মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরলেন অপহৃত ৫ কাঠুরিয়া
Published: 8th, February 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পাহাড়ি এলাকায় কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হওয়া পাঁচ ব্যক্তি মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। অপহরণের দুই দিন পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপহৃতদের পরিবারের দাবি, মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী পাহাড়ের পাদদেশে ওই পাঁচ কাঠুরিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তারা হলেন—আব্দুল হকের ছেলে উল্লাহ (১৮), মোহাম্মদ হাসানের ছেলে মোহাম্মদ কাইফ উল্লাহ (১৭), হামিদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ ইসা (২৮), মৃত কালা মিয়ার ছেলে ইউসুফ উল্লাহ (৩০) এবং শফিউল আজমের ছেলে মো.
বাহারছড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হুমায়ুন কাদের চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার সকালে বাহারছড়া ইউনিয়নের মাঠপাড়া ও বাইন্ন্যা পাড়ার ১৫ জন লোক স্থানীয় পাহাড়ে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে যান। এ সময় স্থানীয় চাকমাপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকার পূর্ব পাশে একদল দুর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে। পরে তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে আটকে রেখে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইউপি সদস্য আরো জানান, অপহরণের পর বুধবার রাতে স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে অপহরণকারীরা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে কয়েক দফা আলোচনার পর পাঁচ জনের পরিবার মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠানোর পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, অপহরণের বিষয়ে জানার পর থেকেই পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারে টেকনাফের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালায়। এরপর অপহৃতদের ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। তবে, অপহৃতদের স্বজনরা মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে পুলিশকে কিছু জানায়নি। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/তারেকুর/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ র ন র পর অপহ ত
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে মুক্তিপণ না পেয়ে শিশু হত্যার দায়ে যুবকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে মো. শহিদ মিয়া (২৫) নামের এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক আলী মনসুর এ রায় দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ৭৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি শহিদ নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লি ইউনিয়নের আগ মুশুল্লি গ্রামের বাসিন্দা। একই গ্রামের আবদুল কাইয়ুম ও পলিনা খাতুন দম্পতির ৭ বছর বয়সী ছেলে মো. তাসিন ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয়। সেদিনই নান্দাইল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিশুটির মা। এরপর মুঠোফোনের একটি নম্বর থেকে ৩০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ অর্থ না দিলে শিশুটিকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
পরে ১৭ আগস্ট শহিদ মিয়াকে আটকের পর তাঁর দেখানো স্থান থেকে শিশু তাসিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মুক্তিপণ না দেওয়ায় শিশুটিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর একটি টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকের ভেতর ফেলে রাখা হয়েছিল। ওই ঘটনায় শিশুটির মা ১৭ আগস্ট বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে থানায় আরেকটি মামলা করেন। আসামিদের সঙ্গে বাড়ির সীমানা ও গাছপালা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে পুলিশ মামলাটির তদন্ত শেষে শহিদ মিয়া, তাঁর বাবা তাহের উদ্দিন ও মা তহুরা খাতুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলাটির দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত। রায়ে শহিদ মিয়াকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাকি দুই আসামি তাহের উদ্দিন ও তহুরা বেগমকে খালাস দেন বিচারক। রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন আসামি শহিদ মিয়া। ময়মনসিংহ আদালত পরিদর্শক মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মনোয়ার বেগম এবং রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এপিপি মো. শামীম উল আজম খান।