কী কারণে দীর্ঘদিন আমাকে কোনো ডাকা হয়নি, জানি না: ফেরদৌস আরা
Published: 8th, February 2025 GMT
নজরুলসংগীতের নন্দিত শিল্পী ফেরদৌস আরা। গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে গান গাইতে পারেননি তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আবারও তিনি বিটিভি ও বেতারের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এ বছর ১৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে তাঁর নাম।
পদকপ্রাপ্তি প্রসঙ্গে গতকাল কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস আরা বলেন, ‘একুশে পদক পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে। এটি সম্মানের বিষয়। আমি ভীষণ আনন্দিত, আমাকে এ পুরস্কারে মনোনীত করার জন্য। এ অনুভূতি সত্যিই ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে অনেককেই আমার পাশে পেয়েছি। এ কারণে শ্রোতা, ভক্ত, অনুরাগী এবং আমার পরিবারের সবার কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একজন শিল্পী হিসেবে এমন পুরস্কারে দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বীকৃতি ব্যাপারটা কাগজ-কলমের। মানুষের ভালোবাসাটাই একজন শিল্পীর জন্য বড় পাওয়া বলে আমি মনে করি। সংগীত ক্যারিয়ারে বহু মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এই যে মানুষের ভালোবাসা সেটি তো পদকে পাওয়া যায় না। স্বীকৃতি কাজের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়। শিল্পীসত্তার পূর্ণতা দেয়। সবার কাছে দোয়া চাই যেন সুস্থ থেকে গান করে যেতে পারি।’
বিগত সরকারের আমলে অনেক শিল্পীই কালো তালিকাভুক্ত ছিলেন। বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারে কোন কোন শিল্পী পরিবেশন করতে পারবেন, আর কে কে পারবেন না– তার ছিল একটি অঘোষিত তালিকা। সেই তালিকায় নাম ছিল ফেরদৌস আরার।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর বিটিভি ও বেতার থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন ছিলাম। আবারও আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানে গাইতে পেরে ভালো লাগছে। শিল্পী তৈরিতে এ প্রতিষ্ঠান দুটির ভূমিকা বর্ণনাতীত। কী কারণে আমাকে দীর্ঘদিন কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি জানি না। শুনেছি, অনেক শিল্পী রাজনীতি করার কারণে বিটিভি-বেতারে নিষিদ্ধ ছিলেন। কাউকে কাউকে কালো তালিকায় রাখা হয়েছে। আমি তো রাজনীতি করি না। আমাকে কেন এত বছর গান গাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে? সবার কাছে এটিই প্রশ্ন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ায় মানবপাচার চক্রের এক নারী সদস্য গ্রেপ্তার
রাশিয়ায় মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত বুধবার রাতে নেপালে পালানোর সময় ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে ফাবিহা জেরিন তামান্না নামের ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান।
এতে বলা হয়, ‘চক্রটি প্রথমে ১০জনকে সৌদি আরব ওমরাহ ভিসায় পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়।’
তিনি জানান, ‘সুলতান তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ার সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করে। সেখানে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করে। এর আগে যুদ্ধে নাটোর সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নামে একজন নিহত এবং ঢাকা কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামের একজন গুরুতর আহত হন।
তিনি জানান, পাচার হওয়া ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে অন্যান্য ভুক্তভোগীর পরিবারে যোগাযোগ করেন তিনি।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ‘গত মঙ্গলবার ‘যুদ্ধাহত’ আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার ঢাকার বনানী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার দন্তের ধারাবাহিকতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তামান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তামান্না নিজের সম্পৃক্ততা ‘স্বীকার’ করেছে উল্লেখ করে এসপি জসীম বলেন, ‘সাধারণ মানুষদের যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রেরণা যুগিয়েছে তামান্নার ভাই তুহিন, যিনি বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।’
তিনি জানান, ‘পাচার হওয়া ১০জনের আরেকটি দল বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হবে জেনে তারা রাশিয়ায় যেতে অস্বীকার করেছেন। ফলে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সিআইডি তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।