যুক্তরাষ্ট্রের পেমেন্ট ব্যবস্থায় মাস্কের বিভাগকে ঢুকতে না দিতে মামলা
Published: 8th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডজ) যাতে যুক্তরাষ্ট্রের পেমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে মামলা করেছে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্য। ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর এক জোট শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ মামলা করেছে। এই পেমেন্ট সিস্টেম দিয়ে লাখ লাখ কোটি ডলারের লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ হয়।
নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমসের নেতৃত্বাধীন ১৯টি অঙ্গরাজ্যের এই জোটের দাবি, মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই ডজের মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সিস্টেমে প্রবেশ করার আইনগত অধিকার নেই। এ ব্যবস্থায় কোটি কোটি মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষিত আছে। খবর রয়টার্সের।
১৯টি অ্যাটর্নি জেনারেলরা বলেছেন, ডজ এই সিস্টেমে প্রবেশের অনুমতি পেলে বড় ধরনের সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। অঙ্গরাজ্যগুলোর জন্য বরাদ্দ বিপুল পরিমাণ অর্থায়ন এবং তাদের বাসিন্দাদের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেছেন অ্যাটনরি জেনারেলরা। হোয়াইট হাউস ও ট্রেজারি বিভাগ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ম্যানহাটানের ফেডারেল আদালতে করা মামলায় বলা হয়েছে, মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই বিভাগ ফেডারেল তহবিল বিতরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রি-স্কুল, জলবায়ু উদ্যোগ ও অন্যান্য কর্মসূচি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই তথ্য ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারেন।
সরকারি ব্যয় হ্রাস ও আমলাতন্ত্রের রাশ টেনে ধরতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্ককে ডজের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে মাস্কের এই কার্যক্রম কী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে ডেমোক্র্যাটসহ ভিন্ন অধিকারভিত্তিক সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছে, মাস্ক ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলো ভেঙে ফেলার চেষ্টার পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক ফেডারেল কর্মী ছাঁটাই করতে চাইছেন।
মামলায় ট্রাম্প ও ট্রেজারি বিভাগকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জেমসের সঙ্গে এই মামলায় ক্যালিফোর্নিয়া, ইলিনয়, ম্যাসাচুসেটস, ওয়াশিংটন ও নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেলরা যোগ দিয়েছেন।
ইউনিয়নগুলোর করা আরেকটি মামলার অভিযোগ, মাস্কের দল গোপনীয়তা–সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করছে। বৃহস্পতিবার এক ফেডারেল বিচারক ট্রেজারি বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন, শুধু দুজন ‘বিশেষ সরকারি কর্মচারী’ এই সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারবে এবং তাদের প্রবেশাধিকার কেবল ‘রিড-অনলি’, অর্থাৎ তাদের শুধু পড়ার অনুমতি থাকবে।
এ ছাড়া ডজ যাতে শ্রম বিভাগ ও শিক্ষা বিভাগের তথ্যভান্ডারে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য আরও কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। যদিও বিচারক এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমিয়ে সরকারি ব্যয় হ্রাসের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েক লাখ কর্মচারীকে প্রণোদনার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
তবে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন দেশটির এক বিচারক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বাসায় নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
এক নারীকে টাকা দিয়ে সাহায্য করার কথা বলে বাসায় নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ফাহিম হাসান নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব–১০ একটি দল নগরীর মাতুয়াইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে ওই নারী ৭ মার্চ রাজধানীর কদমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। মামলায় এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ জন্য ৫ মার্চ তিনি (স্বামী) প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গ্রামের বাড়িতে যান। ওই সময় কয়েক দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হওয়া প্রিন্স নামের এক টিকটক আইডি থেকে তাঁকে (নারী) বারবার খুদে বার্তা পাঠানো হচ্ছিল। সে সময় তিনি জানান, তিনি সমস্যায় আছেন, তাঁর স্বামীর বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা প্রয়োজন। তখন ওই আইডি থেকে বলা হয়, তাঁর মা সুদে টাকা ধার দেন। তিনি ব্যবস্থা করে দেবেন। এরপর বেলা একটার দিকে প্রিন্স নামের ওই যুবক এসে তাঁকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান।
এজাহারে আরও বলা হয়, ওই বাসায় যাওয়ার পর তিনি কোনো নারীকে দেখতে না পেয়ে বেরিয়ে আসতে চান। এ সময় বাইরে থেকে দুজন এসে দরজা বন্ধ করে একে একে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এবং সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করা হয়। এমনকি ওই ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁর ফোনটি তাঁরা রেখে দেন। তিনি বাসায় ফিরে ফোনে স্বামীকে সব জানান। এরপর স্বামী গ্রাম থেকে ফিরলে তাঁকে নিয়ে ৭ মার্চ মামলা করেন।
ঘটনার সময় তিনি ওই যুবকদের কথাবার্তায় তাঁদের নাম ফাহিম হাসান, প্রিন্স ও ইয়াসিন আরাফাত বলে জানতে পারেন। তাই মামলায় তিনি তাঁদের আসামি করেন।
আজ র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মামলার বিষয়টি জানতে পেরে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। র্যাব-১০–এর একটি আভিযানিক দল আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফাহিমকে গ্রেপ্তার করে। ফাহিমের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার মেদিনীমণ্ডলে। গ্রেপ্তার ফাহিমকে কদমতলী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. সাফায়েত হোসেন বলেন, মামলা করার পর ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেলের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তবে এখনো সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পায়নি পুলিশ। এর আগে ৮ মার্চ আরাফাত নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।