ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বাড়ানো উচিত
Published: 8th, February 2025 GMT
ব্যবসাসংক্রান্ত নীতিনির্ধারণে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানো উচিত। তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বাড়ানো দরকার। সে জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করতে পারে। সেখানে সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। নীতিনির্ধারণে ব্যবসায়ীদের কথা বলার জন্য এমন প্ল্যাটফর্ম রাখা দরকার।
ওই কমিটিকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ব্যবসা সহজ করার জন্য সংস্কারগুলো করা যেতে পারে। এই সময়সীমা হতে পারে তিন বছর; এ ছাড়া ওই কমিটির আওতায় ব্যাংক, বিনিয়োগ, শুল্ক-করসহ বিভিন্ন খাতে একাধিক উপকমিটি করা যায়। শুধু সুপারিশ দেওয়া নয়, ওই সব সুপারিশ বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কাজ করতে হবে।
এসব কমিটি ব্যবসা ক্ষেত্রে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান খুঁজবে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের সমস্যার কথা বলতে পারবেন। আলোচনার ভিত্তিতে যেকোনো সমস্যা সমাধান করা হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে। নীতিনির্ধারণে ব্যবসায়ীরা নিজেদের অংশীদার মনে করবেন। সে জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানো উচিত। প্রতি মাসে কিংবা প্রতি তিন মাসে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক হতে পারে। সার্বিকভাবে অর্থনীতি ভালো রাখতে হলে ব্যবসা ভালো রাখতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গত ছয় মাসের মূল্যায়ন করলে দেখা যাবে, ব্যবসায় ক্ষেত্রে নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেক দিনের জট খুলতে সরকারের সময় লাগছে; এই সময়টুকু সরকারকে দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) বিভিন্ন খাতে দক্ষ লোক বসানো হয়েছে। এটি বেশ ইতিবাচক। এনবিআরের সংস্কার কমিটি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করেছে। ব্যবসায়ীদের অনেক সুপারিশ অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে রাখাও হয়েছে।
এখনো সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, যে কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়েছে। ফলে ব্যবসার ঋণের খরচ বেড়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ বেড়েছে। অন্যদিকে ভ্যাট বাড়ানোর ফলে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম বাড়ছে, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া জ্বালানির দাম ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংকটে আছে।
দেশের বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি। কর্মসংস্থান বাড়াতে হলে ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা।
আবুল কাশেম খান: সাবেক সভাপতি
ঢাকা চেম্বার
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিলের মেয়াদ গত ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়েছে। পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি উন্নয়নে তথা আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন এবং এই তহবিল হতে বিনিয়োগের বিষয়ে অনুসরণীয় নীতিমালা প্রদান করা হয়। এ তহবিলের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়। তবে ২০২১ সালে এক সার্কুলার অনুযায়ী এ তহবিলের আওতায় বেসরকারি উদ্যোক্তার নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য স্পেশাল পারপাস ভেহিকলের ইস্যুকৃত গ্রীন সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজারে বিরাজমান অস্থির অবস্থার প্রেক্ষাপটে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজন ও বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোর মতামত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব পর্যালোচনায় পরিস্থিতি উন্নয়নে তথা আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ নিম্নোক্ত শর্তাধীনে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
তিন পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাংক বন্ধ ১৩ এপ্রিল
বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি
বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে বিশেষ তহবিলের বিনিয়োগ স্থিতি ক্রমান্বয়ে হ্রাসকল্পে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এ সার্কুলার জারির ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশনে দাখিল করতে হবে। এই কর্মপরিকল্পনা যথা সময়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদপূর্তীতে এ তহবিলের অবশিষ্ট বিনিয়োগ (যদি থাকে) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ক ধারা অনুসারে সলো এবং কনসোলিডেটেড উভয় ভিত্তিতে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ কোষের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। আবশ্যিকভাবে টোটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন ক্যাপিটাল মার্কেট নামে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিবরণীতে রিপোর্ট করতে হবে।
বিশেষ তহবিলের মেয়াদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে-বাংলাদেশ ব্যাংক হতে রেপো সুবিধার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে এই সার্কুলারের সময়সীমা ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে গৃহীত রেপো সুবিধা পুনঃনবায়নের ক্ষেত্রে এই সার্কুলারের সময়সীমা ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ হবে। বিশেষ তহবিলের আওতায় গঠিত ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওর বাজারভিত্তিক পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে উক্ত সার্কুলারের সময়সীমা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ হবে। এই সার্কুলারে বর্ণিত বিশেষ তহবিলের আওতায় ব্যাংকের সাবসিডিয়ারী কোম্পানির নিজস্ব পোর্টফোলিও গঠনের জন্য প্রদান করা চলমান ও আবর্তনশীল ঋণ সীমার সর্বোচ্চ মেয়াদ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ নভেম্বর ২০২৬ এবং এই পোর্টফোলিওর বাজার ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন সংক্রান্ত সময়সীমা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ হবে।
ঢাকা/এনএফ/এসবি