একজন রাঁধুনি বা শেফের কথা চিন্তা করা যাক। প্রতিদিন ছোট একটা পরিবারের রান্না তিনি একাই করে ফেলতে পারবেন। হরেক রকমের রান্নায় পারদর্শী হওয়ায় নানা স্বাদের বাহারি রান্নার আয়োজন করতে পারবেন।

কিন্তু প্রতিদিন যদি একটা রেস্তোরাঁর রান্নার দায়িত্ব তাঁর ওপর পড়ে, তাহলে শত শত মানুষের রান্না একা তাঁর পক্ষে সীমিত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব নয়। সমাধান হিসেবে ছোট ছোট কাজগুলো তিনি অন্য কাউকে ভাগ করে দিতে পারেন। যেমন শুধু পেঁয়াজবাটার জন্য একজন লোক, আলু কেটে দেওয়ার জন্য একজন লোক।

ধরা যাক, পেঁয়াজ কাটার ব্যক্তি একটি ব্লেন্ডিং মেশিন ব্যবহার করে কাজটুকু করেন। কিন্তু একই ধরনের কাজ হওয়ায় তিনি যদি একসঙ্গে ১০টা ব্লেন্ডিং মেশিন ব্যবহার করেন, তাহলে একই সময়ে ১০ গুণ বেশি কাজ করতে পারবেন।

এখানে প্রধান শেফকে কম্পিউটারের সিপিইউ, অর্থাৎ সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিটের (কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ) সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যেটি কম্পিউটারের নানা ধরনের কাজ সম্পন্নে পারদর্শী। আমাদের ডেস্কটপ, ল্যাপটপ বা মুঠোফোনে যত কাজ করা হয়, তার সবকিছু কম্পিউটারের ব্রেন বলে পরিচিত এই সিপিইউতে ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়।

অপর দিকে পেঁয়াজবাটার কাজকে জিপিইউ, অর্থাৎ গ্রাফিক্যাল প্রসেসিং ইউনিটের কাজের সঙ্গে তুলনা করা যায়। দশটা ব্লেন্ডিং মেশিনকে দশটা কোর বা প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট হিসেবে বিবেচনা করা যায়। সিপিইউর করা জটিল কাজের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সরল, একযোগে করা সেই কাজগুলো হতে হয় একই ধরনের। একটি উচ্চমানের জিপিইউতে হাজার হাজার কোর থাকতে পারে, যেখানে সিপিউ কোর সংখ্যা হয় সাধারণত আটটি বা তার কিছুটা বেশি। এনভিডিয়ার জিফোর্স আরটিএক্স ৪০৯০ মডেলের জিপিইউতে ১৬ হাজার ৩৮৪টি কোর আছে।

ছবি, ভিডিও, বিভিন্ন গেম খেলার ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তিমূলক গণনার প্রয়োজন হয় বলে শুরুতে শুধু সে ধরনের কাজে জিপিইউ ব্যবহার করা হতো। সেখান থেকেই এর নামকরণে গ্রাফিক্যাল (চিত্রসংক্রান্ত) কথাটা এসেছে। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাপক প্রসারের ফলে বিভিন্ন ধরনের মেশিন লার্নিং মডেল চালাতেও ব্যাপকসংখ্যক জিপিইউ প্রয়োজন হয়। মেশিন লার্নিং মডেল ট্রেনিং (প্রশিক্ষণ) মূলত কোটি কোটি গাণিতিক গণনার মাধ্যমে করা হয়। সে গণনার কাজগুলো একযোগে কম সময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় জিপিইউর কল্যাণেই।

বহুল আলোচিত চ্যাটজিপিটি এবং ভাষার জন্য প্রস্তুতকৃত সমজাতীয় বড় ধরনের মডেলগুলোকে (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল) বিশাল পরিমাণ ডেটার মাধ্যমে ট্রেনিং করানো হয়। বলতে গেলে ইন্টারনেটে এযাবৎ লেখা প্রায় সবকিছুই সে ডেটার অন্তর্ভুক্ত থাকে। নির্দিষ্ট ভাষা জানা একজন ব্যক্তি যেমন একটি বাক্যের পর কী হতে পারে, তা অনুমান করতে পারেন বা ভাষার ব্যবহার করে নতুন ধারণা তৈরি করতে পারেন, একেবারে সঠিক না হলেও ভাষা মডেলগুলো সে রকম অনুমান করতে পারে, প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, বিষয়বস্তু তৈরি করতে পারে।

প্রবন্ধ লেখা থেকে শুরু করে অ্যাপ তৈরি, জীবনবৃত্তান্ত তৈরি, গাণিতিক সূত্র লেখা থেকে শুরু করে সারসংক্ষেপ তৈরি, কভার লেটার তৈরি, প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি, বর্ণনা থেকে শুরু করে ছবি কিংবা চার্ট তৈরি—কোনো কিছুই বাদ নেই ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের কাজের আওতা থেকে।

