তামিমের কাছে গত আসরের শিরোপাটাই বেশি তৃপ্তির
Published: 8th, February 2025 GMT
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বিপিএল ফাইনাল ম্যাচ শুরু হওয়ার আগ থেকেই ক্রিকেটপ্রেমীদের একটাই কৌতুহলী প্রশ্ন। তামিম ইকবাল কী নিজের নাম লেখাতে পারবেন মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং ইমরুল কায়েসের পাশে? সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তামিমও উঠে গেলেন ম্যাশ-কায়েসদের এলিট ক্লাবে। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পর এখন ফরচুন বরিশালও যে টানা দুই বিপিএলে সেরা। তবে বরিশাল অধিনায়ক তামিমের কাছে নাকি হিসেবে দ্বিতীয় গত মৌসুমের প্রথম শিরোপাটাই বিশেষ।
বিপিএলের ২০২৪ সালের আসরে প্রথমবারের মত বরিশালে নাম লেখান তামিম। সাথে ছিলেন জাতীয় দলের দীর্ঘদিনের সতীর্থ মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এই তিনজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছাড়াও মেহেদি হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং তাইজুল ইসলামের মত জাতীয় দলের একঝাঁক ক্রিকেটার খেলেছিলেন বরিশালে।
আরো পড়ুন:
মিরাজ ম্যান অব দ্য বিপিএল, কে জিতলেন কোন পুরস্কার
বিপিএলের রোল অব অনার
তবে দলটিতে ডেভিড মিলার ছাড়া বড় নামের বিদেশী কেউ ছিলেন না। কিলার খ্যাত মিলারও খেলেছিলেন শেষ কয়েকটা ম্যাচ। তবে কাইল মায়ার্স ছিলেন আসরের শুরু থেকেই। অন্যদিকে জেমস ফুলার এবং ওবেড ম্যাকয়ের মত কার্যকরী বিদেশীরা যোগ দিয়েছিলেন শেষের দিকে।
এতকিছুর পরও কুড়ি ওভারের সংস্করণের উপযোগী দেশি ক্রিকেটার বেশি ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এবং রংপুর রাইডার্সের। অন্যদিকে এই দুই দলের বিদেশি কোটায় খেলেছিল আইপিএল-বিগ ব্যাশ কাঁপানো সব ক্রিকেটাররা। সে তুলনায় খানিকটা পিছিয়েই ছিল বরিশাল। তবে দলটির ম্যানেজম্যান্ট থেকে ক্রিকেটার, সবাই ছিলেন এক সুতোয় গাঁথা। অন্যদিকে তামিমের নেতৃত্বগুণে ফেভারিট কুমিল্লাকে হারিয়ে বিপিএলে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় বরিশাল।
২০২৪ এর বিপিএলের বরিশাল প্রথম চার ম্যাচে মাত্র একটি জিতে শুরুতেই চাপে পড়েছিল। পরে লিগ পর্বের শেষ পাঁচ ম্যাচে চারটি জিতে তৃতীয় হয়ে প্লে-অফের টিকেট নিশ্চিত করে তারা। দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে সে কথায় উঠে এসেছে তামিমের কন্ঠে, “আমার কাছে মনে হয়, গতবারের যাত্রাটা ছিল এপিক! সেটি আমার হৃদয়ের খুব খুব কাছের। কিছু দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, সেবার অর্ধেক টুর্নামেন্ট থেকেই আমরা বাদ পড়ার এক ম্যাচ দূরে ছিলাম। সেখান থেকে জিততে জিততে সেমি-ফাইনালে (প্লে-অফে) এসে পুরোপুরি ভিন্ন দল হয়ে যাওয়া। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে মেয়ার্সের অবদান অসাধারণ ছিল। এমনকি আজকেও। তো ওই ট্রফিটা জেতা.
