রাজধানীর ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের সামনে একটি ব্যাগে ককটেলসদৃশ বস্তু দেখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেছে পুলিশ। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশকে এ খবর জানানো হয়।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।

বোম ডিসপোজাল ইউনিটের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বস্তুগুলো ককটেল কি না, সে বিষয়ে জানা যাবে।মো.

ইবনে মিজান, ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার

ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে আনন্দ সিনেমা হলের সামনের ফুটপাতে একটি কালো ব্যাগে ককটেলসদৃশ বস্তু রয়েছে, স্থানীয় ব্যক্তিরা এমন খবর পুলিশকে দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে। বস্তুগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য ডিএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে।

ডিসি ইবনে মিজান আরও বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বস্তুগুলো ককটেল কি না, সে বিষয়ে জানা যাবে।

ব্যাগে বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়ার খবরে ফার্মগেটে উৎসুক জনতার ভিড়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকে নির্বাচনী প্রচারে বিধি ভাঙলেও সাজা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অনলাইনে কীভাবে প্রচার করা যাবে, প্রচারে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হলে তার শাস্তি কী হবে—সেসবও যুক্ত করা হচ্ছে আচরণবিধিতে।

ইসির সংশ্লিষ্ট একটি কমিটি বিদ্যমান আচরণবিধির খসড়া অনেকটা চূড়ান্ত করেছে। খসড়াটি চূড়ান্ত করার পর তা নির্বাচন কমিশনের সভায় উপস্থাপন করা হবে। কমিশনে অনুমোদন পাওয়ার পর ইসি নতুন এ আচরণবিধি প্রণয়ন করতে পারবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও তাদের প্রতিবেদনে ২০০৮ সালে করা ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা’ সংশোধন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারসহ কিছু বিষয় যুক্ত করার সুপারিশ করেছিল।

নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ, সভা, মিছিল, মাইকিং, পোস্টার লাগিয়ে প্রচারের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবসহ ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রার্থীরা প্রচার চালিয়ে থাকেন। তবে অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বিধিবিধান এখন নেই। ২০০৮ সালে তৈরি করা আচরণবিধি সংশোধন করে এবার তা যুক্ত করা হচ্ছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের নির্দিষ্ট সময়ের আগপর্যন্ত রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও সমর্থকেরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেন। তবে দল ও প্রার্থী প্রচারের সময় কী কী করতে পারবেন আর কী কী করতে পারবেন না, তা নির্ধারণ করা আছে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায়। কোনো প্রার্থী আচরণবিধি না মানলে জেল–জরিমানার পাশাপাশি প্রার্থিতাও বাতিল করতে পারে ইসি।

নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ, সভা, মিছিল, মাইকিং, পোস্টার লাগিয়ে প্রচারের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবসহ ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রার্থীরা প্রচার চালিয়ে থাকেন। তবে অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বিধিবিধান এখন নেই। ২০০৮ সালে তৈরি করা আচরণবিধি সংশোধন করে এবার তা যুক্ত করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসি প্রাথমিকভাবে আচরণিবিধির যে খসড়া তৈরি করছে, সেখানে ‘ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা’ শিরোনামে একটি ধারা রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা অন্য কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা ওই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্য প্রচার শুরুর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে।

ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে সব ধরনের অনলাইন প্রচারণা বন্ধ করতে হবে।

তবে অনলাইনে প্রচারের ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারের সময় ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি, কোনো ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে—এ ধরনের বক্তব্য বা বিবৃতি দেওয়া, কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না। ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে সব ধরনের অনলাইন প্রচারণা বন্ধ করতে হবে।

এ ছাড়া খসড়ায় বলা হয়েছে, দল ও প্রার্থী বা তাঁদের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি, বিজ্ঞাপন, বুস্টিং, স্পনসরশিপসহ সব ডিজিটাল প্রচারণার ব্যয় নির্বাচনী ব্যয়ের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। অনলাইনের ব্যয় প্রার্থীর মোট নির্বাচনী ব্যয়সীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে বিদেশি অর্থায়নে বিজ্ঞাপন বা প্রচার করা যাবে না।

অনলাইনে প্রচারের ক্ষেত্রে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এ ক্ষেত্রে জেল–জরিমানার পাশাপাশি সাইবার সুরক্ষা আইন বা নির্বাচনের সময় কার্যকর থাকা এ ধরনের আইনের আওতায় সাজার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে খসড়ায়। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও এসব ক্ষেত্রে প্রায় অভিন্ন সুপারিশ করেছিল।

গত সোমবার নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের বলেন, আচরণবিধির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের প্রায় সব কটি আচরণবিধির খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের বিষয়টিও আচরণবিধির খসড়ায় রাখা হয়েছে বলে তিনি সেদিন জানিয়েছিলেন।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন নির্বাচন–বিশেষজ্ঞ আব্দুল আলীম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যমান নির্বাচনী আচরণবিধি ২০০৮ সালে করা। সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অনলাইন মাধ্যমের অতটা প্রভাব ছিল না। যেহেতু এখন ডিজিটাল যুগ, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার চালানো হবে, সেটাই স্বাভাবিক। বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, প্রার্থীরা অনলাইনে ব্যাপক প্রচার চালান। কিন্তু নির্বাচনী ব্যয়ে সে খরচ দেখান না। এসব মিলিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের বিষয়টি একটি বিধি বা নীতিমালার মধ্যে আনা উচিত। এ কারণে সংস্কার কমিশন এ–সংক্রান্ত সুপারিশ করেছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