কুমিল্লার হোমনায় ব্যঙ্গ করে নাম ডাকা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক কিশোরের ছুরিকাঘাতে মো. কাউসার আলম (১৬) নামের আরেক কিশোর খুন হয়েছে। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে কাইয়ুম (১৭) নামের আরেক কিশোর আহত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার চান্দেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কাউসার তাতুয়ার চর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। সে চান্দেরচর বাজারে একটি আসবাবের দোকানে কাজ করত। খুনে অভিযুক্ত কিশোর চান্দেরচর এলাকার বাসিন্দা। সে পেশায় রিকশাচালক।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, চান্দেরচর বাজারের ওই আসবাব তৈরির দোকানে কাউসার ছাড়াও নাজমুল হোসেন, কাইয়ুম, সাইদুল ইসলাম, সাব্বির নামের কয়েকজন তরুণ কাজ করে। সেই দোকানের পাশেই চান্দেরচর আলিম মাদ্রাসা। ২ ফেব্রুয়ারি ওই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী শায়খ ইসলাম ও ইমন মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় আসবাবের দোকানে কর্মরত নাজমুল তার বন্ধু সাব্বিরকে ‘সাবরি’ বলে ডাক দেয়। তখন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী শায়খ মনে করে ব্যঙ্গ করে তাঁকে ‘সাবরি’ বলে ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে চান্দেরচর এলাকায় বসা মেলায় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ইমন ও তার এলাকার বন্ধু রিকশাচালক শাহাদত হোসেন আসে। মেলার মধ্যে আসবাবের দোকানে কর্মরত কাউসার, কাইয়ুম, নাজমুল ও সাইদুলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। এ সময় পূর্ববিরোধ নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শাহাদাত আশপাশের কোনো স্থান থেকে ছুরি এনে কাউসারের বুকে আঘাত করে। আর ইমন কাইয়ুমের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন কাউসার ও কাইয়ুমকে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে কাউসারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় কাউসারের মৃত্যু হয়। পরে স্বজনেরা কাউসারের মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসেন।

এদিকে কাউসারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা চান্দেরচর গ্রামে গিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে হোমনা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার সকালে কাউসারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফার্নিচার দোকানে কর্মরতদের পুরোনো বিরোধকে কেন্দ্র করে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত একজন রিকশাচালক এবং অপরজন দাখিল পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ন দ রচর এ ঘটন য় র এল ক এল ক য় আসব ব

এছাড়াও পড়ুন:

দাম্পত্য মজবুত করুন ২-২-২ সূত্র মেনে

আধুনিক জীবনের গতির দৌড়ে নিজেদের জন্য সময় মেলে খুবই কম। এ কারণে দাম্পত্যে প্রায়ই দেখা দেয় দূরত্ব। এই সমস্যা এড়াতে মেনে চলতে পারেন ২-২-২ সূত্র।

সূত্রটা শুনতে খটোমটো লাগলেও ভেঙে বললে বেশ সহজই মনে হবে। প্রতি ২ সপ্তাহে একবার দুজনে একান্তে সময় কাটানো। প্রতি ২ মাসে একবার সাপ্তাহিক ছুটিতে ঘুরতে যাওয়া। আর প্রতি ২ বছরে একবার সপ্তাহখানেক লম্বা ভ্রমণে যাওয়া। এই সহজ তিনটা কাজ ঠিকঠাক করতে পারলেই আপনার দাম্পত্য সম্পর্ক থাকবে মজুবত।

কেন একান্তে সময় কাটাবেন

আপনাদের সম্পর্ক যতই মজবুত হোক, একটা সময়ের পর সেটা একঘেয়ে লাগতে বাধ্য। কারণ, প্রতিদিন দুজনে সেই একই কাজই করছেন। তারপর মনে হতে শুরু করবে, আপনারা অভ্যাসের বশে একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। সেটা দূর করতেই প্রতি ২ সপ্তাহে একবার দুজনে মিলে একান্তে সময় কাটানো জরুরি। সেটা হতে পারে যেকোনো কিছু, যেটা আপনাদের নিত্যদিনের কাজের মধ্যে পড়ে না। হয়তো সেটা বড় কিছু নয়, কিন্তু দুজনের প্রতি দুজনার অনুভূতি প্রকাশে এই ছোট উদ্যোগই একটা বড় বার্তা দিতে পারে।

সপ্তাহান্তে ঘোরাঘুরির মাহাত্ম্য কী

এই সূত্রের দ্বিতীয় ধাপ, প্রতি ২ মাসে একবার করে সপ্তাহান্তে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। বলতে পারেন, এটা আপনাদের দুজনের একধরনের খুদে অভিযান। সারা দিন স্রেফ দুজনে মিলে সময় কাটানো। দৈনন্দিনের রুটিন, অফিস-আদালতের কাজের চাপ, সামাজিক দায়দায়িত্ব সব ভুলে নিজেদের নিয়ে মেতে থাকা। সেটা হতে পারে ধারেকাছের কোনো পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে যাওয়া। শহরের যে অঞ্চলে আপনাদের নিত্যকার যাতায়াত নেই, সেই অঞ্চলে যাওয়া। গাড়ি নিয়ে দিনে গিয়ে দিনে ঘুরে আসা যায়, এমন কোথাও যাওয়া। এমনকি ঘুরে আসতে পারেন কাছাকাছি কোনো শহর থেকে। মোটকথা, দুজনে মিলে নতুন কিছু স্মৃতি তৈরি করবেন। এসব স্মৃতি সামনের দিনগুলোতে আপনাদের সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলবে।

কেন যাবেন লম্বা ছুটিতে

এই সূত্র মেনে আপনাদের প্রতি ২ বছরে একবার করে যেতে হবে সপ্তাহখানেক লম্বা ছুটিতে। এটা আপনাদের সত্যিকারের অভিযান। সেটার পরিকল্পনা করতে পারেন দীর্ঘ সময় নিয়ে। যেতে পারেন সমুদ্রসৈকতে বা পাহাড়চূড়ায়। কিংবা আপনাদের স্বপ্নের কোনো পর্যটন এলাকায়। হতে পারে সাংস্কৃতিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ কোনো শহর কিংবা স্রেফ ছুটি কাটানোর জন্য বিখ্যাত এলাকা। সেখানে সপ্তাহখানেক কাটিয়ে দেবেন রোজকার জীবনের কোনো দায়দায়িত্ব ছাড়াই। দিনগুলো হবে স্রেফ আপনাদের দুজনের।

নিয়মিত যখন দুজনে দুজনকে সময় দেবেন, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ভালো থাকবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