২০২৩ সালে চ্যাটজিপিটি প্রায় ৩০ হাজার এনভিডিয়া জিপিইউ ব্যবহার করেছিল তাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য, যেগুলোর প্রতিটির দাম ছিল ১২ থেকে ১৮ লাখ টাকা (সূত্র: ট্রেন্ডফোর্স মার্কেট ইন্টেলিজেন্স)। সুপরিচিত ইন্টেল বা এএমডির রাজত্ব সিপিইউ চিপ তৈরিতে। আর এনভিডিয়ার রাজত্ব জিপিইউ চিপ তৈরিতে। বর্তমানে জিপিইউ বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশই এনভিডিয়ার দখলে এবং এনভিডিয়া বাজার মূলধন প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

চ্যাটজিপিটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য লাখ লাখ ডলার খরচ হলেও প্রকৃত ব্যয়ের প্রয়োজন হয় সেটি পরিচালনা করতে, ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর দিতে। প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যে ব্যয় হয়, পরিচালনার জন্য তার বেশি খরচ হয়ে যায় এক সপ্তাহেই (সূত্র: ফোর্বস, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)।

ঠিক এ জায়গাতেই নতুনত্ব এনে গোটা বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চায়নিজ প্রতিষ্ঠান ‘ডিপসিক’। ডিপসিক দাবি করেছে, অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাসম্পন্ন জিপিইউ ব্যবহার করেও তাদের মডেল তৈরি করতে সময় লেগেছে মাত্র দুই মাস এবং খরচ হয়েছে ছয় মিলিয়ন ডলারের কম।

২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টার্টআপ আরও বলেছে, তাদের মডেলগুলো কার্যক্ষমতায় শীর্ষ মার্কিন মডেলগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম, অথচ খরচ হয় সেগুলোর তুলনায় অনেক কম।

এসব বৃহৎ মডেল তৈরিতে বিশাল কম্পিউটিং ক্ষমতা ও বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে যে ধারণা করা হয়, ডিপসিকের দাবি সে ধারণাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়ে দেয়। নড়েচড়ে বসে প্রযুক্তিবিশ্ব, যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ আইফোন ডাউনলোডে পরিণত হয় ডিপসিকের অ্যাপ। এনভিডিয়ার বাজার মূলধন একলাফে কমে যায় ৫৮৯ বিলিয়ন ডলার, যা শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এক দিনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় অঙ্কের ক্ষতি (সূত্র: ইয়াহু ফিন্যান্স)। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ ৪৩৭ বিলিয়ন ডলার (সূত্র: ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ২০২৩)।

কিছু সূত্র হিসাব করে দেখিয়েছে, ডিপসিকের ট্রেনিং খরচ সমমানের প্রতিদ্বন্দ্বী মডেলগুলোর তুলনায় ২০ থেকে ৪০ ভাগের এক ভাগ। অপর দিকে কিছু সূত্র বলছে, এত কম খরচে এ মডেল তৈরির যে দাবি, সেটি বিভ্রান্তিকর এবং সেখানে প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি। তবে ওপেনএআইয়ের ও১ মডেল বা ডিপসিকের আর১ মডেল তুলনা করলে কয়েকটি জিনিস স্পষ্টত লক্ষণীয়। যেমন ওপেনএআইয়ের মডেল ব্যবহারের জন্য যেখানে প্রতি মাসে ২০ ডলার প্রদান করতে হয়, সেখানে ডিপসিক শুধু অ্যাপের মাধ্যমে বিনা মূল্যে ব্যবহারই করা যায় না, বরং ডাউনলোড ও ব্যবসায় প্রয়োগের উদ্দেশ্যে ডেভেলপারদের জন্যও এটি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। দুটি পরিষেবার উদ্দেশ্য খানিকটা ভিন্ন হলেও নেট দুনিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারকারী ও প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞরা তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরছেন। কোনটির সবলতা কী বা দুর্বলতা কী, সেটিও উঠে আসছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক গবেষণা ও পরিষেবায় মডেল প্রশিক্ষণ বা শক্তিশালী চিপই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন হয় সফটওয়্যার অপটিমাইজেশন, উন্নত কুলিং সিস্টেম এবং বিশেষায়িত ডেটা সেন্টার ডিজাইনের। সেসবের জন্য প্রয়োজন হয় বড় আকারের বিনিয়োগের। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত গবেষণা করছে উন্নত সংস্করণের নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসার জন্য।

ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলই একমাত্র ক্ষেত্র নয়, যেখানে বিশাল কম্পিউটিং ক্ষমতার ব্যবহার হয়ে থাকে। আরও বহু ধরনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে হাজার হাজার জিপিইউ, ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন ভবিষ্যৎ ব্যবহারের। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এই প্রতিযোগিতা বাজারের সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতিতে; জড়িয়ে পড়ছে দেশ ও সরকার।

বিশ্বব্যাপী পরিবর্তন ঘটছে রীতির, প্রয়োজন পড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেন্দ্রিক নীতির। রীতিনীতির এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতা চলতে থাকুক, কিন্তু সেটির উদ্দেশ্য যেন হয় মানুষ, লক্ষ্য যেন হয় মানবতার কল্যাণ, অকৃত্রিম এই পৃথিবীতে যেন বেঁচে থাকতে পারে ছোট-বড় প্রতিটি প্রাণ।

ড.