পরিসংখ্যান বলছে গতবছরের সঙ্গে বরিশালের এবারের পারফরম্যান্সেরও বিস্তর ব্যবধান। এই ব্যাপারটাও যোগ করেলেন তামিম, “এই বছর আমরা আসরজুড়ে দাপট দেখিয়েছি। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দুই ম্যাচ ও চিটাগং কিংসের বিপক্ষে এক ম্যাচ শুধু (হেরেছে)... এর বাইরে পুরো টুর্নামেন্ট আধিপত্য দেখিয়েছি। আমাদের যখন ১৭০-১৮০ রানের চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছে, খুব ভালো রেসপন্স করেছি। আজকেও, খুলনার সঙ্গেও। এটিও বিশেষ অনুভূতির। তবে দুটির মধ্যে বেছে নিতে বললে আমি সবসময় প্রথমটি নেবো।”
দুবারই শিরোপা জয়েই দারুণ অবদান রেখেছেন তামিম। গত আসরের সর্বোচ্চ ৪৯২ রান ছিল এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। এবারের ফাইনালে দুইশ ছুঁই-ছুঁই রান তাড়া করতে নেমে চিটাগংয়ের পেসার বিনোরা ফার্নান্দোকে যেভাবে চার্জ করে খেললেন তাতেই ম্যাচের মোমেন্টাম বদলে গিয়েছে। বিনোরা এবারের আসরের সবচেয়ে কৃপণ বোলার ছিলেন। অন্যদিকে তামিম ২০২৫ আসরে করেছেন ৪১৩ রান।
“আমার কথা... আমার মনে হয়, অন্যটি (২০২৪ সালের) ভালো ছিল। বিশেষ করে এই কারণে যে... যা কিছু ঘটেছিল, এরপর যেভাবে ফিরে এসেছি, আমি রান করেছি। প্রায় সব পুরস্কার মনে হয় পেয়েছিলাম। সেটি বিশেষ ছিল। তবে আজকের ইনিংস... এই ধরনের ইনিংস আমাকে বিশ্বাসটা দেয় আমার মধ্যে এখনও (ভালো করার সামর্থ্য) আছে।”
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ত ম ম ইকব ল ব প এল আসর র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের ভূমিকা অবিস্মরণীয়: চরমোনাই পীর
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের ভূমিকা অবিস্মরণীয় বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহাসিক লালদিঘী ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মসগানগরের নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসের কিংবদন্তিতুল্য আখ্যান। দেড় হাজারের অধিক নিহত এবং ৩০ হাজারের অধিক আহত ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশে সৃজিত হয়েছে নতুন ইতিহাস। যুগান্তকারী এই ইতিহাস বিনির্মাণে অংশ নিয়েছে জাতি-ধর্ম-শ্রেণি-পেশা-নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আলেম-উলামা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাও। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
ফয়জুল করীম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে বৈষম্য দূর করে কোটা সংস্কারের দাবিতে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। ইসলামও সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং যৌক্তিক সংস্কারের পক্ষে। একই সঙ্গে সব ধরনের জুলুম ও বিশৃঙ্খলার বিপক্ষে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যেমন আলেম সমাজের অভিভাবক মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর ঘোষণা করেছিলেন, ‘এই যুদ্ধ জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রাম’, তেমনি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানেও রাজপথে রক্তের স্রোত প্রবাহিত করে দেশের আলেম সমাজ এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। দেশের আলেম সমাজ ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যেভাবে রক্ত দিয়েছেন, তেমনি ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানেও শতাধিক আলেম ও মাদরাসা শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন, অঙ্গ হারিয়েছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুমার খুতবা দেওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায়। এ ছাড়া সারা দেশে অসংখ্য আলেম শারীরিকভাবে নিগৃহীত হয়েছেন।
ইসলামের পক্ষে একটি ভোট বাক্সের জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ছাড় দিতেও প্রস্তুত। আর একমাত্র সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতীয় সরকার গঠন সম্ভব বলে জানান শায়খে চরমোনাই।
নগর সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারি আলহাজ্ব আল মুহাম্মদ ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নগর সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার হোসাইন সাকী প্রমুখসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলন শেষে প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের ২০২৫-২০২৬ সেশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।
বিএইচ