এক্সপ্রেসওয়েতে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালেই মামলা
Published: 8th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ট্রাফিক বিভাগ মামলা দায়ের করবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই দেওয়া হবে মামলা। তিনবারের বেশি মামলা হলে গাড়িগুলো নিষিদ্ধ করা হবে এক্সপ্রেসওয়েতে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজধানীর খিলক্ষেতে এক্সপ্রেসওয়ের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফাস্ট ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ের কোম্পানি লিমিটেডের যান চলাচল সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ক্যাপ্টেন হাসিব হাসান খান (অব:)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপদ ব্যবহারে নীতিমালা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত গতি দুর্ঘটনার কারণ তাই এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল নির্ধারিত গতিসীমার মধ্যে রাখতে হবে।
ক্যাপ্টেন হাসিব হাসান খান (অব:) বলেন, ভিডিও নজরদারির মাধ্যমে গতিসীমা রেকর্ড করা হবে। নির্ধারিত গতিসীমা অতিক্রম করলে মামলা করা হবে। বেপরোয়া গতিতে যান চলাচল করলে এবং একই গাড়ি তিনবারের বেশি গতিসীমা লঙ্ঘন শনাক্ত হলে ভবিষ্যতে ওই গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, সুশৃঙ্খল ট্রাফিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সবসময় নির্ধারিত লেনের মধ্যে গাড়ি চলাচল করতে হবে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া লেন পরিবর্তন করা হলে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি থামানো বা পার্কিং করা যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যান চলাচলে গাড়ি বা মেশিনারিজ ত্রুটি বা অন্য যে কোনো সমস্যা দেখা গেলে জরুরি লেনে যেতে হবে এবং দ্রুত এক্সপ্রেসওয়ের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। টোল প্লাজা, টোল সংগ্রহের বুথ, লেন এবং এর এক্সপ্রেসওয়ের অবকাঠামোগত যে কোনো ক্ষতির জন্য যানবাহনের মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
এছাড়া উন্মুক্ত যান, অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া নির্গত করে এমন যানবাহন, যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে এমন খোলা যানবাহন, নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করে অনুপযুক্তভাবে সুরক্ষিত পণ্যবাহী যান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করবেন।
এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামানো সম্পূর্ণ নিষেধ। কোনো যাত্রীবাহী বাস অথবা অন্য কোনো যানবাহন যদি এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামান তাহলে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটা যানবাহন একটির সঙ্গে আরেকটির নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে ২৪ ঘণ্টা টহল অফিসার এবং নিরাপত্তাকর্মী যে কোনো সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকবেন।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: গত স ম
এছাড়াও পড়ুন:
কথা নহে, কাজ চাহি
অপরাধ দমনে স্বীয় বাহিনীর মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশে মহাপুলিশ পরিদর্শক- আইজিপি যেই শক্ত বার্তা দিয়াছেন, উহা গুরুত্বপূর্ণ বলিয়া আমরা মনে করি। রবিবার ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারের সহিত ভার্চুয়াল বৈঠক করিয়া আইজিপি তাহাদিগকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা দলবদ্ধ সহিংসতাসহ যেই কোনো প্রকার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি শক্তভাবে মোকাবিলার নির্দেশ দিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, কেহ অপরাধে সংশ্লিষ্ট হইলে দল-মত-গোষ্ঠী পরিচয় না দেখিয়া তাহার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ লইতে হইবে। সাম্প্রতিক সময়ে খোদ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নজিরবিহীন যেই মব ভায়োলেন্সের সম্প্রসারণ ঘটিয়াছে, কথিত নৈতিক পুলিশির নামে নারী হেনস্তা চলিতেছে, এমনকি একাদিক্রমে নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনা জনসমক্ষে আসিতেছে, প্রধানত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনীগুলির নিষ্ক্রিয়তা এহেন পরিস্থিতির জন্য দায়ী। