ্ছে। 
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে ক্ষমতাবানের স্বার্থ ও দ্বন্দ্ব থাকে। কিন্তু সেটাকে অতিক্রম করে সংবাদপত্রকে পাঠকের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। অনুপ্রেরণা জোগাতে হয়। তাই বিরুদ্ধ পরিবেশেও সংবাদপত্রকে শক্ত হয়ে জনতার পক্ষে দাঁড়াতে হয়। জনমত গড়তে হয়। রাষ্ট্র বা সরকার জনমতের কাছে নত হয়। তাই জনতার স্বার্থে সংবাদপত্র ও সাংবাদিককে এগোতে হয় অবিরাম, অবিরত।

মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, গণমাধ্যমের সংস্কার খুবই জরুরি। দেশে প্রচুর পত্রিকা রয়েছে, ক'টা গণমাধ্যম হতে পেরেছে?

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ আগস্টে পরাজিতরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে
  • হাসিনার উসকানিতে জড়িয়ে পড়লে গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন হাতছাড়া হতে পারে: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
  • সরকারের নমনীয়তা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক
  • সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সংস্কার ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া
  • আমার সঙ্গে রাজনীতি করতে হলে, জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে : মামুন মাহমুদ
  • সংহতির অভাব সংস্কার প্রচেষ্টার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে
  • আজহারীর মাহফিলকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি চলছে: হারুনুর রশিদ
  • গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করতে হবে
  • সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র: কাদের গনি চৌধুরী