Samakal:
2025-02-08@11:11:32 GMT

মেয়েদের অপেক্ষায় রাখার কৌশল

Published: 8th, February 2025 GMT

মেয়েদের অপেক্ষায় রাখার কৌশল

নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহ শুরু গত ২৮ জানুয়ারি। কোচ পিটার বাটলারের অধীনে সাবিনা খাতুনদের অনুশীলন বয়কট গতকাল পর্যন্ত ছিল। সব মিলিয়ে ১১ দিন ট্রেনিংয়ের বাইরে নেপালে সাফজয়ী মেয়েরা। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে গড়িয়েছে, তাতে শিগগিরই অনুশীলনে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাদের। 

এই কয়েকদিন পিটার বাটলার ত্রিশের ওপর মেয়েকে নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য বাটলার স্কোয়াড চূড়ান্ত করবেন ৩৩ জনের মধ্য থেকে। যেখানে বিবেচনায় নেই বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। তার মানে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চের ম্যাচে থাকছেন না সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমারা। 

অনুশীলনে না থাকায় তাদের ছুটিতে পাঠানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জটিলতা আরও বাড়ার আশঙ্কা বেশি। তবে আমিরাত সিরিজে না রাখলেও মেয়েদের একেবারে ঝেড়ে না ফেলে অপেক্ষায় রাখার কৌশলে হাঁটছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। তাদের চলমান আন্দোলন সমাধানে ধীর চলো নীতিতে এগোতে চায় দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

গত মধ্য জানুয়ারিতে সাফজয়ী খেলোয়াড়রা বাফুফে ক্যাম্পে যোগ দেন। বাটলারের পাঠানো পরিকল্পনায় দেশীয় কোচদের অধীনে অনুশীলনও চালিয়ে যান তারা। দৃশ্যপটে বাটলার আসার পরই সাবিনার নেতৃত্বে আন্দোলনে নামেন মেয়েরা। যেটি এখনও চলমান। তাদের বিদ্রোহ এমন সময় শুরু হয়েছে, যখন আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের সবকিছুই চূড়ান্ত করে ফেডারেশন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার কথা বাংলাদেশ নারী দলের। 

*আমিরাত সফরে বাদ বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার
*সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ক্যাম্প থেকে বিদ্রোহী মেয়েদের ছুটি দেওয়া হতে পারে
*সিনিয়র কয়েক ফুটবলারের নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, তারাই অন্য মেয়েদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
*কোচেরও বাংলাদেশের সংস্কৃতি, এই মেয়েদের মাইন্ডসেট– এই ব্যাপারে আরেকটু সচেতন হওয়া উচিত
*নারী উইং আরেকটু পেশাদার হতে পারত, এই ঘটনায় তাদের ব্যর্থতা চোখে পড়েছে।

সাবিনাদের আন্দোলনের কারণে সফরটি যেন নষ্ট না হয়, তাতে তড়িঘড়ি করে অনূর্ধ্ব-২০ বয়সী ফুটবলারদের ক্যাম্পে ফেরাতে থাকে ফেডারেশন। এটা তাদের প্ল্যান ‘বি’র একটি অংশ। ২০ দিনও বাকি নেই আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ হতে; একই সঙ্গে বিদ্রোহী ফুটবলারদের সঙ্গে সমঝোতাও এখন পর্যন্ত হয়নি, তাই বাটলারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাকিদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত দল গঠন করতে। 

নিজেদের এমন পরিকল্পনার কথা শুক্রবার সমকালের সঙ্গে বলেছেন বাফুফের এক কর্মকর্তা, ‘সত্যি বলতে কী বর্তমান যে পরিস্থিতি আর অনুশীলনের মধ্যে না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই এই মেয়েরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের দলে ঢুকতে পারবে না। কোনো কারণে সব ঠিক হয়ে গেল, কালকে থেকে ওরা ট্রেনিং শুরু করল, সেটা হলে অন্য কিছু হতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে এদের আরব আমিরাত দলে ঢোকা খুবই কঠিন।’ 

বিদ্রোহী ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন নেপালে সাফ শিরোপাজয়ী দলে। তাহলে এত অভিজ্ঞ ফুটবলারদের বাদ দিয়ে খেলাটা কতটা যৌক্তিক? ‘ওরা ট্রেনিংয়ে নেই। এই ক্ষেত্রে সভাপতিরও করার কিছু আছে বলে দেখছি না আমি।’

মেয়েদের বাদ দিলে পরিস্থিতিতে যে আরও ঘোলাটে হবে, তা বুঝতে পারছেন বাফুফে কর্তারা। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার নারী ফুটবল দলকে একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন করার পর তো কৌশল পরিবর্তন করতে হচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। বিশেষ কমিটির রিপোর্ট এখন সভাপতি তাবিথ আউয়ালের টেবিলে। তাঁর এখতিয়ার আছে এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু সামনে যেহেতু আমিরাত সফর, তাই অনেক কিছু ভেবেই এগোতে হচ্ছে ফেডারেশনকে। 