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানির ন্যায় অপরাধের বাড়বাড়ন্তের পশ্চাতেও একই কারণকে দায়ী করা যায়। এই অবস্থায় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধান বাহিনীর সর্বোচ্চ মহল হইতে আলোচ্য নির্দেশনা নিঃসন্দেহে পুলিশের মাঠ প্রশাসনের আত্মবিশ্বাস ফিরাইয়া দিতে পারে।
মুশকিল হইতেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শক্ত হস্তে নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা পুলিশপ্রধানের পূর্বে আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, এমনকি সরকারের শীর্ষ মহলের নিকটেও শুনিয়াছি, যাহার প্রভাব মাঠ পর্যায়ে কার্যত পরিলক্ষিত হয় নাই। বরং বিভিন্ন স্থানে পুলিশের উপরই আক্রমণ সংঘটিত হইতেছে। পুলিশ হেফাজত হইতে আসামি ছিনাইয়া লইবার একাধিক ঘটনা অথবা একই উদ্দেশ্যে থানা ঘেরাওয়ের ঘটনাও ঘটিয়াছে। এই সকল ঘটনায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের আহত হইবার উদাহরণও বিরল নহে। আমরা মনে করি, শীর্ষ মহল হইতে যতই নির্দেশনা প্রদান করা হউক; সাধারণ পুলিশ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধি করিতে না পারিলে, আরও স্পষ্ট করিয়া বলিলে, আইন প্রদত্ত কর্তৃত্ব ফিরিয়া না পাইলে পুলিশকে প্রত্যাশিত মাত্রায় সক্রিয় করা কঠিনই থাকিবে। পুলিশের কর্তৃত্ব ফিরাইয়া দিবার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হইল সকল প্রকার বাহ্যিক হস্তক্ষেপমুক্তভাবে বাহিনীটিকে আইন ও বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।
দুঃখজনক, পূর্বসূরিদের ন্যায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বাস্তব পরিস্থিতি অস্বীকারের প্রবণতা দৃশ্যমান, যাহা পুলিশের মধ্যেও ফৌজদারি অপরাধের ঘটনা লুক্কায়িত করিবার প্রবণতা সৃষ্টি করিতে পারে। সরকারের শীর্ষ মহল হইতে যেই কোনো অপরাধজনক ঘটনার জন্য বিশেষ কোনো দল বা মহলকে দায়ী করিবার যেই প্রবণতা পরিলক্ষিত হইতেছে, উহাতে দোষারোপের পুরাতন ক্রীড়া অব্যাহত রাখিতে পারিলেও জননিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা রাখে না। অস্বীকার করা যাইবে না, বিশেষত গত আগস্ট হইতে অদ্যাবধি পুলিশের উপর যত প্রাণঘাতী হামলা হইয়াছে; বাহিনীটির যত স্থাপনা ধ্বংস করা হইয়াছে, সেই সকল ঘটনার তদন্ত হয় নাই; অপরাধীদেরও আইনি বেষ্টনীতে আনা হয় নাই। ইহা বাহিনীটির মনোবল ফিরাইয়া আনিবার পথে প্রতিবন্ধকতাস্বরূপ– এই বিষয়ও সরকারকে অনুধাবন করিতে হইবে। দায়িত্ব পালনে পুলিশকে যে এখনও বিভিন্ন মহল বাধা প্রদানে দুঃসাহস পাইতেছে, উহারও উৎস এইখানে নিহিত।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেই অবনতি ঘটিয়াছে, তাহা শুধু নাগরিকদের জীবন ও সম্পদকেই বিপন্ন করিতেছে না; জাতীয় অর্থনীতির জন্যও ভয়ংকর পরিণামকে আহ্বান জানাইতে পারে। এহেন অবস্থায় একদিকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস, অন্যদিকে বৈদেশিক বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব পড়িতে পারে। ফলে শুধু নির্দেশনা জারি নহে, এখন সময় উক্ত নির্দেশনা বাস্তবে রূপায়ণের। এই বিষয়টিই দেশের নীতিনির্ধারকগণ উপলব্ধি করিবেন বলিয়া আমরা প্রত্যাশা করি। তৎসহিত বর্তমান সমাজেও বিশেষ করিয়া তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতার বিরুদ্ধে যে জাগরণ দৃশ্যমান, উহাও অব্যাহত রাখিতে হইবে। আমরা জানি, যে কোনো পরিবর্তনে নাগরিক সচেতনতাই প্রাথমিক গতি সঞ্চার করে।