নিখোঁজের তিনদিন পর পানিতে ভেসে ওঠল ভাই-বোনের মরদেহ
Published: 8th, February 2025 GMT
মাদারীপুরের কুমার নদে গোসলে নেমে নিখোঁজের তিনদিন পর ভেসে উঠেছে কুলসুম আক্তার (১১) ও মিনহাজ (৭) নামে দুই শিশুর মরদেহ।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ও চর রুপাইয়া এলাকার কুমার নদী থেকে মরদেহ দু’টি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া কুলসুম আক্তার ও মিনহাজ আপন ভাই-বোন। তারা উপজেলার তরমুগরিয়া এলাকায় হকার লিটন মাতুব্বরের সন্তান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের তরমুগরিয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন লিটন মাতুব্বর ও মনোয়ারা বেগম দম্পতি। তাদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংসার। প্রতিদিনের মতো লিটন মাতুব্বর ভাঙ্গারি কেনাবেচার কাজে বাইরে যান। মা কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এই সুযোগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মাদরাসা থেকে এসেই পাশের কুমার নদীতে গোসলে যায় ভাই-বোন। দুপুর ১ টার দিকে গোসল করতে নেমে দুই ভাইবোন নিখোঁজ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল উদ্ধারে নামে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান পায়নি ডুবরি দল। এরপর অভিযান বন্ধ রাখেন তারা। পরে আজ (শনিবার) সকালে কুমার নদের থানতলি ও রাস্তি এলাকার শিশু দুটির লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ও স্হানীয়রা মিলে মরদেহ দু'টি উদ্ধার করে।
নিঁখোজদের মা মিনোয়ার বেগম দুই সন্তানের লাশ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বাবা লিটন মাতুব্বর বলেন, “আল্লাহ আমারে এ কোন শাস্তি দিলো। আমি তো কোনো অন্যায় কাজ করি না। আমার দুই সন্তান সে কেড়ে নিলো।”
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করেছে।”
ঢাকা/বেলাল/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যঙ্গ করে নাম ডাকা নিয়ে বিরোধ, হোমনায় কিশোরের ছুরিকাঘাতে কিশোর খুন
কুমিল্লার হোমনায় ব্যঙ্গ করে নাম ডাকা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক কিশোরের ছুরিকাঘাতে মো. কাউসার আলম (১৬) নামের আরেক কিশোর খুন হয়েছে। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে কাইয়ুম (১৭) নামের আরেক কিশোর আহত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার চান্দেরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কাউসার তাতুয়ার চর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। সে চান্দেরচর বাজারে একটি আসবাবের দোকানে কাজ করত। খুনে অভিযুক্ত কিশোর চান্দেরচর এলাকার বাসিন্দা। সে পেশায় রিকশাচালক।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, চান্দেরচর বাজারের ওই আসবাব তৈরির দোকানে কাউসার ছাড়াও নাজমুল হোসেন, কাইয়ুম, সাইদুল ইসলাম, সাব্বির নামের কয়েকজন তরুণ কাজ করে। সেই দোকানের পাশেই চান্দেরচর আলিম মাদ্রাসা। ২ ফেব্রুয়ারি ওই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী শায়খ ইসলাম ও ইমন মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় আসবাবের দোকানে কর্মরত নাজমুল তার বন্ধু সাব্বিরকে ‘সাবরি’ বলে ডাক দেয়। তখন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী শায়খ মনে করে ব্যঙ্গ করে তাঁকে ‘সাবরি’ বলে ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে চান্দেরচর এলাকায় বসা মেলায় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ইমন ও তার এলাকার বন্ধু রিকশাচালক শাহাদত হোসেন আসে। মেলার মধ্যে আসবাবের দোকানে কর্মরত কাউসার, কাইয়ুম, নাজমুল ও সাইদুলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। এ সময় পূর্ববিরোধ নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শাহাদাত আশপাশের কোনো স্থান থেকে ছুরি এনে কাউসারের বুকে আঘাত করে। আর ইমন কাইয়ুমের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন কাউসার ও কাইয়ুমকে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে কাউসারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় কাউসারের মৃত্যু হয়। পরে স্বজনেরা কাউসারের মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসেন।
এদিকে কাউসারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা চান্দেরচর গ্রামে গিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে হোমনা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার সকালে কাউসারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফার্নিচার দোকানে কর্মরতদের পুরোনো বিরোধকে কেন্দ্র করে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত একজন রিকশাচালক এবং অপরজন দাখিল পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।