বি এম মইনুল হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও পরিচালক

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনভ ড য় র ধরন র ক জ জ প ইউ ব য় র জন য স প ইউ ন করত ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

৮-১৪ এপ্রিল ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’ 

আগামী ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৫’ পালিত হবে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি ব‌লে‌ছেন, ‘‘যদি জাটকা সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে ইলিশের উৎপাদন অনেক গুণে বাড়বে। উৎপাদন বাড়লে বাজারেও এর প্রভাব পড়বে, সরবরাহ বাড়বে, দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’’ 

সোমবার (৭ এপ্রিল) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তি‌নি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ইলিশকে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পালন করা হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘এ বছরে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘জাটকা ধরা বন্ধ হলে, ইলিশ উঠবে জাল ভরে’। জাটকা হচ্ছে ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটারের ছোট আকারের ইলিশ। এক কেজি ওজনের ইলিশ কমপক্ষে ৪০-৫০ সেন্টিমিটার এবং ২ কেজির অধিক হলে ৬০-৬২ সেন্টিমিটার হবে। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের মাধ্যমে জাটকাকে ইলিশ রূপান্তর করা হবে।’’

এ সময় তিনি বলেন, ‘‘বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ৫ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশের অবদান প্রায় ১১ শতাংশ। দেশজ জিডিপিতে ইলিশের অবদান ১ শতাংশের বেশি। বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি আহরিত হয় এ দেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ স্থানে রয়েছে।’’

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সরকার জাটকা রক্ষায় কেবল আইন প্রয়োগ করছে না, বরং এই মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭১টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ২৮ হাজার ৮৮৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়েছে। ইলিশের প্রধান মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬৫টি জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা হিসেবে মোট ১৩ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন ভিজিএফ (চাল) দেওয়া হয়েছে। ভিজিএফ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’-এর মাধ্যমে জেলেদের তাদের চাহিদানুযায়ী বকনা বাছুরসহ নানা প্রকার উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।’’

উপদেষ্টা জাটকা রক্ষায় সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘‘ইলিশ ধরা বন্ধ থাকলেও উৎসব থেমে থাকবে না। বরং আমাদের ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সচেতনতার এই সুযোগটাও বড় উৎসবের অংশ হতে পারে।’’

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা-২০২৩ এর ৩(১) বিধি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক যে কোনো ধরনের মৎস্য ও ক্রাস্টাশিয়ান্স আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ১২.৭৮ শতাংশ বাড়ার রেকর্ড রয়েছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘এর প্রেক্ষিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়, যাতে সামুদ্রিক মৎস্য বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানি, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এ কমিটি বিজ্ঞানসম্মত তথ্যাদি যাচাই করে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকাল আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন নির্ধারণের সুপারিশ করে। এ সুপারিশের প্রেক্ষিতে সরকার গত ১৬ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।’’

তিনি বলেন, ‘‘সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা-২০২৩ সংশোধন করে সামুদ্রিক মৎস্য সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন সব প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’’

উল্লেখ্য, দেশের ইলিশ সমৃদ্ধ ২০টি জেলায় (ঢাকা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট ও সিরাজগঞ্জ) ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৫’ উদযাপন করা হবে। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ৮ এপ্রিল বরিশাল বিভাগের ইলিশ সমৃদ্ধ অন্যতম জেলা বরিশাল জেলার সদর উপজেলার বেলস্ পার্কে অনুষ্ঠিত হবে এবং বরিশাল সদর উপজেলার ডিসি ঘাট সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে নৌ র‍্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মো. ইমাম উদ্দীন কবীর, অতিরিক্ত সচিব আমেনা বেগম, অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আবদুর রউফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১২৮ বছর পর ক্রিকেট ফিরছে অলিম্পিকে: ৬টি করে দল পুরুষ ও নারী বিভাগে
  • কাট্টলির আইপিও তহবিল তছরুপ, অভিযোগ দুদকে পাঠাবে বিএসইসি
  • মারা যাওয়ার ২ বছর পর অধ্যাপককে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন
  • শাবিপ্রবির ভর্তি ফি নিয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা
  • নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করবে বিএসইসি
  • বাংলাদেশে বিনিয়োগ কম, বড় বাধা পাঁচটি
  • মার্চে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি 
  • গাজায় সাংবাদিকদের তাঁবুতে হামলা 
  • খেলাপি ঋণ আদায়ে রেকর্ড
  • ৮-১৪ এপ্রিল ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’