বিশ্বস্ত সূত্রে যতটুকু জানা গেছে, ছুটিতে পাঠানোর আগে মেয়েদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করবে বাফুফে। তাদের বোঝানো হবে যেহেতু তারা ট্রেনিংয়ের মধ্যে নেই, আমিরাতের মতো দলের বিপক্ষে খেলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত নন তারা। তাই আমিরাত সফরে নতুনদের পরখ করে দেখবে বাফুফে। আর মেয়েদের সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়েও আলোচনার পথ উন্মুক্ত রাখবে ফেডারেশন। যেহেতু সমস্যাটা বাটলারকে ঘিরে, তাই বাফুফে চাচ্ছে আমিরাত সফর শেষ করে এ সমস্যার সুরাহা করতে। আবার এমনও হতে পারে এর আগেই কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বাফুফে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ফ টবল আম র ত স পর স থ ত ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্রে প্রাণরসায়নবিদদের ঘাটতি ৯৩ শতাংশ

দেশের হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলোতে ৯৩ শতাংশ প্রাণরসায়নবিদদের ঘাটতি রয়েছে। কাজেই দেশে রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান দুর্বলতার অন্যতম কারণ হিসেবে সঠিক ব্যক্তিকে কাজের সুযোগ না দেওয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।

প্রস্তাবিত ‘স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইনের’ একটি ধারা বাতিল ও ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্টদের সাত দফা দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্টস। এতে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বেশ কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ল্যাবরেটরি প্রধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

মূল প্রবন্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্টসের যুগ্ম আহবায়ক ফাতেমা খান মজলিস বলেন, দেশজুড়ে ৬৩৯টি সরকারি হাসপাতাল, ৫ হাজার ৫৭৭টি বেসরকারি হাসপাতাল, ১০ হাজার ৭২৭টি রোগনির্ণয় কেন্দ্র এবং ১৪০টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। অথচ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কোনো সরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে একজনও প্রাণরসায়নবিদ নেই। প্রাণরসায়নবিদদের হয়ে রোগ নির্ণয়ের কাজ করেন টেকনিশিয়ানরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ২০ হাজার প্রাণরসায়নবিদ দরকার। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংকগুলোয় রোগনির্ণয়ে কাজ করেন মাত্র ১ হাজার ৪০০ জন প্রাণরসায়নবিদ। ৯৩ শতাংশ প্রাণরসায়নবিদদের ঘাটতি নিয়ে চলছে দেশের হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্রগুলো।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হোসেইন উদ্দিন শেখর বলেন, নীতিনির্ধারকদের অজ্ঞতার কারণে ‘স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইনে’ প্রাণরসায়নবিদদের প্রতি অবজ্ঞা করা হয়েছে। চিকিৎসকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। রোগনির্ণয়ের কিছু কাজ আছে, সেগুলো শুধু প্রাণরসায়নবিদেরা করতে পারেন।

প্রস্তাবিত ‘স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইনের’ ধারা ৯–এর ৪ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘সব ল্যাবরেটরি ও রেডিওলজি রিপোর্টে বিএমডিসি রেজিস্টার্ড বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বাক্ষর থাকতে হবে।’ মূল উপস্থাপকসহ প্রায় সব আলোচক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, এ ধারা বৈষম্যমূলক, অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক।

আরও পড়ুনরোগনির্ণয়ে বায়োকেমিস্টদের অবদান সরকারিভাবে উপেক্ষিত২৩ জানুয়ারি ২০২৫

অনলাইনে আলোচনায় যুক্ত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিটিকে এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্র ও মলিকুলার বায়োলজির শিক্ষার্থী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ দেশে মেধা পাচার হওয়ার প্রধান কারণ কাজ করতে না দেওয়া। আমার জায়গা আমাকে দেন। আপনারা নিজেদের জায়গায় কাজ করুন।’

আয়োজকদের সাত দফা দাবির মধ্যে আছে—স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন থেকে বিতর্কিত ধারা বাদ, প্রাণরসায়নবিদদের জন্য নীতিমালা তৈরি, সব ল্যাবরেটরিকে অ্যাক্রিডিটেশনের আওতায় আনা, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রাণরাসায়নবিদ ও ল্যাবরেটরি সায়েন্টিস্ট নিয়োগ, জেলা পর্যায়ে এ ধরনের পদ সৃষ্টি, নীতি নির্ধারণে প্রাণরসায়নবিদ অন্তর্ভুক্ত করা এবং অর্গানোগ্রামের মাধ্যমে পদোন্নতির পথ খোলা রাখা।

আরও পড়ুনমানুষের রোগও নির্ণয় করতে পারে চ্যাটজিপিটি১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে মাত্র ৯টি প্রতিষ্ঠানের রোগনির্ণয় সক্ষমতা ও যোগ্যতা আন্তর্জাতিকভাব স্বীকৃত। এসব প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি পরিচালনা করেন প্রাণরসায়নবিদেরা। দেশের কোনো সরকারি হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানের রোগনির্ণয়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই।

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিয়ার রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) সোহেল আহমেদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনঅনলাইনে রোগনির্ণয়: ‘ডা. গুগল’ থেকে সাবধান৩১ অক্টোবর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