হাঁটার গুরুত্ব বোঝাতে টেকনাফ থেকে হেঁটে তেঁতুলিয়ায় তরুণী
Published: 8th, February 2025 GMT
নিজের দেশটিকে ঘুরে দেখার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটতে উদ্বুদ্ধ করতে চান তাহুরা সুলতানা রেখা (২৫)। এ লক্ষ্যে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত হাঁটার সংকল্প করেন। ২৬ দিন ধরে হেঁটে হেঁটে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর সকাল ছয়টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে পদযাত্রা শুরু করেন তাহুরা। ‘চলুন ইতিবাচক চিন্তা করি, সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটি’ স্লোগানকে সামনে রেখে একাই হাঁটা শুরু করেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পথে পথে তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছেন পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই। নিজের এই লক্ষ্যকে গুরুত্ব দিয়ে এত মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাহুরা।
তাহুরা সুলতানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা রশিদ আহমেদ ও তৈয়বা খাতুন দম্পতির মেয়ে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। এই তরুণী চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
তাহুরা জানান, দেশের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ করতেই তাঁর এই যাত্রা। তাঁর এই পদযাত্রার খরচও বহন করছেন নিজে। ‘জুম ওয়াইল্ড’ নামে তাঁর একটি ট্রাভেল এজেন্সি আছে। সেই সঙ্গে পর্যটনসংক্রান্ত পণ্যসামগ্রীর একটি দোকান আছে। সেখান থেকে অর্জিত অর্থ জমিয়ে এ পদযাত্রায় নেমেছেন।
তাহুরা বলেন, তাঁর ‘সাগর থেকে হিমালয়’ নামের প্রকল্পের অংশ হিসেবে ক্রস কান্ট্রি হাইকিংয়ের তিনটি পর্ব ছিল। এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর টেকনাফ থেকে শুরু করে হেঁটে যমুনার পাড়ে আসেন। যমুনা সেতুতে তিনি হাঁটার অনুমতি না পেয়ে ১৬ ডিসেম্বর তিনি সাঁতরে যমুনা নদী পার হন। সেখান থেকে প্রথম পর্ব শেষ করে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো নারী অভিযাত্রী দলের সদস্য হিসেবে তিনি শীতকালীন হিমালয় অভিযানে নেপালে চলে যান। সেখানে ২৫ দিন থেকে আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেটি ছিল এ অভিযানেরই দ্বিতীয় পর্ব। এরপর তৃতীয় পর্বে গত ১৮ জানুয়ারি তিনি যমুনার পাড় থেকে আবারও হাঁটা শুরু করেন। সর্বশেষে তিনি গতকাল সন্ধ্যায় হেঁটে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।
তাহুরার কথায়, ‘শৈশব থেকেই আমি ঘোরাঘুরি পছন্দ করি। চ্যালেঞ্জিং কোনো বিষয় গ্রহণ করতে ভালো লাগে। এসব কারণেই হেঁটে দেশভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিই। যাত্রা শুরুর পর যেখানেই বিরতি নিয়েছি, সেখানে মানুষের ভালোবাসা ও স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় আমি অভিভূত হয়েছি। আমার মনে হয়, সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটার গুরুত্ব বুঝে সবাই আমাকে সঙ্গ দিয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন এলাকায় শিশুরাও আমার সঙ্গে হেঁটেছে।’
বিষয়টি জেনে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাহুরা সুলতানার পদযাত্রা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার। তাঁকে দেখে তরুণ প্রজন্ম সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটতে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আশা করি। এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রমকে পৃষ্ঠপোষকতা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে কী ঘটে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
মৃত্যু মানুষের জীবনের চিরন্তন এক সত্য। মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মানুষের শরীরে কী কী পরিবর্তন হয়, তা জানতে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিল, কেন্টাকির একদল স্নায়ুবিজ্ঞানী মৃত্যুর সময় মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ প্রথমবারের মতো ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে মানুষের মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে কী ঘটে, তা নিয়ে কিছু তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মৃত্যুর আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে পুরো জীবনের নানা দৃশ্য সিনেমার ট্রেলারের মতো একঝলক দেখা যায়।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ৮৭ বছর বয়সী এক মৃগীরোগী চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে অর্থাৎ হৃদ্যন্ত্রের স্পন্দন বন্ধ হওয়ার আগে ও পরের ৩০ সেকেন্ডের মস্তিষ্কের কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চিকিৎসকেরা তাঁর মাথায় ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) যন্ত্র যুক্ত করেন। এ সময় মোট ৯০০ সেকেন্ড মস্তিষ্কের তরঙ্গের দৈর্ঘ্য ধারণ করা হয়। মস্তিষ্কের তরঙ্গের রেকর্ড থেকে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের স্মৃতি ও স্মৃতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে জড়িত ক্ষেত্রসমূহ মৃত্যুর কিছু পরে সক্রিয় ছিল।
মৃত্যুর ঠিক আগে ধারণ করা মস্তিষ্কের তরঙ্গের দৈর্ঘ্য