বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কাজ নিয়ে আমরা সমালোচনা করব, তারপরও ড. ইউনূসকে ব্যর্থ হতে দেব না। কারণ রক্ত ঝড়ার মধ্য দিয়ে এই সরকার। তবে এখন এই ভয়টি নেই যে, আমাকে খুন হতে হবে, ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দেবে।’’

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে দ্রোহের গ্রাফিতি নামে এই প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ।

আরো পড়ুন:

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ‘জামায়াতীকরণ’ করা হয়েছে: রিজভী

সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া, হাসিনাকে ‘দুষলেন’ রিজভী

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘ভারতের মিডিয়া শেখ হাসিনার হয়ে বয়ান তৈরি করছে। মনে হচ্ছে অনেক দিন ধরে তারা যে গুপ্তধন তৈরি করেছে তা যেন হাতছাড়া হয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক সমাজের বিকাশের যে ধারা তৈরি হয়েছে তারা মনে হচ্ছে কোনোভাবেই এটা সহ্য করতে পারছে না। শুধুমাত্র শেখ হাসিনার মুক্তি। এটা কেন? একটি গণতান্ত্রিক দেশের কাছ থেকে এটি আশা করছি না। তাদের গণমাধ্যম বলছে বাংলাদেশ থাকবে না। একটি স্বাধীন দেশের বিষয়ে এমন কথা অ্যালাউ করছে কীভাবে নীতি নির্ধারকেরা?’’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা মনগড়া বক্তব্য দিচ্ছে, উসকানিমূলক কথা বলছে, অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করছে। ভারতের নীতি নির্ধারকেরা তার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। এটা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ। চরমভাবে আন্তর্জাতিক নীতি লঙ্ঘন করে এসব করছে।’’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলে, ‘‘গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে কোনো নৈরাজ্যের কারণে কেউ যাতে সুযোগ নিতে না পারে। প্রতিবিপ্লব সব সময় উঁকি-ঝুঁকি মারে। এই উঁকি-ঝুঁকি যাতে দিতে না পারে কোনো ভুলের কারণে।’’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘‘আজকে যারা খুনিদের পক্ষে বিবৃতি দেন তারা বুদ্ধিজীবী না, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। খুনি-ফ্যাসিবাদ যাতে আর বাংলাদেশে আসতে না পারে সে জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হব।’’

দৈনিক আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, ‘‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পরাজিত শক্তিকে আর মাথা তুলতে দেওয়া যাবে না। এ জন্য প্রশাসনকে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর করতে উদ্যোগ নিতে হবে।’’

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দেশ রূপান্তরের সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ ও বাসসের প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ।

ঢাকা/নাজমুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়াশা উৎসব শুরু

শিশিরের মতো নির্মল হও প্রাণ, কুয়াশায় ভিজে মুক্ত অনির্বাণ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ২ দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব-১৪৩১।

শুক্রবার সকালে রাগ সংগীত ও পিঠা পুলির আসরের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চতুর্থবারের মতো শুরু হয় এ উৎসব।

উৎসব আয়োজকরা জানান, ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিলে কুয়াশা উৎসবের পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন পড়ে অনেক টাকার। আয়োজনে সহযোগিতা করতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত, চারুকলা, নাট্যকলা, ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগসহ সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আলাদা আলাদা টিম গঠন করে ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন হাটবাজারে সাধারণ মানুষকে গান শুনিয়ে সংগ্রহ করেন টাকা। সেই টাকায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি কেনেন তারা।

মাসভর শ্রম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশালাকার খেলার মাঠজুড়ে কুঁড়েঘর, গরুর গাড়িসহ একটি মনোরম গ্রামীণ পরিবেশ গড়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা। সফল হয় তাদের শ্রম। অসাধারণ গ্রামীণ চিত্রে সজ্জিত কুয়াশা উৎসবের আয়োজন মন কাড়ে দর্শনার্থীদের। ব্যাপক সাড়া ও প্রশংসা কুড়ায় ওই আয়োজন। মাঝের দুই বছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বন্ধ থাকে কুয়াশা উৎসবের আয়োজন। গত বছরও বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে জাঁকজমকপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের নিরলস পরিশ্রমের সফল হয় দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব।

এবারের দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। তাই চুরুলিয়া মঞ্চ, নজরুল বেদি, জয়ধ্বনি মঞ্চ ও ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক ব্যবহার করেন আয়োজকরা। তবে এ উৎসব ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে। প্রতিবারের মতো এবারও কুয়াশা উৎসবে থাকছে চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রাগ সঙ্গীত, লোকনৃত্য, সাহিত্য আলোচনা, অভিক নৃ, ঘাটু গানসহ রস উৎসব, পিঠা পার্বণ ও নানা আয়োজন। উৎসব বন্ধুদের অর্থায়নে আয়োজন হয়েছে এই উৎসবের।

শুক্রবার বিকেলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, প্রাণের স্পন্দনে হাতের ছোঁয়ায় নানারূপে সেজেছে চুরুলিয়া মঞ্চ, নজরুল বেদি, জয়ধ্বনি মঞ্চ ও ক্যাম্পাস সড়কের গাছগুলোও। উপজাতি সম্প্রদায়ের কুঁড়েঘর। বসেছে বাহারি পিঠা ও বইয়ের স্টল। চুরুলিয়া মঞ্চে চলছিল সাহিত্য আড্ডা “ভয়” তাতে অংশ নেন গায়ক ও লেখক অরুপ রাহী, লেখক ও শিক্ষক উম্মে ফারহানা ও রবীন্দ্র কুমার রায়। নজরুল বেদিতে বসে গানের আসর।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অন্যন্যা বলেন, প্রতি বছর আমরা এ উৎসবটির জন্য অপেক্ষা করে থাকি। প্রতি বছর পালিত হোক এ উৎসব।   

সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা জানান, শুরু থেকেই উৎসব বন্ধুদের আর্থিক সহযোগিতায় চার বছর ধরে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়াশা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এ উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব।

কুয়াশা উৎসবের উপদেষ্টা ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে ফারহানা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আয়োজনটি ভিন্নধর্মী ও ভিন্ন আমেজের।

কুয়াশা উৎসবের আরেক উপদেষ্টা ফিল্ম অ্যান্ড স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনোজ কুমার প্রামাণিক জানান, কোনোপ্রকার স্পন্সর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং আমাদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় এ উৎসব চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্নস্থান থেকে এসেছে দর্শনার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণিত উৎসব
  • মায়ের ওপর বড় কোনো শেফ নাই
  • মায়ার টানেই করিম উৎসবে আসেন বাউল এমরান
  • রয়েল ইউনিভার্সিটিতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপিত
  • উৎসবের নগরীতে পরিণত বরিশাল
  • জাতীয় গণিত উৎসব
  • স্বপ্ন গণিতের মধ্য দিয়ে বিশ্বজয়ের
  • রান উৎসবের ফাইনালে বরিশালের টানা দ্বিতীয় শিরোপা
  • নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুয়াশা উৎসব শুরু